শিরোনাম :
Logo ১২০০ আহতকে সেবা দিলেন বাংলাদেশের চিকিৎসকরা Logo নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে কয়েকটি প্রস্তাব Logo সমালোচনা ও আত্মসমালোচনা Logo দীপ্ত টিভির সংবাদ বন্ধ করতে বলেনি সরকার, বললেন তথ্য উপদেষ্টা Logo মাওলানা রইস উদ্দিনের নির্মম হত্যার প্রতিবাদ ও গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানবববন্ধন Logo ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচন নিয়ে যা বললো জামায়াত Logo রাজনৈতিক চাপে জুলাই চার্টার দ্রুত করে নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে সরকার Logo প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে সহজলভ্য ভোটাধিকার প্রস্তাব চায় বিএনপি Logo আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কয়রায় মানববন্ধন Logo ‘নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কথায় আস্থা রাখতে চায় জামায়াত’

জেনে নিন ১০৫ বছর বয়সী ডাক্তারের দীর্ঘায়ুর রহস্য !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১২:২৮:০৩ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২ আগস্ট ২০১৭
  • ৭৩৮ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

জাপানকে দীর্ঘায়ুর দিক দিয়ে বিশ্বে শীর্ষস্থানে নেওয়ার ক্ষেত্রে যার গবেষণা বিশাল ভূমিকা রেখেছে, তিনি হলেন ১০৫ বছর বয়সী ডাঃ শিগেআকি হিনোহারা। মৃত্যুর কিছুদিন আগে পর্যন্তও তিনি কাজ করে গেছেন, রোগী দেখেছেন, ১৮ ঘন্টা কাজ করেছেন প্রতিদিন এবং আগামী ৫ বছর পর্যন্ত রোগী দেখার পরিকল্পনা করে গেছেন। তিনি অবসর নেওয়াতে বিশ্বাসী ছিলেন না। কাজে বিশ্বাসী ছিলেন।

জাপানিজ টাইমসে তার শিষ্য জুডিট কাওয়াগুচিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি পরামর্শ দেন, “অবসরে যাবেন না। আর গেলেও ৬৫ বছর বয়সের অনেক পরে যান। ”

কাওয়াগুচি জানান, ডাঃ হিনোহারার এই দীর্ঘায়ুর রহস্য হলো সমাজে অবদান রাখা এবং মানুষকে সাহায্য করতে পারা। ডাঃ হিনোহারা মানুষকে সাহায্য করার ব্যাপারে খুবই উৎসাহী ছিলেন। খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতেন তিনি অন্যদের উপকারে দারুণ কিছু করার ইচ্ছে নিয়ে।

সাক্ষাৎকারে হিনোহারা বলেন, যখন জাপানের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৬৮ বছর, তখনই তাদের অবসরে যাবার বয়স ছিল ৬৫ বছর। ২০১৫ সাল নাগাদ জাপানের মানুষের গড় আয়ু দাঁড়িয়েছে ৮৪ বছরে। সেক্ষেত্রে ৬৫ বছর বয়সে অবসরে যাবার আসলে দরকার নেই।

১৯৫০ এর দশকে হিনোহারা “হিউম্যান ড্রাই-ডক” নামের বার্ষিক চিকিৎসা সেবার এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন যা এদেশের মানুষের আয়ু বাড়তে সাহায্য করে। বর্তমানে জাপানের নারীরা ৮৭ বছর এবং পুরুষেরা ৮০ বছর পর্যন্ত বাঁচার আশা করতে পারে। স্ট্রোক এবং হৃদরোগের মাঝে জীবনযাত্রার সংযোগ খুঁজে পেতেও তিনি সাহায্য করেন। তিনি মনে করতেন, সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য একজন রোগীকে জানা খুবই জরুরী।

হ্যাঁ, দীর্ঘ আয়ু পেতে হলে কাজ করে যেতে হবে। কিন্তু এর পাশাপাশি আরো কিছু কাজ আপনাকে সাহায্য করবে এক্ষেত্রে, জানান হিনোহারা। এগুলো হলো-

১. আনন্দে থাকুন

খুব বেশি নিয়ম মেনে চলতে হবে না, জীবনকে উপভোগ করুন। অনেকেই খাওয়া, ঘুম নিয়ে খুব চিন্তিত থাকেন। এসব নিয়ে বেশি চিন্তা করতে তিনি মানা করেন।

২. ওজন বেশি বাড়তে দেবেন না

হিনোহারা নিজে খুব সাধারণ খাবার খেতেন। ওজন সবসময় ১৩০ পাউন্ডে স্থির রাখার চেষ্টা করতেন। তার ব্রেকফাস্ট ছিল কফি, এক গ্লাস দুধ এবং এক টেবিলচামচ অলিভ অয়েলের সাথে একটু অরেঞ্জ জুস। তার আর্টারি এবং ত্বক সুস্থ রাখে অলিভ অয়েল- এমনটা মনে করতেন তিনি। লাঞ্চে খেতেন কিছু কুকি এবং দুধ। কাজের চাপ থাকলে লাঞ্চ বাদই দিতেন কখনো কখনী। আর ডিনারে খেতেন সবজি, ভাত ও মাছ। সপ্তাহে দুই বার খেতেন চর্বি ছাড়া মাংস।

৩.সঙ্গীত এবং পোষা প্রাণী আপনার জন্য ভালো

“সঙ্গীত এবং পোষা প্রাণীর দেওয়া থেরাপি যে কত ভালো কাজ করতে পারে তা অনেক ডাক্তাররা কল্পনাও করতে পারেন না,“ বলেন হিনোহারা।

৪. কষ্ট কমায় আনন্দ

“ব্যথা বা কষ্ট খুবই রহস্যময়, এবং জীবন উপভোগ করাটা হলো কষ্টকে ভুলে থাকার সবচাইতে ভালো উপায়”। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, একটি শিশুর যদি দাঁতে ব্যথা হয়, তাকে নিয়ে খেলা শুরু করলে সে দ্রুতই ব্যথার কথা ভুলে যায়। এ ব্যাপারটা হাসপাতালগুলোর ব্যবহার করা দরকার।

৫. সিঁড়ি ভাঙ্গুন এবং নিজের জিনিস নিজে বহন করুন

শারীরিক শ্রমের কোনো বিকল্প নেই। হিনোহারা সবসময় দুইটি করে সিঁড়ি ভাংতেন যাতে তার পেশীগুলো সক্রিয় থাকে। একটি লাঠির সাহায্যে তিনি দিনে ২ হাজার বা তারও বেশি কদম হাঁটতেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

১২০০ আহতকে সেবা দিলেন বাংলাদেশের চিকিৎসকরা

জেনে নিন ১০৫ বছর বয়সী ডাক্তারের দীর্ঘায়ুর রহস্য !

আপডেট সময় : ১২:২৮:০৩ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২ আগস্ট ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

জাপানকে দীর্ঘায়ুর দিক দিয়ে বিশ্বে শীর্ষস্থানে নেওয়ার ক্ষেত্রে যার গবেষণা বিশাল ভূমিকা রেখেছে, তিনি হলেন ১০৫ বছর বয়সী ডাঃ শিগেআকি হিনোহারা। মৃত্যুর কিছুদিন আগে পর্যন্তও তিনি কাজ করে গেছেন, রোগী দেখেছেন, ১৮ ঘন্টা কাজ করেছেন প্রতিদিন এবং আগামী ৫ বছর পর্যন্ত রোগী দেখার পরিকল্পনা করে গেছেন। তিনি অবসর নেওয়াতে বিশ্বাসী ছিলেন না। কাজে বিশ্বাসী ছিলেন।

জাপানিজ টাইমসে তার শিষ্য জুডিট কাওয়াগুচিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি পরামর্শ দেন, “অবসরে যাবেন না। আর গেলেও ৬৫ বছর বয়সের অনেক পরে যান। ”

কাওয়াগুচি জানান, ডাঃ হিনোহারার এই দীর্ঘায়ুর রহস্য হলো সমাজে অবদান রাখা এবং মানুষকে সাহায্য করতে পারা। ডাঃ হিনোহারা মানুষকে সাহায্য করার ব্যাপারে খুবই উৎসাহী ছিলেন। খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতেন তিনি অন্যদের উপকারে দারুণ কিছু করার ইচ্ছে নিয়ে।

সাক্ষাৎকারে হিনোহারা বলেন, যখন জাপানের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৬৮ বছর, তখনই তাদের অবসরে যাবার বয়স ছিল ৬৫ বছর। ২০১৫ সাল নাগাদ জাপানের মানুষের গড় আয়ু দাঁড়িয়েছে ৮৪ বছরে। সেক্ষেত্রে ৬৫ বছর বয়সে অবসরে যাবার আসলে দরকার নেই।

১৯৫০ এর দশকে হিনোহারা “হিউম্যান ড্রাই-ডক” নামের বার্ষিক চিকিৎসা সেবার এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন যা এদেশের মানুষের আয়ু বাড়তে সাহায্য করে। বর্তমানে জাপানের নারীরা ৮৭ বছর এবং পুরুষেরা ৮০ বছর পর্যন্ত বাঁচার আশা করতে পারে। স্ট্রোক এবং হৃদরোগের মাঝে জীবনযাত্রার সংযোগ খুঁজে পেতেও তিনি সাহায্য করেন। তিনি মনে করতেন, সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য একজন রোগীকে জানা খুবই জরুরী।

হ্যাঁ, দীর্ঘ আয়ু পেতে হলে কাজ করে যেতে হবে। কিন্তু এর পাশাপাশি আরো কিছু কাজ আপনাকে সাহায্য করবে এক্ষেত্রে, জানান হিনোহারা। এগুলো হলো-

১. আনন্দে থাকুন

খুব বেশি নিয়ম মেনে চলতে হবে না, জীবনকে উপভোগ করুন। অনেকেই খাওয়া, ঘুম নিয়ে খুব চিন্তিত থাকেন। এসব নিয়ে বেশি চিন্তা করতে তিনি মানা করেন।

২. ওজন বেশি বাড়তে দেবেন না

হিনোহারা নিজে খুব সাধারণ খাবার খেতেন। ওজন সবসময় ১৩০ পাউন্ডে স্থির রাখার চেষ্টা করতেন। তার ব্রেকফাস্ট ছিল কফি, এক গ্লাস দুধ এবং এক টেবিলচামচ অলিভ অয়েলের সাথে একটু অরেঞ্জ জুস। তার আর্টারি এবং ত্বক সুস্থ রাখে অলিভ অয়েল- এমনটা মনে করতেন তিনি। লাঞ্চে খেতেন কিছু কুকি এবং দুধ। কাজের চাপ থাকলে লাঞ্চ বাদই দিতেন কখনো কখনী। আর ডিনারে খেতেন সবজি, ভাত ও মাছ। সপ্তাহে দুই বার খেতেন চর্বি ছাড়া মাংস।

৩.সঙ্গীত এবং পোষা প্রাণী আপনার জন্য ভালো

“সঙ্গীত এবং পোষা প্রাণীর দেওয়া থেরাপি যে কত ভালো কাজ করতে পারে তা অনেক ডাক্তাররা কল্পনাও করতে পারেন না,“ বলেন হিনোহারা।

৪. কষ্ট কমায় আনন্দ

“ব্যথা বা কষ্ট খুবই রহস্যময়, এবং জীবন উপভোগ করাটা হলো কষ্টকে ভুলে থাকার সবচাইতে ভালো উপায়”। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, একটি শিশুর যদি দাঁতে ব্যথা হয়, তাকে নিয়ে খেলা শুরু করলে সে দ্রুতই ব্যথার কথা ভুলে যায়। এ ব্যাপারটা হাসপাতালগুলোর ব্যবহার করা দরকার।

৫. সিঁড়ি ভাঙ্গুন এবং নিজের জিনিস নিজে বহন করুন

শারীরিক শ্রমের কোনো বিকল্প নেই। হিনোহারা সবসময় দুইটি করে সিঁড়ি ভাংতেন যাতে তার পেশীগুলো সক্রিয় থাকে। একটি লাঠির সাহায্যে তিনি দিনে ২ হাজার বা তারও বেশি কদম হাঁটতেন।