শিরোনাম :
Logo নারী সংস্কার কমিশন নির্দিষ্ট মতাদর্শিক বয়ানে পরিণত হয়েছে: ইসলামী আন্দোলন Logo নির্বাচন বিলম্বকারীদের রুখে দেওয়ার শক্তি আমাদের আছে : ফারুক Logo সোমবার কাতার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা, সফরসঙ্গী যারা Logo আরও বেশি বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষী নেওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা Logo যুক্তরাষ্ট্রে বিমান বিধ্বস্ত, সব আরোহী নিহত Logo দাবি আদায়ে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের Logo ফের গাছ কেটে ভবনের আয়োজন Logo রাবি প্রেসক্লাবের দায়িত্বে মাহিন-মিশন Logo প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

আইসিটি প্রকল্প: আ. লীগ সরকারের আমলে উপেক্ষিত স্থানীয় প্রযুক্তিবিদরা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৬:০৮:৩১ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭২৮ বার পড়া হয়েছে

শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। নেয়া হয় একের পর এক প্রকল্প। সেবার পরিধি বিস্তার এবং দক্ষ জনবল তৈরির পাশাপাশি আইসিটিতে স্থানীয় প্রযুক্তিবিদদের সম্পৃক্ততার কথা বলা হলেও বাস্তবে ঘটেছে উল্টো চিত্র। দুই হাজারের বেশি প্রযুক্তিবিদ উপেক্ষিত থেকেছেন।

বিদেশনির্ভর প্রযুক্তি ও পরামর্শকদের দাপট ছিল এই খাতে। বেশুমার লুটপাটের জন্যে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বরাবরই স্থানীয় প্রযুক্তিবিদদের এড়িয়ে চলতেন। তৃতীয় পক্ষ কিংবা নামকাওয়াস্তে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে শত শত কোটি টাকার প্রকল্প।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়ের পাশাপাশি বিদেশি নির্ভরতা বাড়ানো হয়েছে। যার জন্যে কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসেনি ডিজিটাল খাতে।

গভর্নমেন্ট আইসিটি অফিসার্স ফোরামের সভাপতি তমিজ উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, আমাদের কনসালটেন্ট যারা আছে, তাদের মাধ্যমে বিশেষ কতিপয় আমলা নিজেদের সুবিধার্তে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন বা কাজ দুই বা তিনবার করাতে পারেন। আর একই টাকা বারবার নিতে পারেন।

আইসিটির বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সে স্কোর ১০০ এর মধ্যে ৬২-তে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রস্তুতি সূচকে ১৭৪ এর মধ্যে ১১৩-তে। ইন্টারনেটের গতিতে ১৪৭ দেশের মধ্যে ১০৯-এ বাংলাদেশ। ফ্রিল্যান্সিংয়ে তালিকাতেও পেছনের সারিতে বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থ লুটপাট করতে নন-টেকনিক্যাল ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেয়া এবং ইচ্ছে পূরণের বিভিন্ন প্রকল্পে বিপুল বিনিয়োগ করায় সূচকে এগুতে পারেনি বাংলাদেশ।

গভর্নমেন্ট আইসিটি অফিসার্স ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক মো. মুনিরুজ্জামান বলেন, বিদেশি লোকবল বা রিসোর্সে যদি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে বেশ কয়েকটা ঘটনা ঘটে। প্রথমত ওনারশিপে ঘাটতি হয়, বিদেশি পরামর্শক একটি সময়ের পর চলে যাবেন বা প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। সেক্ষেত্রে তাদের অবর্তমানে তা ঝুঁকির মুখে পড়ে।

অর্থ লোপাটের সুযোগ তৈরি করতে নানা ধরনের ছকে ফেলে বিনিয়োগ পরিকল্পনা করেছিল সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। দুর্নীতির হোতাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টদের।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, এই টাকা যদি আমাদের অবকাঠামো ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সঠিকভাবে ব্যবহার হতো, তাহলে কিন্তু আমাদের এই খাতের চেহারাটাই পাল্টে যেতো। স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক বিবেচনায় এই প্রকল্পগুলোকে নষ্ট করা হয়েছে। আমি মনে করি, এসব প্রকল্প থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে।

গেল ১৫ বছরে প্রকল্পের নামে এ খাতে কী পরিমাণ অর্থ লোপাট হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ শুরু করেছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নারী সংস্কার কমিশন নির্দিষ্ট মতাদর্শিক বয়ানে পরিণত হয়েছে: ইসলামী আন্দোলন

আইসিটি প্রকল্প: আ. লীগ সরকারের আমলে উপেক্ষিত স্থানীয় প্রযুক্তিবিদরা

আপডেট সময় : ০৬:০৮:৩১ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। নেয়া হয় একের পর এক প্রকল্প। সেবার পরিধি বিস্তার এবং দক্ষ জনবল তৈরির পাশাপাশি আইসিটিতে স্থানীয় প্রযুক্তিবিদদের সম্পৃক্ততার কথা বলা হলেও বাস্তবে ঘটেছে উল্টো চিত্র। দুই হাজারের বেশি প্রযুক্তিবিদ উপেক্ষিত থেকেছেন।

বিদেশনির্ভর প্রযুক্তি ও পরামর্শকদের দাপট ছিল এই খাতে। বেশুমার লুটপাটের জন্যে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বরাবরই স্থানীয় প্রযুক্তিবিদদের এড়িয়ে চলতেন। তৃতীয় পক্ষ কিংবা নামকাওয়াস্তে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে শত শত কোটি টাকার প্রকল্প।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়ের পাশাপাশি বিদেশি নির্ভরতা বাড়ানো হয়েছে। যার জন্যে কাঙ্ক্ষিত সফলতা আসেনি ডিজিটাল খাতে।

গভর্নমেন্ট আইসিটি অফিসার্স ফোরামের সভাপতি তমিজ উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, আমাদের কনসালটেন্ট যারা আছে, তাদের মাধ্যমে বিশেষ কতিপয় আমলা নিজেদের সুবিধার্তে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন বা কাজ দুই বা তিনবার করাতে পারেন। আর একই টাকা বারবার নিতে পারেন।

আইসিটির বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সে স্কোর ১০০ এর মধ্যে ৬২-তে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রস্তুতি সূচকে ১৭৪ এর মধ্যে ১১৩-তে। ইন্টারনেটের গতিতে ১৪৭ দেশের মধ্যে ১০৯-এ বাংলাদেশ। ফ্রিল্যান্সিংয়ে তালিকাতেও পেছনের সারিতে বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থ লুটপাট করতে নন-টেকনিক্যাল ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেয়া এবং ইচ্ছে পূরণের বিভিন্ন প্রকল্পে বিপুল বিনিয়োগ করায় সূচকে এগুতে পারেনি বাংলাদেশ।

গভর্নমেন্ট আইসিটি অফিসার্স ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক মো. মুনিরুজ্জামান বলেন, বিদেশি লোকবল বা রিসোর্সে যদি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে বেশ কয়েকটা ঘটনা ঘটে। প্রথমত ওনারশিপে ঘাটতি হয়, বিদেশি পরামর্শক একটি সময়ের পর চলে যাবেন বা প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। সেক্ষেত্রে তাদের অবর্তমানে তা ঝুঁকির মুখে পড়ে।

অর্থ লোপাটের সুযোগ তৈরি করতে নানা ধরনের ছকে ফেলে বিনিয়োগ পরিকল্পনা করেছিল সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। দুর্নীতির হোতাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি প্রযুক্তি সংশ্লিষ্টদের।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর বলেন, এই টাকা যদি আমাদের অবকাঠামো ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সঠিকভাবে ব্যবহার হতো, তাহলে কিন্তু আমাদের এই খাতের চেহারাটাই পাল্টে যেতো। স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক বিবেচনায় এই প্রকল্পগুলোকে নষ্ট করা হয়েছে। আমি মনে করি, এসব প্রকল্প থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে।

গেল ১৫ বছরে প্রকল্পের নামে এ খাতে কী পরিমাণ অর্থ লোপাট হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ শুরু করেছে।