রবিবার | ২ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo কয়রায় দুই দিনব্যাপী ভাসমান কৃষি কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo মিশরে জমকালো আয়োজনে জাদুঘর উদ্বোধনের প্রস্তুতি! Logo এসএমই খাতকে জাতীয় অর্থনীতির চালিকাশক্তিতে রূপান্তরের উদ্যোগ! Logo সিরাজগঞ্জের দুই বিএনপি নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার! Logo জনপ্রতিনিধি নয়, সেবক হিসেবেই পাশে থাকতে চান ডাক্তার সাহেব। Logo এনায়েতপুরে চুরি করা ছাগল বিক্রির সময় এক যুবক আটক ধোরাছোঁয়ার বাহিরে মূল হোতা দেলোয়ার Logo নোবিপ্রবিতে সাদা দলের শিক্ষকদের নিয়ে ছাত্রদলের মিছিল। Logo কয়রায় ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন! Logo খুবির সমতট সমিতির সভাপতি মোস্তফা সাধারণ সম্পাদক নাঈমুর Logo লিখিত পরীক্ষায় পাশ করতে বলেন, ভাইভায় আমরা টিকিয়ে দিব – নোবিপ্রবির ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার

ফেনী শহর পানির নিচে

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৫:২২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০২৪
  • ৭৮২ বার পড়া হয়েছে

ফেনী শহর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর আগে জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এ ছাড়া জেলার নতুন নতুন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ক্রমাগত বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ও নবাবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঢুকতে শুরু করেছে। এসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

তিন দিন ধরেই প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকার পাশাপাশি ফেনীর বিভিন্ন নদী ও খালের পানি বেড়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আজ সকালে মুহুরী ও ফেনী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এর মধ্যে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলার বন্যায় উপদ্রুত অঞ্চলে দুর্গতদের সহায়তা ও উদ্ধার তৎপরতায় কাজ করছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকেরা।

পানির তোড়ে ভেঙে গেছে জেলার বহু এলাকার রাস্তা, বাঁধ ও সেতুর অংশ। ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ। অনেকে পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন।

ফেনী শহরের বাসিন্দা মো. ইব্রাহীম  সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘জেলার তিন উপজেলার পর ফেনী শহরও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাঁদের বাসার নিচতলায় পানি ঢুকে যাওয়ায় বাসা ছেড়ে সদর উপজেলার ফকিরাহাট এলাকায় বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। গ্রামের বাড়িতেও সকাল থেকে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। ’

শহরের পূর্ব উকিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাত থেকে উজানের পানির চাপ বাড়তে থাকায় ফেনী পৌর শহরও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাঁদের বাসার নিচতলা পুরোপুরি পানিতে ডুবে গেছে। পরে বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। ’

সোনাগাজী উপজেলার চর লামছি এলাকার বাসিন্দা সালাহ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাতে মুহুরী নদীর পানি আরও বেড়েছে। এখন বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। তলিয়ে গেছে বাড়িঘর। এতে করে নবাবপুর ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দারা পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। ’

উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তাঁর ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকায় ঢুকেছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

উপজেলার চর খোন্দকার জেলেপাড়ার প্রিয় লাল জল দাস বলেন, গতকাল দুপুর থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামি আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উদ্ধারকাজে এগিয়ে এসেছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করতে অন্তর ৫০টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করেছেন তাঁরা।

সোনাগাজী উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির কর্মসূচি (সিপিপির) সহকারী পরিচালক মুনির চৌধুরী বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকেরা প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। খালগুলো দিয়ে পানি যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি খালে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কয়রায় দুই দিনব্যাপী ভাসমান কৃষি কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ফেনী শহর পানির নিচে

আপডেট সময় : ০৫:৪৫:২২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০২৪

ফেনী শহর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর আগে জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এ ছাড়া জেলার নতুন নতুন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ক্রমাগত বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মুহুরী নদীর পানি বেড়ে সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ও নবাবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ঢুকতে শুরু করেছে। এসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

তিন দিন ধরেই প্রবল বর্ষণ অব্যাহত থাকার পাশাপাশি ফেনীর বিভিন্ন নদী ও খালের পানি বেড়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আজ সকালে মুহুরী ও ফেনী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এর মধ্যে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলার বন্যায় উপদ্রুত অঞ্চলে দুর্গতদের সহায়তা ও উদ্ধার তৎপরতায় কাজ করছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকেরা।

পানির তোড়ে ভেঙে গেছে জেলার বহু এলাকার রাস্তা, বাঁধ ও সেতুর অংশ। ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ। অনেকে পরিবার নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন।

ফেনী শহরের বাসিন্দা মো. ইব্রাহীম  সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘জেলার তিন উপজেলার পর ফেনী শহরও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাঁদের বাসার নিচতলায় পানি ঢুকে যাওয়ায় বাসা ছেড়ে সদর উপজেলার ফকিরাহাট এলাকায় বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। গ্রামের বাড়িতেও সকাল থেকে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। ’

শহরের পূর্ব উকিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাত থেকে উজানের পানির চাপ বাড়তে থাকায় ফেনী পৌর শহরও পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাঁদের বাসার নিচতলা পুরোপুরি পানিতে ডুবে গেছে। পরে বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। ’

সোনাগাজী উপজেলার চর লামছি এলাকার বাসিন্দা সালাহ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রাতে মুহুরী নদীর পানি আরও বেড়েছে। এখন বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। তলিয়ে গেছে বাড়িঘর। এতে করে নবাবপুর ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দারা পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। ’

উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তাঁর ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকায় ঢুকেছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

উপজেলার চর খোন্দকার জেলেপাড়ার প্রিয় লাল জল দাস বলেন, গতকাল দুপুর থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামি আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উদ্ধারকাজে এগিয়ে এসেছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা করতে অন্তর ৫০টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করেছেন তাঁরা।

সোনাগাজী উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির কর্মসূচি (সিপিপির) সহকারী পরিচালক মুনির চৌধুরী বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকেরা প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার প্রায় প্রতিটি এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। খালগুলো দিয়ে পানি যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি খালে বাঁধ দিয়ে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।