শিরোনাম :
Logo মুমিনুল চান তিনশ’র লিড, দুইশ’তে আটকাতে চায় জিম্বাবুয়ে Logo স্বর্ণের দামে সব রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস Logo দুবাইয়ে বিগ টিকিট লটারি জিতে লাখপতি দুই বাংলাদেশি Logo বাবা হলেন যুক্তরাষ্ট্রে আটক খলিল, দেখতে পারলেন না সদ্যোজাত সন্তানের মুখ Logo এটিএম আজহার মুক্তি না পাওয়ায় আমরা ব্যথিত, তবে হতাশ নই Logo আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ ৩ বিচারপতি থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পক্ষে বিএনপি Logo ধর্ম নিরপেক্ষতা বিলুপ্তে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একমত বিএনপি Logo হঠাৎ বৃষ্টিতে চাঁদপুর শহরের মুসলিম কবরস্থান রোড এলাকা সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী Logo ইনসাফের আকাঙ্ক্ষা থেকেই চব্বিশের লড়াই:ব্যারিস্টার ফুয়াদ Logo ইবিতে বিভাগের নাম পরিবর্তসহ দুই দফা দাবিতে প্রশাসন ভবন অবরোধ

একটি অভিব্যক্তি মাধ্যমের অপমৃত্যু !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০২:০২:৩৬ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭
  • ৭৪৭ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সালটা ২০০২ কিংবা ২০০৩ হবে। বিশ্ব ভালবাসা দিবস সামনে রেখে গ্রামীনফোন নামকরা একটি দৈনিকে অর্ধপাতা জুড়ে একটি বিজ্ঞাপন দেয়। সেই প্রথম জানলাম মোবাইল থেকে পাঠানো যাবে ‘যান্ত্রিক চিঠি’-এসএমএস। তবে এখনকার বাজার দর চিন্তা করলে সে আমলে এসএমএস এর চড়ামূল্য নিয়ে আন্দোলন ও হতে পারত। ২ টাকা ৩০ পয়সা/ এসএমএস(ভ্যাটসহ)! তবে পালসবিহীন ৬ টাকা ৯০ পয়সা(ভ্যাটসহ) কলরেটের যুগে সেটা এক স্বস্তির বিষয় ছিল বৈ কি! তবে, শুরুর দিকে এসএমএস এর প্রতি যে খানিক জড়তা মোবাইল ব্যবহারকারীদের ছিল, তা দূর হল জাতীয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনের ফ্রি এসএমএসের কল্যাণে। সে সময়কার ছাত্র আমরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম এসএমএস মিছিলে। এরপর হয়ে গেল অভ্যাস! ফ্রি ট্রি আর লাগলো না। ওই ২ টাকা ৩০ পয়সা খরচেই চলতে থাকলো এসএমএস।

ক্লাসে বসে লুকিয়ে আড্ডা, ব্যস্ততার কথা জানানো, বিভিন্ন উৎসবের গ্রিটিং, ঝগড়ার পরে অভিব্যক্তি প্রকাশ, হৃদয়ের কথা এমনকি বাজারের ফর্দ… কি না হতো এসএমএস এর মাধ্যমে? অনেক সম্পর্ক ভাঙ্গাগড়ার গল্প জানতো এই এসএমএস। সুখেই ছিলাম আমরা এসএমএস নিয়ে। ওটাই তখন লেটেস্ট প্রযুক্তি। আর ইন্টারনেট লেখা আইকনটা চোখে পড়লেই ওটাকে এড়িয়ে যেতাম আর ভাবতাম ‘ওটা বিদেশের মানুষের জন্য’।

সময়ের চাকা ঘুরতে লাগল। আলো জ্বাললো ইন্টারনেট। যোগাযোগের মাধ্যমটা হয়ে গেল সহজ, কিন্তু এলোমোলো। এখন দশ ধরনের সোশ্যাল মাধ্যমে ২০ ধরনের অ্যাকাউন্ট নিয়ে কনফিউশন স্টেটে চলতে লাগলো আমাদের যোগাযোগ।

আর এসএমএস? sad dog এর মত পড়ে রইল মোবাইলের এক কোনায়। মুখ লুকিয়ে!


এমনিতেই এসএমএসের ব্যবহার হয়েছে সীমিত, তার ওপর শুরু হয়েছে নতুন নির্যাতন। আমার যত্নে রাখা ইনবক্স এখন আর আমার নেই। হানা দিয়েছে অফার, ডিসকাউন্ট আর প্রমোশনাল মেসেজ। অপারেটরগুলো আর বিভিন্ন কোম্পানির বাল্ক মেসেজ এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এখন এসএমএস এর নোটিফিকেশন আসলেই মনে হয় কোনো অফার এলো মনে হয়। আর খোলা হয় না ইনবক্স। মাঝে তো এমনও হয়েছে, একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এর মেসেজ দেখেছি সেটা চলে যাবার ১দিন পর!

এসএমএস পাঠিয়ে এখন আর আস্বস্ত হওয়া যায় না, যে প্রাপক তা পড়লেন কিনা। আর তাই তো, এসএমএস হারিয়েছে তার অতীত জৌলুস, আড়াই টাকার এক এসএমএস এখন বিক্রি হয় ঝুড়ি ভর্তি করে। ২০০ এসএমএস ৫ টাকা! সেটাও জানানো হয় এসএমএস দিয়েই।

অফলাইনে এসএমএসের চেয়ে মধুর যোগাযোগ আর ছিল না বলেই ধারণা আমার। তবে অপ্রয়োজনীয় এসএমএস এর দাপট অপমৃত্যু ঘটিয়েছে সুন্দর এ মাধ্যমটির। কে জানে আবার কোনেদিন সকালে উঠে দেখতে পারব কিনা ‘আমার অফারে’ ( যা আমি স্বপ্নেও চাই নি)  ‘আমার ইনবক্স’ (যা আসলে অপারেটর আর কোম্পানিদের দখলে) ভর্তি নেই। বরং, কোনো প্রিয়জনের ‘শুভ সকাল’ লেখা খুদে বার্তা আলো ছড়াচ্ছে ইনবক্সে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মুমিনুল চান তিনশ’র লিড, দুইশ’তে আটকাতে চায় জিম্বাবুয়ে

একটি অভিব্যক্তি মাধ্যমের অপমৃত্যু !

আপডেট সময় : ০২:০২:৩৬ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সালটা ২০০২ কিংবা ২০০৩ হবে। বিশ্ব ভালবাসা দিবস সামনে রেখে গ্রামীনফোন নামকরা একটি দৈনিকে অর্ধপাতা জুড়ে একটি বিজ্ঞাপন দেয়। সেই প্রথম জানলাম মোবাইল থেকে পাঠানো যাবে ‘যান্ত্রিক চিঠি’-এসএমএস। তবে এখনকার বাজার দর চিন্তা করলে সে আমলে এসএমএস এর চড়ামূল্য নিয়ে আন্দোলন ও হতে পারত। ২ টাকা ৩০ পয়সা/ এসএমএস(ভ্যাটসহ)! তবে পালসবিহীন ৬ টাকা ৯০ পয়সা(ভ্যাটসহ) কলরেটের যুগে সেটা এক স্বস্তির বিষয় ছিল বৈ কি! তবে, শুরুর দিকে এসএমএস এর প্রতি যে খানিক জড়তা মোবাইল ব্যবহারকারীদের ছিল, তা দূর হল জাতীয় দিবস উপলক্ষে তিন দিনের ফ্রি এসএমএসের কল্যাণে। সে সময়কার ছাত্র আমরা ঝাঁপিয়ে পড়লাম এসএমএস মিছিলে। এরপর হয়ে গেল অভ্যাস! ফ্রি ট্রি আর লাগলো না। ওই ২ টাকা ৩০ পয়সা খরচেই চলতে থাকলো এসএমএস।

ক্লাসে বসে লুকিয়ে আড্ডা, ব্যস্ততার কথা জানানো, বিভিন্ন উৎসবের গ্রিটিং, ঝগড়ার পরে অভিব্যক্তি প্রকাশ, হৃদয়ের কথা এমনকি বাজারের ফর্দ… কি না হতো এসএমএস এর মাধ্যমে? অনেক সম্পর্ক ভাঙ্গাগড়ার গল্প জানতো এই এসএমএস। সুখেই ছিলাম আমরা এসএমএস নিয়ে। ওটাই তখন লেটেস্ট প্রযুক্তি। আর ইন্টারনেট লেখা আইকনটা চোখে পড়লেই ওটাকে এড়িয়ে যেতাম আর ভাবতাম ‘ওটা বিদেশের মানুষের জন্য’।

সময়ের চাকা ঘুরতে লাগল। আলো জ্বাললো ইন্টারনেট। যোগাযোগের মাধ্যমটা হয়ে গেল সহজ, কিন্তু এলোমোলো। এখন দশ ধরনের সোশ্যাল মাধ্যমে ২০ ধরনের অ্যাকাউন্ট নিয়ে কনফিউশন স্টেটে চলতে লাগলো আমাদের যোগাযোগ।

আর এসএমএস? sad dog এর মত পড়ে রইল মোবাইলের এক কোনায়। মুখ লুকিয়ে!


এমনিতেই এসএমএসের ব্যবহার হয়েছে সীমিত, তার ওপর শুরু হয়েছে নতুন নির্যাতন। আমার যত্নে রাখা ইনবক্স এখন আর আমার নেই। হানা দিয়েছে অফার, ডিসকাউন্ট আর প্রমোশনাল মেসেজ। অপারেটরগুলো আর বিভিন্ন কোম্পানির বাল্ক মেসেজ এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এখন এসএমএস এর নোটিফিকেশন আসলেই মনে হয় কোনো অফার এলো মনে হয়। আর খোলা হয় না ইনবক্স। মাঝে তো এমনও হয়েছে, একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এর মেসেজ দেখেছি সেটা চলে যাবার ১দিন পর!

এসএমএস পাঠিয়ে এখন আর আস্বস্ত হওয়া যায় না, যে প্রাপক তা পড়লেন কিনা। আর তাই তো, এসএমএস হারিয়েছে তার অতীত জৌলুস, আড়াই টাকার এক এসএমএস এখন বিক্রি হয় ঝুড়ি ভর্তি করে। ২০০ এসএমএস ৫ টাকা! সেটাও জানানো হয় এসএমএস দিয়েই।

অফলাইনে এসএমএসের চেয়ে মধুর যোগাযোগ আর ছিল না বলেই ধারণা আমার। তবে অপ্রয়োজনীয় এসএমএস এর দাপট অপমৃত্যু ঘটিয়েছে সুন্দর এ মাধ্যমটির। কে জানে আবার কোনেদিন সকালে উঠে দেখতে পারব কিনা ‘আমার অফারে’ ( যা আমি স্বপ্নেও চাই নি)  ‘আমার ইনবক্স’ (যা আসলে অপারেটর আর কোম্পানিদের দখলে) ভর্তি নেই। বরং, কোনো প্রিয়জনের ‘শুভ সকাল’ লেখা খুদে বার্তা আলো ছড়াচ্ছে ইনবক্সে।