শিরোনাম :
Logo ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে পুতিনকে ১০-১২ দিনের সময় দিলেন ট্রাম্প Logo গ্যাসের সিলিন্ডারে ৫০ হাজার পিস ইয়াবা পাচারের সময় তিন মাদক ব্যবসায়ী আটক Logo পঞ্চগড়ের বোদায় ‘নিরাময় ক্লিনিকে’ওয়ার্ড বয়ের অপারেশন, শোচনীয় অবস্থায় রোগী Logo ভারতে যাওয়ার সময় যুবলীগ নেতা আটক Logo বাংলাদেশে কোনো স্থান নেই সন্ত্রাসবাদের : মার্কিন দূতকে প্রধান উপদেষ্টা Logo সাংবাদিক সাইফুল সুমনের মায়ের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালন Logo কচুয়ার বিতারা বাজারে নতুন ব্রিজ নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করলেন এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী Logo কয়রায় সহকারী প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন Logo রাঙ্গামাটিতে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণের নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি Logo বিমান বিধ্বস্তে মারা যাওয়া আট অজ্ঞাতনামা মৃত দেহের ডিএনএ প্রোফাইল তৈরির অনুমতি

আলমডাঙ্গা থানার সাবেক ওসি বিপ্লব কুমার নাথের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৮:৫৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭৭৯ বার পড়া হয়েছে

যশোরের মনিরামপুরে যুবদল নেতা আনিছুর রহমান হত্যাকাণ্ডের ৮ বছর পর সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচায্যর্, তৎকালীন ওসি বিপ্লব কুমার নাথসহ ৬০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিহতের ছোট ভাই মফিজুর রহমান বাদী হয়ে গত ২২ আগস্ট যশোরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহমেদ ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. সেজুতি সাজনীন।

এ মামলার অন্যতম আসামি পুলিশ পরিদর্শক বিপ্লব কুমার নাথ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থানাতেও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২৩ সালের ১লা এপ্রিল আলমডাঙ্গা থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন তিনি। এরপর থেকেই নানা কর্মকান্ডে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন তিন। তার সময়কালে আলমডাঙ্গা থানায় ঘুষ বাণিজ্য ছিল ওপেন সিক্রেট। লেনদেনে বনিবনা না হওয়ায় যেকোন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানিমূলক মামলায় ফাঁসানোর ঘটনা ছিল অহরহ। নিজেকে আওয়ামীপন্থি পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে জাহির করা এই ওসি বিএনপি নেতা—কর্মীদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালিয়েছেন। মিথ্য ও হয়রানিমূলক মামলায় জড়িয়ে অর্থ বাণিজ্য করাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য।

আলমডাঙ্গা উপজেলার এক বিএনপি নেতার অভিযোগ, জাতীয় নির্বাচনের আগে ওসি বিপ্লব কুমার নাথ বিএনপি কর্মী নিধন মিশনে নেমেছিল। ভয়—ভীতি দেখিয়ে নাশকতার মামলায় আসামি করার উদাহরণ আছে তার বিরুদ্ধে। রাতে কাউকে বাড়িতে থাকতে দেয়নি। আটক করার পরও চাইতেন মোটা অংকের ঘুষ। টাকা দিলে মামলার ধারা পাল্টে যেত।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওসি বিপ্লব কুমার নাথ থানায় দায়িত্ব পালনকালে প্রতিদিনই পুলিশের বিরুদ্ধে নানা তথ্য পাওয়া যেত। বিশেষ করে সাধারণ নিরপরাধ মানুষকে আটক—মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করতো পুলিশ সদস্যরা। ক্যাম্প—ফাঁড়ির ইনচার্জ এবং থানার অফিসার ফোর্সদের কাছ থেকেও নিয়মিত টাকা আদায় করতেন ওসি নিজেই। এরপর জানুয়ারি মাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত ৭ ডিসেম্বর আলমডাঙ্গা থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয় বিতর্কিত পুলিশ পরিদর্শক বিপ্লব কুমার নাথকে।

যশোর আদালতে দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের লাউড়ী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে উপজেলা যুবদলের সদস্য আনিছুর রহমানের বাড়িতে ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর রাতে সাবেক পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যে্যর নির্দেশে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা বাড়িঘর ভাঙচুরের পর আনিছুরকে ধরে নিয়ে বেধড়ক মারপিটে হাত—পা ভেঙ্গে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথের জামাই মনিরামপুর থানার তৎকালীন ওসি বিপ্লব কুমার নাথ ওই রাতেই কথিত ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যা করে আনিছুরকে। পরদিন ৩ নভেম্বর সকালে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসাপাতালের মর্গে আনিছুরের মরদেহ পাওয়া যায়।

মামলায় ৬০ আসামির মধ্যে অন্যান্য উল্লেখযোগ্যরা হলেন, প্রতিমন্ত্রীর ছেলে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য্য শুভ, প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু, সাবেক এমপি প্রয়াত খান টিপু সুলতানের ছেলে হুমায়ুন সুলতান সাদাব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু, শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি, বাবলুর রহমান বাবলু, খেদাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ, প্রভাষক মামুনুর রশিদ জুয়েল ও তার ভাই হারুন অর রিশদ সেলিম।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে পুতিনকে ১০-১২ দিনের সময় দিলেন ট্রাম্প

আলমডাঙ্গা থানার সাবেক ওসি বিপ্লব কুমার নাথের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

আপডেট সময় : ০৮:৫৮:৫৭ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

যশোরের মনিরামপুরে যুবদল নেতা আনিছুর রহমান হত্যাকাণ্ডের ৮ বছর পর সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচায্যর্, তৎকালীন ওসি বিপ্লব কুমার নাথসহ ৬০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। নিহতের ছোট ভাই মফিজুর রহমান বাদী হয়ে গত ২২ আগস্ট যশোরের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহমেদ ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. সেজুতি সাজনীন।

এ মামলার অন্যতম আসামি পুলিশ পরিদর্শক বিপ্লব কুমার নাথ চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থানাতেও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২৩ সালের ১লা এপ্রিল আলমডাঙ্গা থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন তিনি। এরপর থেকেই নানা কর্মকান্ডে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন তিন। তার সময়কালে আলমডাঙ্গা থানায় ঘুষ বাণিজ্য ছিল ওপেন সিক্রেট। লেনদেনে বনিবনা না হওয়ায় যেকোন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানিমূলক মামলায় ফাঁসানোর ঘটনা ছিল অহরহ। নিজেকে আওয়ামীপন্থি পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে জাহির করা এই ওসি বিএনপি নেতা—কর্মীদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালিয়েছেন। মিথ্য ও হয়রানিমূলক মামলায় জড়িয়ে অর্থ বাণিজ্য করাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য।

আলমডাঙ্গা উপজেলার এক বিএনপি নেতার অভিযোগ, জাতীয় নির্বাচনের আগে ওসি বিপ্লব কুমার নাথ বিএনপি কর্মী নিধন মিশনে নেমেছিল। ভয়—ভীতি দেখিয়ে নাশকতার মামলায় আসামি করার উদাহরণ আছে তার বিরুদ্ধে। রাতে কাউকে বাড়িতে থাকতে দেয়নি। আটক করার পরও চাইতেন মোটা অংকের ঘুষ। টাকা দিলে মামলার ধারা পাল্টে যেত।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওসি বিপ্লব কুমার নাথ থানায় দায়িত্ব পালনকালে প্রতিদিনই পুলিশের বিরুদ্ধে নানা তথ্য পাওয়া যেত। বিশেষ করে সাধারণ নিরপরাধ মানুষকে আটক—মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করতো পুলিশ সদস্যরা। ক্যাম্প—ফাঁড়ির ইনচার্জ এবং থানার অফিসার ফোর্সদের কাছ থেকেও নিয়মিত টাকা আদায় করতেন ওসি নিজেই। এরপর জানুয়ারি মাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত ৭ ডিসেম্বর আলমডাঙ্গা থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয় বিতর্কিত পুলিশ পরিদর্শক বিপ্লব কুমার নাথকে।

যশোর আদালতে দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের লাউড়ী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মৃত আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে উপজেলা যুবদলের সদস্য আনিছুর রহমানের বাড়িতে ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর রাতে সাবেক পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যে্যর নির্দেশে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা বাড়িঘর ভাঙচুরের পর আনিছুরকে ধরে নিয়ে বেধড়ক মারপিটে হাত—পা ভেঙ্গে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
অভিযোগ রয়েছে, যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথের জামাই মনিরামপুর থানার তৎকালীন ওসি বিপ্লব কুমার নাথ ওই রাতেই কথিত ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যা করে আনিছুরকে। পরদিন ৩ নভেম্বর সকালে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসাপাতালের মর্গে আনিছুরের মরদেহ পাওয়া যায়।

মামলায় ৬০ আসামির মধ্যে অন্যান্য উল্লেখযোগ্যরা হলেন, প্রতিমন্ত্রীর ছেলে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য্য শুভ, প্রতিমন্ত্রীর ভাগ্নে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু, সাবেক এমপি প্রয়াত খান টিপু সুলতানের ছেলে হুমায়ুন সুলতান সাদাব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু, শ্যামকুড় ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি, বাবলুর রহমান বাবলু, খেদাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ, প্রভাষক মামুনুর রশিদ জুয়েল ও তার ভাই হারুন অর রিশদ সেলিম।