শিরোনাম :
Logo জলবায়ু ও পরিবেশ গবেষক ডা. রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি Logo সপ্তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির কবিতাপাঠ ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা Logo বাগেরহাটে বিএনপির সম্মেলনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৩০ Logo ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় ভুক্তভোগী পরিবার শাহরাস্তির সাইদুল ইসলাম শাওন হত্যা মামলার তদন্ত শুরু করল পিবিআই Logo ড. ইউনূস-তারেক বৈঠক রাজনীতিতে অস্বস্তি তৈরি করেছে: চরমোনাই পীর Logo ‘১৬ জুন বিতর্কিত বাকশাল সরকার সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল’ Logo চুয়াডাঙ্গায় মোটরসাইকেল কিনে না দেয়ায় ফাঁস নিলেন কলেজছাত্র Logo পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশী যুবক নিহত। Logo নিজেদের অবস্থান জানিয়ে ফোনে ইরানি প্রেসিডেন্টকে যে বার্তা দিলেন সৌদি যুবরাজ Logo এবার ভারতে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, পাইলটসহ নিহত ৭

মুজিনগর সরকার কে গার্ড অব অনার প্রদানকারী আনসার সদস্য লিয়াকত আলী আর নেই

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ১২:৪৩:৪৩ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৩০ জুলাই ২০১৮
  • ৭৪৫ বার পড়া হয়েছে

মেহেরপুর প্রতিনিধি: ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রথম সরকার কে গার্ড অব অনার প্রদানকারী আনসার সদস্য লিয়াকত আলী (৭০) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহে—– রাজেউন) । শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও এক কণ্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুনাগ্রাহী রেখে গেছেন। লিয়াকত আলী মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ভবের পাড়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভূগছিলেন।
রবিবার সকাল ১১ টার দিকে বাগোয়ান কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহে রাষ্ট্রিয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। এর আগে বিউগলের করুণ সুর বেজে উঠার সাথে সাথে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন । মুজিবনগরের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন রাষ্ট্রের পক্ষে সালাম গ্রহণ করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খায়রুল হাসান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা,সহ স্থানীয়রা শ্রদ্ধাঞ্জলি অপর্ন করে জানাযা ও দাফন কাজে অংশগ্রহণ করেন।
২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গার্ড অব অনার প্রদান কারীদের বিশেষ সম্মানে ভুষিত করেছিলেন। তার মধ্যে লিয়াকত আলী ছিলেন।
লিয়াকত আলীর মেয়ে বাগোয়ন ইউনয়নের ১,২ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের (সংরক্ষিত) মহিলা সদস্য নারগিস খাতুন জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে তাঁর বাবা লিয়াকত আলী কয়েকটি রোগে ভূগছিলেন। কয়েক মাস আগে ভারত থেকে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরেন তিনি। এর পর থেকে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। অবশেষে শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সকলকে কাঁদিয়ে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি জানান, আমার বাবা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অংশ। তেমন একজন বাবার সন্তান হিসেবে নিজেকে গর্ববোধ করি। আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে বাবার আদর্শ ধারণ করে বাকি জীবন কাটাতে চাই।
এদিকে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন সহ এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা তাঁকে দেখতে যান । এসময় তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা শোক সন্তোপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন মেহেরপুর মহাকুমার বৈদ্যনাথতলা আ¤্রকাননে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। শপথ গ্রহণ শেষে ওই স্থানের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর।
পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও নবগঠিত আনসার বাহিনীর স্থানীয় ১২ জনের একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন ওই সরকারকে। সে দিনের সেই ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে যে ১২ জন গার্ড অব অনার প্রদান করেছিলেন তারা হলেন- মুজিবনগর উপজেলা ভবের পাড়া গ্রামে ফকির মহাম্মদ, নজরুল ইসলাম, সিরাজুল হক, মফিজ উদ্দিন, আজিম উদ্দিন, লিয়াকত আলী, অস্থির মল্লিক, আরজ উল্লাহ, কিসমত আলী, সোনাপুর গ্রামের সাহেব আলী, হামিদুল ইসলাম ও সদর উপজেলার হাসানাবাদ গ্রামের ইয়াদ আলী।
লিয়াকত আলীকে দিয়ে ১২ জনের মধ্যে ৯ জন আনছার সদস্য মারা গেলেন। যে তিন জন জীবিত আছেন তারা হলেন- সিরাজুল হক, আজিম উদ্দিন ও হামিদুল ইসলাম।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জলবায়ু ও পরিবেশ গবেষক ডা. রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি

মুজিনগর সরকার কে গার্ড অব অনার প্রদানকারী আনসার সদস্য লিয়াকত আলী আর নেই

আপডেট সময় : ১২:৪৩:৪৩ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৩০ জুলাই ২০১৮

মেহেরপুর প্রতিনিধি: ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রথম সরকার কে গার্ড অব অনার প্রদানকারী আনসার সদস্য লিয়াকত আলী (৭০) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহে—– রাজেউন) । শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও এক কণ্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুনাগ্রাহী রেখে গেছেন। লিয়াকত আলী মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ভবের পাড়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভূগছিলেন।
রবিবার সকাল ১১ টার দিকে বাগোয়ান কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহে রাষ্ট্রিয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। এর আগে বিউগলের করুণ সুর বেজে উঠার সাথে সাথে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন । মুজিবনগরের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন রাষ্ট্রের পক্ষে সালাম গ্রহণ করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খায়রুল হাসান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা,সহ স্থানীয়রা শ্রদ্ধাঞ্জলি অপর্ন করে জানাযা ও দাফন কাজে অংশগ্রহণ করেন।
২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গার্ড অব অনার প্রদান কারীদের বিশেষ সম্মানে ভুষিত করেছিলেন। তার মধ্যে লিয়াকত আলী ছিলেন।
লিয়াকত আলীর মেয়ে বাগোয়ন ইউনয়নের ১,২ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের (সংরক্ষিত) মহিলা সদস্য নারগিস খাতুন জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে তাঁর বাবা লিয়াকত আলী কয়েকটি রোগে ভূগছিলেন। কয়েক মাস আগে ভারত থেকে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরেন তিনি। এর পর থেকে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। অবশেষে শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সকলকে কাঁদিয়ে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি জানান, আমার বাবা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অংশ। তেমন একজন বাবার সন্তান হিসেবে নিজেকে গর্ববোধ করি। আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে বাবার আদর্শ ধারণ করে বাকি জীবন কাটাতে চাই।
এদিকে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন সহ এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা তাঁকে দেখতে যান । এসময় তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা শোক সন্তোপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন মেহেরপুর মহাকুমার বৈদ্যনাথতলা আ¤্রকাননে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। শপথ গ্রহণ শেষে ওই স্থানের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর।
পরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও নবগঠিত আনসার বাহিনীর স্থানীয় ১২ জনের একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন ওই সরকারকে। সে দিনের সেই ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে যে ১২ জন গার্ড অব অনার প্রদান করেছিলেন তারা হলেন- মুজিবনগর উপজেলা ভবের পাড়া গ্রামে ফকির মহাম্মদ, নজরুল ইসলাম, সিরাজুল হক, মফিজ উদ্দিন, আজিম উদ্দিন, লিয়াকত আলী, অস্থির মল্লিক, আরজ উল্লাহ, কিসমত আলী, সোনাপুর গ্রামের সাহেব আলী, হামিদুল ইসলাম ও সদর উপজেলার হাসানাবাদ গ্রামের ইয়াদ আলী।
লিয়াকত আলীকে দিয়ে ১২ জনের মধ্যে ৯ জন আনছার সদস্য মারা গেলেন। যে তিন জন জীবিত আছেন তারা হলেন- সিরাজুল হক, আজিম উদ্দিন ও হামিদুল ইসলাম।