শিরোনাম :
Logo কয়রায় যৌথবাহিনীর চেকপোস্ট Logo লক্ষ্মীপুরে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকে ইসলামী আন্দোলন নেতৃবৃন্দের নগদ অর্থ প্রদান Logo বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চাঁদপুরে স্মরণকালের বর্ণাঢ্য র‌্যালি Logo জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা Logo শ্রীরাধার প্রেম ও প্রার্থনায় মুখর ইবির টিএসএসসি প্রাঙ্গণ Logo চবি শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ Logo রাকসু নিয়ে উত্তেজনা ; বক্তব্য দেওয়ার সময় শিবির সভাপতির বুকে বোতল নিক্ষেপ Logo মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পানির ফিল্টার দিলেন স্বেচ্ছাসেবী নারী উদ্যোক্তা সংগঠন বিজয়ী Logo চাঁদপুরে মাদক নির্মূলে সাহসিকতার সাথে কাজ করছে সহকারী পরিচালক মুহাঃ মিজানুর রহমান Logo পশ্চিম ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটিকে সংবর্ধনা – ঐক্যবদ্ধভাবে মিলনকে এমপি করার অঙ্গীকার

দেশে বন্যায় ১৮ জনের মৃত্যু, ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৭:২৪:০৩ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২৫ আগস্ট ২০২৪
  • ৭৫৪ বার পড়া হয়েছে

দেশে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে চলমান বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে ১২ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯ জন।

গতকাল রোববার সচিবালয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান এসব তথ্য জানান।

এতে আরও বলা হয়, এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৪৮টি।

শনিবার পর্যন্ত ১২ জেলায় মোট ১৮ জন মারা গেছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, নোয়াখালীতে তিনজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন এবং কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছে।

আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে তিন হাজার ৫২৭টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৮ জন আশ্রয় নিয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে সচিব কামরুল হাসান জানান, ভারি বর্ষণ কমেছে। বন্যা পরিস্থিতির ক্রমে উন্নতি হচ্ছে।

বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সঙ্গে পানিবাহিত রোগবালাই প্রতিরোধের প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চলমান বন্যা পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য জানাতে গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডাকে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়। এ সময় সচিবের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা এবং দুর্যোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। বন্যাপীড়িত মানুষের চিকিৎসাসেবাসহ অন্য সেবা সরেজমিনে তদারক করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এখন ফেনীতে অবস্থান করছেন বলে জানান সচিব।

কামরুল হাসান বলেন, চলমান বন্যায় চট্টগ্রামে পাঁচ, কুমিল্লায় চার, নোয়াখালীতে তিন, কক্সবাজারে তিন, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনীতে একজন করে মারা গেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় নগদ তিন কোটি ৫২ লাখ, শিশুখাদ্য বাবদ ৩৫ লাখ ও গোখাদ্য বাবদ ৩৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া ত্রাণকাজের অংশ হিসেবে ২০ হাজার ১৫০ টন চাল ও ১৫ হাজার শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে।

সচিব আরো বলেন, বন্যাকবলিত ১১ জেলার ৭৭ উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়ন ও পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৮৭টি। ১১ জেলায় এখন পানিবন্দি আছে ৯ লাখ ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯। ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা দিতে ৭৭০টি মেডিক্যাল টিম করা হয়েছে বলে জানান সচিব। ফেনীতে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি ভি-স্যাট চালু করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

সচিব জানান, বন্যাদুর্গত ১১ জেলায় মোট তিন কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার ১৫০ টন। এ ছাড়া শুকনা ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার পিস। শিশুর খাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ এবং গোখাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে চিকিৎসাসেবা দিতে ৭০টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে। ফেনীতে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকরা সেখানে সেবা দিচ্ছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২-৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে। ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ছাত্রসমাজ ও বিজিবি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে‌ বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব।

ট্যাগস :

কয়রায় যৌথবাহিনীর চেকপোস্ট

দেশে বন্যায় ১৮ জনের মৃত্যু, ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ

আপডেট সময় : ০৭:২৪:০৩ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ২৫ আগস্ট ২০২৪

দেশে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে চলমান বন্যায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে ১২ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯ জন।

গতকাল রোববার সচিবালয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান এসব তথ্য জানান।

এতে আরও বলা হয়, এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৪৮টি।

শনিবার পর্যন্ত ১২ জেলায় মোট ১৮ জন মারা গেছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, নোয়াখালীতে তিনজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন এবং কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছে।

আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে তিন হাজার ৫২৭টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৮ জন আশ্রয় নিয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে সচিব কামরুল হাসান জানান, ভারি বর্ষণ কমেছে। বন্যা পরিস্থিতির ক্রমে উন্নতি হচ্ছে।

বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সঙ্গে পানিবাহিত রোগবালাই প্রতিরোধের প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চলমান বন্যা পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য জানাতে গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডাকে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়। এ সময় সচিবের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা এবং দুর্যোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। বন্যাপীড়িত মানুষের চিকিৎসাসেবাসহ অন্য সেবা সরেজমিনে তদারক করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এখন ফেনীতে অবস্থান করছেন বলে জানান সচিব।

কামরুল হাসান বলেন, চলমান বন্যায় চট্টগ্রামে পাঁচ, কুমিল্লায় চার, নোয়াখালীতে তিন, কক্সবাজারে তিন, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনীতে একজন করে মারা গেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় নগদ তিন কোটি ৫২ লাখ, শিশুখাদ্য বাবদ ৩৫ লাখ ও গোখাদ্য বাবদ ৩৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া ত্রাণকাজের অংশ হিসেবে ২০ হাজার ১৫০ টন চাল ও ১৫ হাজার শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে।

সচিব আরো বলেন, বন্যাকবলিত ১১ জেলার ৭৭ উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়ন ও পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৮৭টি। ১১ জেলায় এখন পানিবন্দি আছে ৯ লাখ ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯। ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা দিতে ৭৭০টি মেডিক্যাল টিম করা হয়েছে বলে জানান সচিব। ফেনীতে স্বাস্থ্যসেবা দিতে ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি ভি-স্যাট চালু করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

সচিব জানান, বন্যাদুর্গত ১১ জেলায় মোট তিন কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার ১৫০ টন। এ ছাড়া শুকনা ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার পিস। শিশুর খাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ এবং গোখাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে চিকিৎসাসেবা দিতে ৭০টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে। ফেনীতে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকরা সেখানে সেবা দিচ্ছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২-৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে। ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ছাত্রসমাজ ও বিজিবি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে‌ বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব।