কয়েকদিন পর ‘আমরা হয়ত বালু খাব’

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় টানা ৬০ দিন ধরে কঠোর অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। এ সময়ের মধ্যে কোনো খাবার, জ্বালানি বা ওষুধ প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ফলে চরম মানবিক সংকটে পড়েছে গাজার বাসিন্দারা।

বর্তমানে গাজায় টিনজাত শাকসবজি, ভাত, পাস্তা ও মশুর ডাল খেয়েই বেঁচে আছে মানুষ। মাংস, দুধ, পনির ও ফল সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। এমনকি রুটি ও ডিমও এখন দুষ্প্রাপ্য। বাজারে যেসব সামান্য পণ্য পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর দাম এত বেশি যে বহু মানুষ তা কিনতে পারছেন না।

ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো জানিয়েছে, তারা এখন শিশুদের মুখেও খাবার তুলে দিতে পারছেন না। গত শুক্রবার মরিয়ম আল-নাজ্জার নামের এক নারী জানান, তার পরিবারের ১১ জন সদস্য সেদিন শুধু একবেলা ভাত, টিনজাত মটর দানা ও গাজর খেয়ে দিন কাটিয়েছেন, বাকি সময় তারা না খেয়েই ছিলেন।

বার্তাসংস্থা এএফপিকে এই নারী বলেন, ‌‘ফিলিস্তিনিদের কাছে শুক্রবার একটি পবিত্র দিন। এদিন পরিবারগুলো মাংস, ভালো শাকসবজি এবং অন্যান্য খাবার খায়। কিন্তু এখন আমরা শুক্রবারে মটর দানা আর ভাত খাচ্ছি। আমরা এ যুদ্ধের আগে জীবনে কখনো টিনজাত সবজি খাইনি। এ যুদ্ধ আমাদের জীবনকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন কোনো খাবার এখন পাই না যেগুলো আমাদের প্রোটিন ও পুষ্টি দেবে।’

পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুমান করে তার শঙ্কা- দখলদার ইসরায়েল যেহেতু এখনো তাদের অবরোধ ও আগ্রাসন চালিয়ে রেখেছে হয়তো কয়েকদিন পর গাজায় খাদ্য সংকট দেখা দেবে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, খাবারের অভাবে ‘কয়েকদিন পর হয়তো আমরা বালু খাব।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কয়েকদিন পর ‘আমরা হয়ত বালু খাব’

আপডেট সময় : ০৬:১৮:৪৬ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় টানা ৬০ দিন ধরে কঠোর অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। এ সময়ের মধ্যে কোনো খাবার, জ্বালানি বা ওষুধ প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ফলে চরম মানবিক সংকটে পড়েছে গাজার বাসিন্দারা।

বর্তমানে গাজায় টিনজাত শাকসবজি, ভাত, পাস্তা ও মশুর ডাল খেয়েই বেঁচে আছে মানুষ। মাংস, দুধ, পনির ও ফল সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। এমনকি রুটি ও ডিমও এখন দুষ্প্রাপ্য। বাজারে যেসব সামান্য পণ্য পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর দাম এত বেশি যে বহু মানুষ তা কিনতে পারছেন না।

ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো জানিয়েছে, তারা এখন শিশুদের মুখেও খাবার তুলে দিতে পারছেন না। গত শুক্রবার মরিয়ম আল-নাজ্জার নামের এক নারী জানান, তার পরিবারের ১১ জন সদস্য সেদিন শুধু একবেলা ভাত, টিনজাত মটর দানা ও গাজর খেয়ে দিন কাটিয়েছেন, বাকি সময় তারা না খেয়েই ছিলেন।

বার্তাসংস্থা এএফপিকে এই নারী বলেন, ‌‘ফিলিস্তিনিদের কাছে শুক্রবার একটি পবিত্র দিন। এদিন পরিবারগুলো মাংস, ভালো শাকসবজি এবং অন্যান্য খাবার খায়। কিন্তু এখন আমরা শুক্রবারে মটর দানা আর ভাত খাচ্ছি। আমরা এ যুদ্ধের আগে জীবনে কখনো টিনজাত সবজি খাইনি। এ যুদ্ধ আমাদের জীবনকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এমন কোনো খাবার এখন পাই না যেগুলো আমাদের প্রোটিন ও পুষ্টি দেবে।’

পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুমান করে তার শঙ্কা- দখলদার ইসরায়েল যেহেতু এখনো তাদের অবরোধ ও আগ্রাসন চালিয়ে রেখেছে হয়তো কয়েকদিন পর গাজায় খাদ্য সংকট দেখা দেবে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, খাবারের অভাবে ‘কয়েকদিন পর হয়তো আমরা বালু খাব।’