শিরোনাম :
Logo জুলাই আন্দোলন বিরোধী কার্যক্রমে ইবির ৬১ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে শোকজ Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ উদ্বোধন Logo ২ হাজার রোহিঙ্গার নামে ভুয়া জম্ন নিবন্ধন। তদন্ত হলেও ব্যবস্থা হয়নি দেড় মাসেও। Logo বেরোবির ছাত্র সংসদের দাবিতে অনশনে ২৪ ঘন্টায় অসুস্থ ৪ ‎ Logo খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকীতে শেরপুর জেলা ছাত্রদলের কুরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo অব্যাহত সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত Logo ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ইবির আইসিটি বিভাগে নবীনবরণ Logo পলাশবাড়ীতে ভিডাব্লিউ ডি প্রকল্পে অনিয়মসহ স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। Logo যবিপ্রবি ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা: নিষিদ্ধ সংগঠনের দুই কর্মীকে পুলিশে সোপর্দ Logo তেকানী ইউনিয়নের সচিব হালিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলোনা আরিফুলের

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ০৯:২০:৩৫ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২ আগস্ট ২০১৮
  • ৭৩০ বার পড়া হয়েছে

জীবননগরে জবি ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু : বিশ্ববিদ্যালয়সহ এলাকাজুড়ে শোকের মাতম

এমএ মামুন, জীবনগর মারুফদহ থেকে ফিরে: দিনমজুর বাবার কষ্টে উপার্জিত ও মায়ের কাঁথা সেলাই এবং মুষ্টির চাল বিক্রির টাকায় আরিফুলের স্বপ্ন ছিলো জবির শিক্ষক হবে। সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। কোন এক রহস্য ঘেরাটোপে আরিফুল তার পরিবারের সব স্বপ্নকে সমাহিত করে ভেসে উঠলো বুড়িগঙ্গার পানিতে। বলছিলাম জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মারুফদহ গ্রামের দিনমজুর মঈনউদ্দীন ও হতভাগা মা শাহিদার মেধাবী ছেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ফাস্ট বয় রহস্যজনক মৃত্যু হওয়া আরিফুলের কথা। গতকাল সকালে মারুফদহে অ্যাম্বুলেন্সযোগে আরিফুলের লাশ পৌছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। গোটা এলাকাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। লাশ পৌছানোর কিছু পরেই সকাল ৯টায় আরিফুলের মৃতদেহের জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়। দাফনকার্যে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও সহপাঠিরা অংশগ্রহন করে।
এদিকে, পরিবারের শোকের মাতম এখনো কাটেনি। আরিফুলের দিনমজুর বাবা-মা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী বড় ভাই বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। এঘটনায় শুধু পরিবারের সদস্যরাই নয় গোটা গ্রামের মানুষই শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছে। আরিফুল হত্যার পিছনে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছে গ্রামের সাধারণ মানুষ।
আরিফুলের মা কাঁদতে কাঁদতে বার বার আওড়াচ্ছিলেন, পরের কাঁথা সেলাই, মুষ্টির চাল তুলে, হাঁস মুরগীর ডিম বিক্রি করে খেয়ে না খেয়ে বহু কষ্টে আমি আমার সোনাদের মানুষ করার চেষ্টা করেছি। আমার ছেলে স্বপ্ন দেখতো সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবে। ছেলেদের শিক্ষার জন্য আমার স্বামী শেষ সম্বল মাঠের ১০ কাটা জমিও বিক্রি করে ছেলেদের লেখাপড়ার খরচের যোগান দিয়েছে। কিন্তু আমার ছেলের স্বপ্ন এবং আমাদের স্বামী-স্ত্রীসহ এই গ্রামের অনেকের সব চেষ্টা সব স্বপ্ন মানুষে মাটি করে দিলো।
আরিফুলের দিনমজুর বাবা মহিউদ্দীন চোখ মুছতে মুছতে সাংবাদিকদের বলেন, ছেলেদের লেখাপড়ার জন্য আমি দিন মজুরী থেকে শুরু করে যখন যে কাজ পেয়েছি, তাই করে (ছ্যাচেবেঁচে) লেখাপড়ার খরচ দিয়েছি। ছেলে আমার আগামী কোরবানী ঈদে বাড়ি আসবে বলে ক’দিন আগে ফোন করে বলেছিলো, আব্বা আমি ঈদে বাড়ি আসছি, তোমার জন্য একটা পাঞ্জাবী আনবো। আব্বা তোমার কি কালারের পাঞ্জাবী পছন্দ। আমি বললাম তোমাকে পাঞ্জাবী আনতে হবে না, তুমি ভালভাবে বাড়ি এসো আমার অনেকগুলো পাঞ্জাবী আছে। ছেলে আমার বাড়ি ঠিকিই এলো! কিন্তু পাঞ্জাবী নিয়ে নই, এলো পঁচাগলা লাশ হয়ে। আমার এতো দিনের সব স্বপ্ন চিরদিনের হারিয়ে গেল। আমার সব আশা ভরসা ছিল ছেলে দুটিকে মানুষের মত মানুষ করবো। তাহলে আমি মরেও শান্তি পাব। কিন্তু আমার আরিফুল আমাদের ছেড়ে চলে গেল বলতে বলতে তিনি আবারও কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।

এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে আরিফুলের সহপাঠী সুমাইয়া নামের এক মেয়ে আরিফুলকে দীর্ঘদিন থেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে পারে।
ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসুবকে আরিফুল কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে আরিফুলের ভাই ও সহপাঠীরা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে আরিফুলের কোনো সম্পৃক্ততা ছিলো না।
এবিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী বলেন, আরিফুল হত্যার ঘটনায় আমিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা শোকার্ত। আমরা আরিফুলের মত মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। তার মৃত্যুর পিছনে কি কারণ তা খুঁজে বের করতে প্রশাসনের কাছে আমাদের সকলের অনুরোধ ও দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তাফা কামালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আরিফুল মেধাবী ছাত্র সে প্রথম বেঞ্চে বসতো। তার সাথে তার একই ডিপার্টমেন্টের মেয়ে সুমাইয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্কের কথা শুনেছি। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এছাড়া নদীতে ভাসমান অবস্থায় এক মাঝি আরিফুলে যে ব্যাগ উদ্ধারকরে তাতে সুমাইয়ার দেওয়া একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। ওই মোবাইল ফোনের কল লিস্টের প্রথম কলটিও ছিল সুমাইয়ার বলে, পুলিশ জেনেছে। তিনি আরো বলেন, পুলিশ চেষ্টা করলে কললিস্ট ধরে তদন্ত করলে বিষয়টি আরো সহজ হবে। আমরা এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।
গতকাল বুধবার বিকালে সরেজমিনে জীবননগর মারুফদহের আরিফুলের বাড়ীতে গেলে আরিফুলের ভাই রাশেদ ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আরিফুল হত্যা না অন্য কিছু এর কারণ সমন্ধে আরিফুলের সহপাঠির কথা জানান। রাশেদ জানান, গত তিন বছর ধরে আরিফুলের সহপাঠি সুমাইয়া স্বামী চিন প্রবাসী। সুমাইয়া আরিফুলের কাছে থেকে পড়ার নোটশিট নিতো এবং আরিফুলকে বিভিন্নভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিত। আরিফুল তাতে রাজি হতনা বলে সে বিভিন্ন প্রকার ফন্দি আটতো কিভাবে মেধাবী ছাত্র আরিফুলকে তার প্রেমে বশমানানো যায়। সম্প্রতি সুমাইয়া আরিফুলকে একটি মোবাইল ফোন উপহার দেয়।
আরিফুলের পরিবারের দাবি সুমাইয়াকে আটক ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই আরিফুল হত্যার কারণ উদঘাটন করা সহজ হবে। এই মোবাইল ফোনের কললিস্ট ধরে তদন্ত এগিয়ে গেলে আরিফুল হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হবে এমন দাবি মারুফদহ গ্রামের মানুষেরও।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই সোমবার ঢাকার কেরানীগঞ্জের থেকে ঢাকায় আসার পথে নিখোঁজ হয় আরিফুল। এরপর ৩০ ঘন্টা পর গত ৩১ জুলাই মঙ্গলবার বুড়িগঙ্গা থেকে আরিফুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। গতকাল বুধবার সকালে তার মরদেহ জীবননগর উপজেলার মারুফদহ গ্রামে পৌঁছালে সকাল ৯টায় তার দাফনকাজ সম্পন্ন হয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই আন্দোলন বিরোধী কার্যক্রমে ইবির ৬১ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে শোকজ

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলোনা আরিফুলের

আপডেট সময় : ০৯:২০:৩৫ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২ আগস্ট ২০১৮

জীবননগরে জবি ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু : বিশ্ববিদ্যালয়সহ এলাকাজুড়ে শোকের মাতম

এমএ মামুন, জীবনগর মারুফদহ থেকে ফিরে: দিনমজুর বাবার কষ্টে উপার্জিত ও মায়ের কাঁথা সেলাই এবং মুষ্টির চাল বিক্রির টাকায় আরিফুলের স্বপ্ন ছিলো জবির শিক্ষক হবে। সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। কোন এক রহস্য ঘেরাটোপে আরিফুল তার পরিবারের সব স্বপ্নকে সমাহিত করে ভেসে উঠলো বুড়িগঙ্গার পানিতে। বলছিলাম জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মারুফদহ গ্রামের দিনমজুর মঈনউদ্দীন ও হতভাগা মা শাহিদার মেধাবী ছেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ফাস্ট বয় রহস্যজনক মৃত্যু হওয়া আরিফুলের কথা। গতকাল সকালে মারুফদহে অ্যাম্বুলেন্সযোগে আরিফুলের লাশ পৌছালে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। গোটা এলাকাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। লাশ পৌছানোর কিছু পরেই সকাল ৯টায় আরিফুলের মৃতদেহের জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনকার্য সম্পন্ন হয়। দাফনকার্যে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও সহপাঠিরা অংশগ্রহন করে।
এদিকে, পরিবারের শোকের মাতম এখনো কাটেনি। আরিফুলের দিনমজুর বাবা-মা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী বড় ভাই বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। এঘটনায় শুধু পরিবারের সদস্যরাই নয় গোটা গ্রামের মানুষই শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছে। আরিফুল হত্যার পিছনে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছে গ্রামের সাধারণ মানুষ।
আরিফুলের মা কাঁদতে কাঁদতে বার বার আওড়াচ্ছিলেন, পরের কাঁথা সেলাই, মুষ্টির চাল তুলে, হাঁস মুরগীর ডিম বিক্রি করে খেয়ে না খেয়ে বহু কষ্টে আমি আমার সোনাদের মানুষ করার চেষ্টা করেছি। আমার ছেলে স্বপ্ন দেখতো সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবে। ছেলেদের শিক্ষার জন্য আমার স্বামী শেষ সম্বল মাঠের ১০ কাটা জমিও বিক্রি করে ছেলেদের লেখাপড়ার খরচের যোগান দিয়েছে। কিন্তু আমার ছেলের স্বপ্ন এবং আমাদের স্বামী-স্ত্রীসহ এই গ্রামের অনেকের সব চেষ্টা সব স্বপ্ন মানুষে মাটি করে দিলো।
আরিফুলের দিনমজুর বাবা মহিউদ্দীন চোখ মুছতে মুছতে সাংবাদিকদের বলেন, ছেলেদের লেখাপড়ার জন্য আমি দিন মজুরী থেকে শুরু করে যখন যে কাজ পেয়েছি, তাই করে (ছ্যাচেবেঁচে) লেখাপড়ার খরচ দিয়েছি। ছেলে আমার আগামী কোরবানী ঈদে বাড়ি আসবে বলে ক’দিন আগে ফোন করে বলেছিলো, আব্বা আমি ঈদে বাড়ি আসছি, তোমার জন্য একটা পাঞ্জাবী আনবো। আব্বা তোমার কি কালারের পাঞ্জাবী পছন্দ। আমি বললাম তোমাকে পাঞ্জাবী আনতে হবে না, তুমি ভালভাবে বাড়ি এসো আমার অনেকগুলো পাঞ্জাবী আছে। ছেলে আমার বাড়ি ঠিকিই এলো! কিন্তু পাঞ্জাবী নিয়ে নই, এলো পঁচাগলা লাশ হয়ে। আমার এতো দিনের সব স্বপ্ন চিরদিনের হারিয়ে গেল। আমার সব আশা ভরসা ছিল ছেলে দুটিকে মানুষের মত মানুষ করবো। তাহলে আমি মরেও শান্তি পাব। কিন্তু আমার আরিফুল আমাদের ছেড়ে চলে গেল বলতে বলতে তিনি আবারও কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।

এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে আরিফুলের সহপাঠী সুমাইয়া নামের এক মেয়ে আরিফুলকে দীর্ঘদিন থেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে পারে।
ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসুবকে আরিফুল কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক বলে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে আরিফুলের ভাই ও সহপাঠীরা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাথে আরিফুলের কোনো সম্পৃক্ততা ছিলো না।
এবিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামী বলেন, আরিফুল হত্যার ঘটনায় আমিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা শোকার্ত। আমরা আরিফুলের মত মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। তার মৃত্যুর পিছনে কি কারণ তা খুঁজে বের করতে প্রশাসনের কাছে আমাদের সকলের অনুরোধ ও দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তাফা কামালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আরিফুল মেধাবী ছাত্র সে প্রথম বেঞ্চে বসতো। তার সাথে তার একই ডিপার্টমেন্টের মেয়ে সুমাইয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্কের কথা শুনেছি। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এছাড়া নদীতে ভাসমান অবস্থায় এক মাঝি আরিফুলে যে ব্যাগ উদ্ধারকরে তাতে সুমাইয়ার দেওয়া একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। ওই মোবাইল ফোনের কল লিস্টের প্রথম কলটিও ছিল সুমাইয়ার বলে, পুলিশ জেনেছে। তিনি আরো বলেন, পুলিশ চেষ্টা করলে কললিস্ট ধরে তদন্ত করলে বিষয়টি আরো সহজ হবে। আমরা এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।
গতকাল বুধবার বিকালে সরেজমিনে জীবননগর মারুফদহের আরিফুলের বাড়ীতে গেলে আরিফুলের ভাই রাশেদ ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা আরিফুল হত্যা না অন্য কিছু এর কারণ সমন্ধে আরিফুলের সহপাঠির কথা জানান। রাশেদ জানান, গত তিন বছর ধরে আরিফুলের সহপাঠি সুমাইয়া স্বামী চিন প্রবাসী। সুমাইয়া আরিফুলের কাছে থেকে পড়ার নোটশিট নিতো এবং আরিফুলকে বিভিন্নভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিত। আরিফুল তাতে রাজি হতনা বলে সে বিভিন্ন প্রকার ফন্দি আটতো কিভাবে মেধাবী ছাত্র আরিফুলকে তার প্রেমে বশমানানো যায়। সম্প্রতি সুমাইয়া আরিফুলকে একটি মোবাইল ফোন উপহার দেয়।
আরিফুলের পরিবারের দাবি সুমাইয়াকে আটক ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই আরিফুল হত্যার কারণ উদঘাটন করা সহজ হবে। এই মোবাইল ফোনের কললিস্ট ধরে তদন্ত এগিয়ে গেলে আরিফুল হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হবে এমন দাবি মারুফদহ গ্রামের মানুষেরও।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই সোমবার ঢাকার কেরানীগঞ্জের থেকে ঢাকায় আসার পথে নিখোঁজ হয় আরিফুল। এরপর ৩০ ঘন্টা পর গত ৩১ জুলাই মঙ্গলবার বুড়িগঙ্গা থেকে আরিফুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। গতকাল বুধবার সকালে তার মরদেহ জীবননগর উপজেলার মারুফদহ গ্রামে পৌঁছালে সকাল ৯টায় তার দাফনকাজ সম্পন্ন হয়।