শুক্রবার | ৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo টেকনাফে ইঞ্জিন বিকল হওয়া যাত্রীবাহী বোটসহ ৪৫ জন যাত্রী উদ্ধার Logo খুবিতে ইউনেস্কো ও ইউজিসির উদ্যোগে পিয়ার-টু-পিয়ার ওরিয়েন্টেশন Logo সাতক্ষীরা–কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযান পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ভারতীয় চোরাচালানী মালামাল জব্দ Logo আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo গাইবান্ধা এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত যুবক Logo খুবিতে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা: নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় সভা Logo প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠান চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির ‘হেমন্তসন্ধ্যা ও হাঁস পার্টি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo সদরপুরে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য কর্মবিরতি পালন করেছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা

বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই তিস্তার পানি

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৮:১২:৪৭ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭৮৩ বার পড়া হয়েছে

উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা বর্ষণে হু হু করে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। রংপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো ঝুঁকিতে পড়েছে।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার দশমিক ৫ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে একই সময়ে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ এই পয়েন্টে বিপৎসীমার দশমিক ১ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর এবং গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা গ্রামের জুলহাস মিয়া বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি এবং বাচ্চাদের নিয়ে বিপদে আছি।

বাইশপুকুর গ্রামের সলেমান আলী বলেন, পানিবন্দি হয়ে বৃদ্ধ, শিশু ও নারীদের নিয়ে চরম বিপদে পড়েছি। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি দিনের বেলায় রাস্তার উঁচু স্থানে রাখলেও রাতে কষ্ট বাড়ে। নির্ঘুম রাত কাটছে সবার।

এদিকে বন্যা-পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র বলছে, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের (≥৮৯ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা কমে এসেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন হ্রাস পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং জেলাসমূহের সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল এবং কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরবর্তী দুই দিনে তিস্তা নদীর পানি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপপ্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির চাপ সামলাতে তিস্তার ৪৪টি জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে।

এদিকে ‘তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও’ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, অসময়ের বন্যা ও ভাঙনে প্রতি বছর ১ লাখ কোটি টাকার সম্পদ তিস্তার গর্ভে চলে যায়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী খনন, সংরক্ষণ ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প নেই।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

টেকনাফে ইঞ্জিন বিকল হওয়া যাত্রীবাহী বোটসহ ৪৫ জন যাত্রী উদ্ধার

বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই তিস্তার পানি

আপডেট সময় : ০৮:১২:৪৭ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের টানা বর্ষণে হু হু করে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। রংপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো ঝুঁকিতে পড়েছে।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার দশমিক ৫ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে একই সময়ে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ এই পয়েন্টে বিপৎসীমার দশমিক ১ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার) নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর এবং গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।

ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা গ্রামের জুলহাস মিয়া বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি এবং বাচ্চাদের নিয়ে বিপদে আছি।

বাইশপুকুর গ্রামের সলেমান আলী বলেন, পানিবন্দি হয়ে বৃদ্ধ, শিশু ও নারীদের নিয়ে চরম বিপদে পড়েছি। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি দিনের বেলায় রাস্তার উঁচু স্থানে রাখলেও রাতে কষ্ট বাড়ে। নির্ঘুম রাত কাটছে সবার।

এদিকে বন্যা-পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র বলছে, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, রংপুর বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের (≥৮৯ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা কমে এসেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন হ্রাস পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং জেলাসমূহের সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চল এবং কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরবর্তী দুই দিনে তিস্তা নদীর পানি হ্রাস পেয়ে বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপপ্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানির চাপ সামলাতে তিস্তার ৪৪টি জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে।

এদিকে ‘তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও’ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেন, অসময়ের বন্যা ও ভাঙনে প্রতি বছর ১ লাখ কোটি টাকার সম্পদ তিস্তার গর্ভে চলে যায়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী খনন, সংরক্ষণ ও তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প নেই।