রবিবার | ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo ক্যান্সারে মৃত্যু খুবি শিক্ষার্থীর: চিকিৎসার অবশিষ্ট অর্থে ‘রাকিব স্মৃতি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ট্রাস্ট’ গঠন Logo চাঁদপুরে প্রাইভেট হসপিটাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা Logo শ্রোতাদের ভালোবাসায় সিক্ত তরুণ গীতিকার রাসেল ইব্রাহীমের গান ‘আমার বন্ধুরা খুব দুষ্টু ছিল’ Logo বীরগঞ্জে এক ব্যক্তিকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা Logo মনোহরদীতে বিএজেএসএম মডেল কলেজে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ Logo মতলব দক্ষিণ উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা Logo হাদীর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo মিয়ানমারে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ সিমেন্ট ও বার্মিজ লুঙ্গিসহ ২২ জন পাচারকারী আটক Logo কচুয়ায় র‍্যাবের অভিযানে ৫ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক Logo চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের পিতার মৃত্যুতে দোয়া

ঝিনাইদহে ভুমি দস্যুরা বেপরোয়া!

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৮:০৫:২৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৪ জুন ২০১৮
  • ৭৬৩ বার পড়া হয়েছে

জাল পরচা তৈরী করে কোটি টাকার জমি রেজিষ্ট্রি খুনোখুনির আশংকা

জাহিদুর রহমান তারেক, ঝিনাইদহঃ অসৎ উদ্দেশ্যে সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে উচ্চ মুল্যে জমি রেজিষ্ট্রির পর ঝিনাইদহ সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এবার জাল পরচা তৈরী করে অন্যের প্রায় কোটি টাকা মুল্যের জমি অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল করার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা রেজিষ্ট্রি অফিসে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রকৃত জমির মালিকরা প্রতিকার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিষ্ট্রেশন (আইজিআর) ও ঝিনাইদজ জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন। জাল কাগজে বিক্রিত জমির উপর ঝিনাইদহের একটি আদালত নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৯ সালের ১৮ আগষ্ট ৬৪৫৮ নং কোবলায় ঝিনাইদহ পৌরসভাধীন ১৫৬ নং মৌজা কালিকাপুর গ্রামে এস.এ-২৬০ নং খতিয়ানভুক্ত এস.এ ২৯৮ নং দাগে এস.এ মালিক আব্দুল ওয়াহেদের থেকে ১০ শতক জমি খরিদ করেন তিন ভাই মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফজুর রহমান ও পারভেজ কবির। খরিদাস্বত্তে¡ স্বত্ববান হয়ে তারা ওই জমির উপর দোকান নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করে আসছেন। অথচ মোস্তাফিজুর রহমান গংদের নামে রেকর্ড ও দখলে থাকা জমি ঝিনাইদহের চিহ্নিত ভূমিদস্যু কালিকাপুর গুলশানপাড়ার আব্দুল বারিক মন্ডলের ছেলে মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন মান্নান ও একই গ্রামের আত্তাব বিশ্বাসের ছেলে মোঃ আসলাম আলীসহ তিনজন গত ৪ মার্চ এস.এ মালিক কুতুবউদ্দিনের ওয়ারেশ খোন্দকার হাফিজুর রহমান ফারুক, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ও খোন্দকার মুসফিকুর রহমানের কাছ থেকে জাল পরচা তৈরী করে ০৪ শতক জমি অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল করার চেষ্টা করে। প্রথম দফায় তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়।

বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে মোস্তাফিজুর রহমান গংরা অভিযোগপত্র দেন। সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে তাদের ভুমি দস্যুদের পরচা জাল হওয়ায় দলিল রেজিষ্ট্রি করেন নি। ঘটনার দিন ভুৃমিদস্যুরা ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিস একরকম পালিয়ে চলে আসেন। মোস্তাফিজুর রহমান গংদের অভিযোগ ও জমির দলিলাদি সাব-রেজিষ্টার অফিসে জমা থাকার পরও ভুমিদস্যুদের গডফাদার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের মহিদুল ইসলামের ছেলে টিপু সুলতান গত ৭ জুন সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী এবং তার সহকারী শেলি খাতুনকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে তাদের আর.এস (ডি.পি) ৬৯০ নং খতিয়ানে অন্য নাম বিসিয়ে জাল পরচা তৈরী করে ৫১১৮ নং একখান পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল রেজিষ্ট্রি করতে সমর্থ হয়। রেজিষ্ট্রি অফিসের কর্মচারীদের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে অফিসে না এসে বাসায় কমিশন দলিল করেন।

 

দলিলে সাক্ষর করেন সাবেক মালিক মৃত খোন্দকার কুতুব উদ্দিনের ওয়ারেশ খোন্দকার হাফিজুর রহমান ফারুক, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, খোন্দকার মুসফিকুর রহমান, কানিজ খোন্দকার ও হোসনেআরা খোন্দকার। জাল জোচ্চুরীর সাথে দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ই জড়িত থাকায় প্রকৃত জমির মালিকরা আদালত ও প্রশাসনের দারস্থ হয়েছে। জাল পরচা তৈরী করে এক জনের জমি অন্যজনের নামে রেজিষ্ট্রি করায় উভয় পক্ষের মধ্যে খুন-খারাপি পর্যায়ে পৌছেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অধস্তন কর্মচারীদের অসর্তকতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী শেলি খাতুন বলেন, আমার টেবিলেও এই অভিযোগ রাখা আছে। কিন্তু কি ভাবে যে হলো তা আমার বোধগম্য নয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ক্যান্সারে মৃত্যু খুবি শিক্ষার্থীর: চিকিৎসার অবশিষ্ট অর্থে ‘রাকিব স্মৃতি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ট্রাস্ট’ গঠন

ঝিনাইদহে ভুমি দস্যুরা বেপরোয়া!

আপডেট সময় : ০৮:০৫:২৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৪ জুন ২০১৮

জাল পরচা তৈরী করে কোটি টাকার জমি রেজিষ্ট্রি খুনোখুনির আশংকা

জাহিদুর রহমান তারেক, ঝিনাইদহঃ অসৎ উদ্দেশ্যে সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে উচ্চ মুল্যে জমি রেজিষ্ট্রির পর ঝিনাইদহ সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এবার জাল পরচা তৈরী করে অন্যের প্রায় কোটি টাকা মুল্যের জমি অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল করার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা রেজিষ্ট্রি অফিসে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রকৃত জমির মালিকরা প্রতিকার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিষ্ট্রেশন (আইজিআর) ও ঝিনাইদজ জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন। জাল কাগজে বিক্রিত জমির উপর ঝিনাইদহের একটি আদালত নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৯ সালের ১৮ আগষ্ট ৬৪৫৮ নং কোবলায় ঝিনাইদহ পৌরসভাধীন ১৫৬ নং মৌজা কালিকাপুর গ্রামে এস.এ-২৬০ নং খতিয়ানভুক্ত এস.এ ২৯৮ নং দাগে এস.এ মালিক আব্দুল ওয়াহেদের থেকে ১০ শতক জমি খরিদ করেন তিন ভাই মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফজুর রহমান ও পারভেজ কবির। খরিদাস্বত্তে¡ স্বত্ববান হয়ে তারা ওই জমির উপর দোকান নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করে আসছেন। অথচ মোস্তাফিজুর রহমান গংদের নামে রেকর্ড ও দখলে থাকা জমি ঝিনাইদহের চিহ্নিত ভূমিদস্যু কালিকাপুর গুলশানপাড়ার আব্দুল বারিক মন্ডলের ছেলে মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন মান্নান ও একই গ্রামের আত্তাব বিশ্বাসের ছেলে মোঃ আসলাম আলীসহ তিনজন গত ৪ মার্চ এস.এ মালিক কুতুবউদ্দিনের ওয়ারেশ খোন্দকার হাফিজুর রহমান ফারুক, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ও খোন্দকার মুসফিকুর রহমানের কাছ থেকে জাল পরচা তৈরী করে ০৪ শতক জমি অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল করার চেষ্টা করে। প্রথম দফায় তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়।

বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে মোস্তাফিজুর রহমান গংরা অভিযোগপত্র দেন। সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে তাদের ভুমি দস্যুদের পরচা জাল হওয়ায় দলিল রেজিষ্ট্রি করেন নি। ঘটনার দিন ভুৃমিদস্যুরা ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিস একরকম পালিয়ে চলে আসেন। মোস্তাফিজুর রহমান গংদের অভিযোগ ও জমির দলিলাদি সাব-রেজিষ্টার অফিসে জমা থাকার পরও ভুমিদস্যুদের গডফাদার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের মহিদুল ইসলামের ছেলে টিপু সুলতান গত ৭ জুন সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী এবং তার সহকারী শেলি খাতুনকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে তাদের আর.এস (ডি.পি) ৬৯০ নং খতিয়ানে অন্য নাম বিসিয়ে জাল পরচা তৈরী করে ৫১১৮ নং একখান পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল রেজিষ্ট্রি করতে সমর্থ হয়। রেজিষ্ট্রি অফিসের কর্মচারীদের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে অফিসে না এসে বাসায় কমিশন দলিল করেন।

 

দলিলে সাক্ষর করেন সাবেক মালিক মৃত খোন্দকার কুতুব উদ্দিনের ওয়ারেশ খোন্দকার হাফিজুর রহমান ফারুক, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, খোন্দকার মুসফিকুর রহমান, কানিজ খোন্দকার ও হোসনেআরা খোন্দকার। জাল জোচ্চুরীর সাথে দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ই জড়িত থাকায় প্রকৃত জমির মালিকরা আদালত ও প্রশাসনের দারস্থ হয়েছে। জাল পরচা তৈরী করে এক জনের জমি অন্যজনের নামে রেজিষ্ট্রি করায় উভয় পক্ষের মধ্যে খুন-খারাপি পর্যায়ে পৌছেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অধস্তন কর্মচারীদের অসর্তকতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী শেলি খাতুন বলেন, আমার টেবিলেও এই অভিযোগ রাখা আছে। কিন্তু কি ভাবে যে হলো তা আমার বোধগম্য নয়।