শিরোনাম :
Logo ঝালকাঠিতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী দিবস উপলক্ষ্যে জেএসডির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ স্ত্রী, অতিষ্ঠ হয়ে জীবন্ত কবর দেয়ার চেষ্টা স্বামীর Logo গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ! Logo আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান ‘চিরকালের জন্য’ যুদ্ধ বন্ধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: ট্রাম্প Logo ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন : সিইসি Logo সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আনম এহসানুল হক শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে Logo পলাশবাড়ীতে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত। Logo কচুয়ায় অবৈধ রিং জাল উদ্ধার ও পুড়িয়ে ধ্বংস Logo বীরগঞ্জে উপজেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত Logo বীরগঞ্জে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে স্বামী-স্ত্রীর মৃ-ত্যু

ঝিনাইদহে ভুমি দস্যুরা বেপরোয়া!

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৮:০৫:২৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৪ জুন ২০১৮
  • ৭৫০ বার পড়া হয়েছে

জাল পরচা তৈরী করে কোটি টাকার জমি রেজিষ্ট্রি খুনোখুনির আশংকা

জাহিদুর রহমান তারেক, ঝিনাইদহঃ অসৎ উদ্দেশ্যে সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে উচ্চ মুল্যে জমি রেজিষ্ট্রির পর ঝিনাইদহ সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এবার জাল পরচা তৈরী করে অন্যের প্রায় কোটি টাকা মুল্যের জমি অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল করার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা রেজিষ্ট্রি অফিসে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রকৃত জমির মালিকরা প্রতিকার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিষ্ট্রেশন (আইজিআর) ও ঝিনাইদজ জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন। জাল কাগজে বিক্রিত জমির উপর ঝিনাইদহের একটি আদালত নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৯ সালের ১৮ আগষ্ট ৬৪৫৮ নং কোবলায় ঝিনাইদহ পৌরসভাধীন ১৫৬ নং মৌজা কালিকাপুর গ্রামে এস.এ-২৬০ নং খতিয়ানভুক্ত এস.এ ২৯৮ নং দাগে এস.এ মালিক আব্দুল ওয়াহেদের থেকে ১০ শতক জমি খরিদ করেন তিন ভাই মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফজুর রহমান ও পারভেজ কবির। খরিদাস্বত্তে¡ স্বত্ববান হয়ে তারা ওই জমির উপর দোকান নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করে আসছেন। অথচ মোস্তাফিজুর রহমান গংদের নামে রেকর্ড ও দখলে থাকা জমি ঝিনাইদহের চিহ্নিত ভূমিদস্যু কালিকাপুর গুলশানপাড়ার আব্দুল বারিক মন্ডলের ছেলে মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন মান্নান ও একই গ্রামের আত্তাব বিশ্বাসের ছেলে মোঃ আসলাম আলীসহ তিনজন গত ৪ মার্চ এস.এ মালিক কুতুবউদ্দিনের ওয়ারেশ খোন্দকার হাফিজুর রহমান ফারুক, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ও খোন্দকার মুসফিকুর রহমানের কাছ থেকে জাল পরচা তৈরী করে ০৪ শতক জমি অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল করার চেষ্টা করে। প্রথম দফায় তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়।

বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে মোস্তাফিজুর রহমান গংরা অভিযোগপত্র দেন। সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে তাদের ভুমি দস্যুদের পরচা জাল হওয়ায় দলিল রেজিষ্ট্রি করেন নি। ঘটনার দিন ভুৃমিদস্যুরা ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিস একরকম পালিয়ে চলে আসেন। মোস্তাফিজুর রহমান গংদের অভিযোগ ও জমির দলিলাদি সাব-রেজিষ্টার অফিসে জমা থাকার পরও ভুমিদস্যুদের গডফাদার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের মহিদুল ইসলামের ছেলে টিপু সুলতান গত ৭ জুন সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী এবং তার সহকারী শেলি খাতুনকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে তাদের আর.এস (ডি.পি) ৬৯০ নং খতিয়ানে অন্য নাম বিসিয়ে জাল পরচা তৈরী করে ৫১১৮ নং একখান পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল রেজিষ্ট্রি করতে সমর্থ হয়। রেজিষ্ট্রি অফিসের কর্মচারীদের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে অফিসে না এসে বাসায় কমিশন দলিল করেন।

 

দলিলে সাক্ষর করেন সাবেক মালিক মৃত খোন্দকার কুতুব উদ্দিনের ওয়ারেশ খোন্দকার হাফিজুর রহমান ফারুক, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, খোন্দকার মুসফিকুর রহমান, কানিজ খোন্দকার ও হোসনেআরা খোন্দকার। জাল জোচ্চুরীর সাথে দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ই জড়িত থাকায় প্রকৃত জমির মালিকরা আদালত ও প্রশাসনের দারস্থ হয়েছে। জাল পরচা তৈরী করে এক জনের জমি অন্যজনের নামে রেজিষ্ট্রি করায় উভয় পক্ষের মধ্যে খুন-খারাপি পর্যায়ে পৌছেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অধস্তন কর্মচারীদের অসর্তকতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী শেলি খাতুন বলেন, আমার টেবিলেও এই অভিযোগ রাখা আছে। কিন্তু কি ভাবে যে হলো তা আমার বোধগম্য নয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঝালকাঠিতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী দিবস উপলক্ষ্যে জেএসডির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ঝিনাইদহে ভুমি দস্যুরা বেপরোয়া!

আপডেট সময় : ০৮:০৫:২৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৪ জুন ২০১৮

জাল পরচা তৈরী করে কোটি টাকার জমি রেজিষ্ট্রি খুনোখুনির আশংকা

জাহিদুর রহমান তারেক, ঝিনাইদহঃ অসৎ উদ্দেশ্যে সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে উচ্চ মুল্যে জমি রেজিষ্ট্রির পর ঝিনাইদহ সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এবার জাল পরচা তৈরী করে অন্যের প্রায় কোটি টাকা মুল্যের জমি অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল করার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা রেজিষ্ট্রি অফিসে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রকৃত জমির মালিকরা প্রতিকার চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিষ্ট্রেশন (আইজিআর) ও ঝিনাইদজ জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন। জাল কাগজে বিক্রিত জমির উপর ঝিনাইদহের একটি আদালত নিষেধাজ্ঞা জারী করেছেন।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৯ সালের ১৮ আগষ্ট ৬৪৫৮ নং কোবলায় ঝিনাইদহ পৌরসভাধীন ১৫৬ নং মৌজা কালিকাপুর গ্রামে এস.এ-২৬০ নং খতিয়ানভুক্ত এস.এ ২৯৮ নং দাগে এস.এ মালিক আব্দুল ওয়াহেদের থেকে ১০ শতক জমি খরিদ করেন তিন ভাই মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফজুর রহমান ও পারভেজ কবির। খরিদাস্বত্তে¡ স্বত্ববান হয়ে তারা ওই জমির উপর দোকান নির্মাণ করে ভাড়া আদায় করে আসছেন। অথচ মোস্তাফিজুর রহমান গংদের নামে রেকর্ড ও দখলে থাকা জমি ঝিনাইদহের চিহ্নিত ভূমিদস্যু কালিকাপুর গুলশানপাড়ার আব্দুল বারিক মন্ডলের ছেলে মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন মান্নান ও একই গ্রামের আত্তাব বিশ্বাসের ছেলে মোঃ আসলাম আলীসহ তিনজন গত ৪ মার্চ এস.এ মালিক কুতুবউদ্দিনের ওয়ারেশ খোন্দকার হাফিজুর রহমান ফারুক, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ও খোন্দকার মুসফিকুর রহমানের কাছ থেকে জাল পরচা তৈরী করে ০৪ শতক জমি অপ্রত্যাহারযোগ্য পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল করার চেষ্টা করে। প্রথম দফায় তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যার্থ হয়।

বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে মোস্তাফিজুর রহমান গংরা অভিযোগপত্র দেন। সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে তাদের ভুমি দস্যুদের পরচা জাল হওয়ায় দলিল রেজিষ্ট্রি করেন নি। ঘটনার দিন ভুৃমিদস্যুরা ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিস একরকম পালিয়ে চলে আসেন। মোস্তাফিজুর রহমান গংদের অভিযোগ ও জমির দলিলাদি সাব-রেজিষ্টার অফিসে জমা থাকার পরও ভুমিদস্যুদের গডফাদার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের মহিদুল ইসলামের ছেলে টিপু সুলতান গত ৭ জুন সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী এবং তার সহকারী শেলি খাতুনকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে তাদের আর.এস (ডি.পি) ৬৯০ নং খতিয়ানে অন্য নাম বিসিয়ে জাল পরচা তৈরী করে ৫১১৮ নং একখান পাওয়ার অব এ্যাটর্নী দলিল রেজিষ্ট্রি করতে সমর্থ হয়। রেজিষ্ট্রি অফিসের কর্মচারীদের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে অফিসে না এসে বাসায় কমিশন দলিল করেন।

 

দলিলে সাক্ষর করেন সাবেক মালিক মৃত খোন্দকার কুতুব উদ্দিনের ওয়ারেশ খোন্দকার হাফিজুর রহমান ফারুক, খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, খোন্দকার মুসফিকুর রহমান, কানিজ খোন্দকার ও হোসনেআরা খোন্দকার। জাল জোচ্চুরীর সাথে দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ই জড়িত থাকায় প্রকৃত জমির মালিকরা আদালত ও প্রশাসনের দারস্থ হয়েছে। জাল পরচা তৈরী করে এক জনের জমি অন্যজনের নামে রেজিষ্ট্রি করায় উভয় পক্ষের মধ্যে খুন-খারাপি পর্যায়ে পৌছেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে সাব রেজিষ্ট্রার মৃত্যুঞ্জয় শিকারী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অধস্তন কর্মচারীদের অসর্তকতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। ঝিনাইদহ সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী শেলি খাতুন বলেন, আমার টেবিলেও এই অভিযোগ রাখা আছে। কিন্তু কি ভাবে যে হলো তা আমার বোধগম্য নয়।