শিরোনাম :
Logo সবচেয়ে টেকসই টেলিকম কোম্পানির স্বীকৃতি পেল গ্রামীণফোন Logo বর্ষায় মসলা সংরক্ষণের ৫ উপায় Logo ৫ আগস্ট বন্ধ থাকবে ব্যাংক Logo ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরে মিলল শিক্ষার্থীর মরদেহ Logo সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ Logo অর্থের বিনিময়ে পলাশবাড়ীর খাদ্যবান্ধব ডিলার নিয়োগ দিয়ে লাপাত্তা টিসিএফ Logo ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু; শিক্ষার্থীরা রাবি মেডিকেলের নাম দিল নাপা সেন্টার Logo জাতির উন্নতির জন্য জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন – মির্জা গালিব Logo গোপালগঞ্জে চলমান কারফিউ’র মেয়াদ বাড়লো Logo লেডি দেহলভী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক সভা মাদক সমাজ ও জাতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয় ………….সাখাওয়াত জামিল সৈকত

একটি অভিব্যক্তি মাধ্যমের অপমৃত্যু !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০২:০২:৩৬ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭
  • ৭৫৬ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সালটা ২০০২ কিংবা ২০০৩ হবে। বিশ্ব ভালবাসা দিবস সামনে রেখে গ্রামীনফোন নামকরা একটি দৈনিকে অর্ধপাতা জুড়ে একটি বিজ্ঞাপন দেয়। সেই প্রথম জানলাম মোবাইল থেকে পাঠানো যাবে ‘যান্ত্রিক চিঠি’-এসএমএস। তবে এখনকার বাজার দর চিন্তা করলে সে আমলে এসএমএস এর চড়ামূল্য নিয়ে আন্দোলন ও হতে পারত। ২ টাকা ৩০ পয়সা/ এসএমএস(ভ্যাটসহ)! তবে পালসবিহীন ৬ টাকা ৯০ পয়সা(ভ্যাটসহ) কলরেটের যুগে সেটা এক স্বস্তির বিষয় ছিল বৈ কি! তবে, শুরুর দিকে এসএমএস এর প্রতি যে খানিক জড়তা মোবাইল ব্যবহারকারীদের ছিল, তা দূর হল জাতীয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনের ফ্রি এসএমএসের কল্যাণে। সে সময়কার ছাত্র আমরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম এসএমএস মিছিলে। এরপর হয়ে গেল অভ্যাস! ফ্রি ট্রি আর লাগলো না। ওই ২ টাকা ৩০ পয়সা খরচেই চলতে থাকলো এসএমএস।

ক্লাসে বসে লুকিয়ে আড্ডা, ব্যস্ততার কথা জানানো, বিভিন্ন উৎসবের গ্রিটিং, ঝগড়ার পরে অভিব্যক্তি প্রকাশ, হৃদয়ের কথা এমনকি বাজারের ফর্দ… কি না হতো এসএমএস এর মাধ্যমে? অনেক সম্পর্ক ভাঙ্গাগড়ার গল্প জানতো এই এসএমএস। সুখেই ছিলাম আমরা এসএমএস নিয়ে। ওটাই তখন লেটেস্ট প্রযুক্তি। আর ইন্টারনেট লেখা আইকনটা চোখে পড়লেই ওটাকে এড়িয়ে যেতাম আর ভাবতাম ‘ওটা বিদেশের মানুষের জন্য’।

সময়ের চাকা ঘুরতে লাগল। আলো জ্বাললো ইন্টারনেট। যোগাযোগের মাধ্যমটা হয়ে গেল সহজ, কিন্তু এলোমোলো। এখন দশ ধরনের সোশ্যাল মাধ্যমে ২০ ধরনের অ্যাকাউন্ট নিয়ে কনফিউশন স্টেটে চলতে লাগলো আমাদের যোগাযোগ।

আর এসএমএস? sad dog এর মত পড়ে রইল মোবাইলের এক কোনায়। মুখ লুকিয়ে!


এমনিতেই এসএমএসের ব্যবহার হয়েছে সীমিত, তার ওপর শুরু হয়েছে নতুন নির্যাতন। আমার যত্নে রাখা ইনবক্স এখন আর আমার নেই। হানা দিয়েছে অফার, ডিসকাউন্ট আর প্রমোশনাল মেসেজ। অপারেটরগুলো আর বিভিন্ন কোম্পানির বাল্ক মেসেজ এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এখন এসএমএস এর নোটিফিকেশন আসলেই মনে হয় কোনো অফার এলো মনে হয়। আর খোলা হয় না ইনবক্স। মাঝে তো এমনও হয়েছে, একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এর মেসেজ দেখেছি সেটা চলে যাবার ১দিন পর!

এসএমএস পাঠিয়ে এখন আর আস্বস্ত হওয়া যায় না, যে প্রাপক তা পড়লেন কিনা। আর তাই তো, এসএমএস হারিয়েছে তার অতীত জৌলুস, আড়াই টাকার এক এসএমএস এখন বিক্রি হয় ঝুড়ি ভর্তি করে। ২০০ এসএমএস ৫ টাকা! সেটাও জানানো হয় এসএমএস দিয়েই।

অফলাইনে এসএমএসের চেয়ে মধুর যোগাযোগ আর ছিল না বলেই ধারণা আমার। তবে অপ্রয়োজনীয় এসএমএস এর দাপট অপমৃত্যু ঘটিয়েছে সুন্দর এ মাধ্যমটির। কে জানে আবার কোনেদিন সকালে উঠে দেখতে পারব কিনা ‘আমার অফারে’ ( যা আমি স্বপ্নেও চাই নি)  ‘আমার ইনবক্স’ (যা আসলে অপারেটর আর কোম্পানিদের দখলে) ভর্তি নেই। বরং, কোনো প্রিয়জনের ‘শুভ সকাল’ লেখা খুদে বার্তা আলো ছড়াচ্ছে ইনবক্সে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সবচেয়ে টেকসই টেলিকম কোম্পানির স্বীকৃতি পেল গ্রামীণফোন

একটি অভিব্যক্তি মাধ্যমের অপমৃত্যু !

আপডেট সময় : ০২:০২:৩৬ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সালটা ২০০২ কিংবা ২০০৩ হবে। বিশ্ব ভালবাসা দিবস সামনে রেখে গ্রামীনফোন নামকরা একটি দৈনিকে অর্ধপাতা জুড়ে একটি বিজ্ঞাপন দেয়। সেই প্রথম জানলাম মোবাইল থেকে পাঠানো যাবে ‘যান্ত্রিক চিঠি’-এসএমএস। তবে এখনকার বাজার দর চিন্তা করলে সে আমলে এসএমএস এর চড়ামূল্য নিয়ে আন্দোলন ও হতে পারত। ২ টাকা ৩০ পয়সা/ এসএমএস(ভ্যাটসহ)! তবে পালসবিহীন ৬ টাকা ৯০ পয়সা(ভ্যাটসহ) কলরেটের যুগে সেটা এক স্বস্তির বিষয় ছিল বৈ কি! তবে, শুরুর দিকে এসএমএস এর প্রতি যে খানিক জড়তা মোবাইল ব্যবহারকারীদের ছিল, তা দূর হল জাতীয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনের ফ্রি এসএমএসের কল্যাণে। সে সময়কার ছাত্র আমরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম এসএমএস মিছিলে। এরপর হয়ে গেল অভ্যাস! ফ্রি ট্রি আর লাগলো না। ওই ২ টাকা ৩০ পয়সা খরচেই চলতে থাকলো এসএমএস।

ক্লাসে বসে লুকিয়ে আড্ডা, ব্যস্ততার কথা জানানো, বিভিন্ন উৎসবের গ্রিটিং, ঝগড়ার পরে অভিব্যক্তি প্রকাশ, হৃদয়ের কথা এমনকি বাজারের ফর্দ… কি না হতো এসএমএস এর মাধ্যমে? অনেক সম্পর্ক ভাঙ্গাগড়ার গল্প জানতো এই এসএমএস। সুখেই ছিলাম আমরা এসএমএস নিয়ে। ওটাই তখন লেটেস্ট প্রযুক্তি। আর ইন্টারনেট লেখা আইকনটা চোখে পড়লেই ওটাকে এড়িয়ে যেতাম আর ভাবতাম ‘ওটা বিদেশের মানুষের জন্য’।

সময়ের চাকা ঘুরতে লাগল। আলো জ্বাললো ইন্টারনেট। যোগাযোগের মাধ্যমটা হয়ে গেল সহজ, কিন্তু এলোমোলো। এখন দশ ধরনের সোশ্যাল মাধ্যমে ২০ ধরনের অ্যাকাউন্ট নিয়ে কনফিউশন স্টেটে চলতে লাগলো আমাদের যোগাযোগ।

আর এসএমএস? sad dog এর মত পড়ে রইল মোবাইলের এক কোনায়। মুখ লুকিয়ে!


এমনিতেই এসএমএসের ব্যবহার হয়েছে সীমিত, তার ওপর শুরু হয়েছে নতুন নির্যাতন। আমার যত্নে রাখা ইনবক্স এখন আর আমার নেই। হানা দিয়েছে অফার, ডিসকাউন্ট আর প্রমোশনাল মেসেজ। অপারেটরগুলো আর বিভিন্ন কোম্পানির বাল্ক মেসেজ এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এখন এসএমএস এর নোটিফিকেশন আসলেই মনে হয় কোনো অফার এলো মনে হয়। আর খোলা হয় না ইনবক্স। মাঝে তো এমনও হয়েছে, একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এর মেসেজ দেখেছি সেটা চলে যাবার ১দিন পর!

এসএমএস পাঠিয়ে এখন আর আস্বস্ত হওয়া যায় না, যে প্রাপক তা পড়লেন কিনা। আর তাই তো, এসএমএস হারিয়েছে তার অতীত জৌলুস, আড়াই টাকার এক এসএমএস এখন বিক্রি হয় ঝুড়ি ভর্তি করে। ২০০ এসএমএস ৫ টাকা! সেটাও জানানো হয় এসএমএস দিয়েই।

অফলাইনে এসএমএসের চেয়ে মধুর যোগাযোগ আর ছিল না বলেই ধারণা আমার। তবে অপ্রয়োজনীয় এসএমএস এর দাপট অপমৃত্যু ঘটিয়েছে সুন্দর এ মাধ্যমটির। কে জানে আবার কোনেদিন সকালে উঠে দেখতে পারব কিনা ‘আমার অফারে’ ( যা আমি স্বপ্নেও চাই নি)  ‘আমার ইনবক্স’ (যা আসলে অপারেটর আর কোম্পানিদের দখলে) ভর্তি নেই। বরং, কোনো প্রিয়জনের ‘শুভ সকাল’ লেখা খুদে বার্তা আলো ছড়াচ্ছে ইনবক্সে।