চলতি মৌসুমে লক্ষমাত্রার চেয়ে আবাদ বেশি!
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা জেলার রোপা আউশ ধান চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে চাষীরা। ধানের বাজার দর ভালো, উৎপাদন খরচ কম ও ফলন ভালো হওয়ায় চলতি মৌসুমে লক্ষমাত্রার চেয়ে এই আউশ ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। সরকার এই ধানের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষে চাষিদেরকে উৎসাহিত করছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় রোপা আউশ ধানের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৪২ হাজার ১শত ৪১ হেক্টর জমিতে। যা ১ হাজার ১শত ৪১ হেক্টর জমিতে বেশি। এর মধ্যে আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৬ হাজার ৯শ’ ৯৬ হেক্টর, জীবননগর উপজেলায় ৮ হাজার ৫শ’ হেক্টর, দামুড়হুদায় ১১ হাজার ৫শ’ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ১৫ হাজার ১শ’ ৪৫ হেক্টর জমিতে।
দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের চাষি আমির হামজা জানান, তিনি প্রতিবছর পাটের আবাদ করতেন পাটের বাজার দর ভালোনা পাওয়া ও পাট পঁচানো পর্যাপ্ত পানিনা থাকার কারনে পাটের পরিবর্তে এবার ৪ বিঘা জমিতে রোপা আউশ ধানের আবাদ করেছে। এই আবাদ বর্ষা মৌসুমে হওয়ায় তেমন পানির খরচ হয়না তেমনি অল্পদিনের (১২০) দিনের ফসল আউশ ধানের ফলন ভালো হওয়ায় ধানের বাজার মূল্য ভালো হওয়ায় তিনি এই আউশ ধানের আবাদ করেছে। এছাড়াও এই ধান কেটে একই জমিতে অনায়াসে ভুট্টার আবাদ করবেন।
একই গ্রামের হাজী আকতার হোসেন জানান, তিনি এবার ৪ বিঘা জমিতে রোপা আউশ ধানের আবাদ করেছে এই ধানে সেচ খরচ নেই বললেই চলে উপর বৃষ্টিতেই প্রায় আবাদ হয়ে যায়। এতে খরচ ও অন্য ধান চাষের তুলনায় অনেক কম হয়। ধান কেটে ওই জমিতে তিনি ভুট্টার আবাদ করবেন।
দর্শনা পৌর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী ইয়াছির আরাফাত জানান, বর্তমানে রোপা আউশ ধানের অবস্থা ভালো চাষিদেরকে রোগবালাইয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার আউশ ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা করছেন।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাঈম আস সাকিব জানান, অল্প সময়ের আবাদ উৎপাদন খরচ অন্যান্য ধান আবাদের থেকে কম সেই সাথে ফলন ও ভালো পাওয়ায় চাষিরা এই রোপা আউশ ধানের আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে।
এছাড়াও চলতি মৌসুম ছাড়া অন্যান্য মৌসুমে ধানসহ বিভিন্ন ধরনের আবাদ নিচ থেকে পানি তুলে সেচ দিতে হয়। এ কারনে পানির স্তর নিচে নেমে যায় অনেক সময় গভীর নলকূপে ও পানির পরিমান কমে যায় অনেক সময় পানির স্তর নীচে নেমে গেলে স্যালোইঞ্জিনে ও পানি উঠা কমে যায়। ফলে ওই সময় এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে দ্বিগুন সময় লেগে যায় এতে করে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। পানির স্তর নিচে নেমে গেলে আমন ধানসহ বিভিন্ন আবাদ খরার ঝুঁকিতে থাকে। এ কারনে সরকার পানির স্তর ঠিক রাখতে বর্ষা মৌসুমে রোপা আউশ ধান আবাদের দিকে আগ্রহ বাড়াতে চাষিদেরকে উৎসাহিত করতে প্রণোদনা কর্মসূচির আওয়াত চাষিদের বিনা মূল্যে সার বীজ নগদ অর্থসহ বিভিন্ন উপকরন দিয়ে আসছে। বর্ষা মৌসুমে রোপা আউশ ধানের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষে প্রণোদনা কর্মসূচি অব্যহত থাকবে বলেও তিনি জানান।