খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং কুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় সমবেত হয় শিক্ষার্থীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, ইয়াশিরুল কবীর, গোলাম রাব্বানী ছাড়াও প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
এসময় সমাবেশে বক্তারা বলেন, কুয়েট শিক্ষার্থীদের উপর অন্যায়ভাবে প্রশাসন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারী কোন নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত কোনভাবেই উচিত হয় নাই। এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা কুয়েটের শিক্ষার্থীদের পাশে আছি। অনতিবিলম্বে কুয়েট প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এ দেশের ছাত্রসমাজ আবারো কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।
সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা লালিতপালিত ভিসিরা যে কাজটি করার সাহস করেনি কুয়েট উপাচার্য সেই কাজটি করে দেখেয়িছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পুরো বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির পাশে আছে। কুয়েট ভিসির প্রথম গুরুত্ব দেওয়ার কথা ছিল শিক্ষার্থীদের কিন্তু তিনি একটি পক্ষকে সবসময় সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন, পক্ষপাতিত্ব করেছেন। তিনি সরাসরি তার শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন এবং একটি অংশকে তিনি কাছে টেনে নিয়েছেন। ইতোমধ্যেই তিনি তার পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে কুয়েট ভিসিকে সরিয়ে দেওয়া হোক কারণ যিনি ছাত্রদের অধিকার সংরক্ষণ করতে পারেন না তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদেও থাকতে পারেন না।
উল্লেখ্য, গত ১৪ এপ্রিল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি আগামী ২ মে আবাসিক হলগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়ার এবং ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।