নিউজ ডেস্ক:
পাঁচদিনের রিহ্যাব মেলা আজ রোববার শেষ হয়েছে। আবাসন সেক্টরের সবচেয়ে বড় এ মেলা রাজধানীবাসীর আবাসন প্রত্যাশা পুরোপুরি মেটাতে না পারলেও আবাসন কোম্পানি ও আবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে সেতু বন্ধন রচনা করতে পেরেছে বলে মনে করেন রিহ্যাব নেতৃবৃন্দ। একই সাথে আবাসনের খোঁজে আসা মানুষ মনে করেন, এ মেলা তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনেকটা সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। একটি জায়গায় অনেক কোম্পানিকে এক সাথে পাওয়া গেছে এবং পছন্দ মতো কোম্পানির কাছে যাওয়া সম্ভব হয়েছে এ মেলার কারণে। মেলা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।
রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, আবাসনে বিনিয়োগ করতে মানুষের আগ্রহ কখনো কম ছিল না। বিনিয়োগের পরিবেশ পেলে তারা আবাসনে বিনিয়োগটাকে প্রথম পছন্দ হিসেবে নিয়ে থাকেন। মাঝখানে বেশ কয়েক বছর বেশ স্থবির ছিল এ খাত। এ অবস্থা ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে। মেলায় লোক সমাগম দেখে এটাই মনে হলো।
আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ রাতে নির্ধারিত সময়ের পরেও দর্শক-ক্রেতারা ব্যস্ত ছিলেন নিজের জন্য আবাসন খুঁজতে। একদিকে স্টলগুলো গুটানো হচ্ছিল অন্যদিকে স্টলের লোকজন কথা বলছিলেন দর্শক-ক্রেতাদের সাথে। শেষ দিন বলেই ভীড় ছিল গুটানোর মুহূর্ত পর্যন্ত।
রিহ্যাবের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবারো বেশির ভাগ স্টলে বুকিং হয়েছে। দর্শক-ক্রেতার ভীড়ও অন্যান্য বছরের চেয়ে কম ছিল না। তবে কতগুলো স্টলে বুকিং এবং কয়টি প্লট/ফ্ল্যাট বুকিং হয়েছে তা আজ সন্ধ্যার পরও বলতে পারেননি রিহ্যাব নেতৃবৃন্দ। মেলায় অনেক বেশি দর্শক-ক্রেতার উপস্থিতি থাকায় মেলা থেকে তথ্যগুলো পাওয়া সম্ভব ছিল না বলে জানান তারা। পরে সবার তথ্য একত্রিত করে জানানো হবে বলে জানালেন রিহ্যাব নেতৃবৃন্দ।
ফারুকুল ইসলাম একজন ব্যবসায়ী প্রথমবারের মতো রিহ্যাব মেলায় এসেছেন। সুন্দর দেখে ফ্ল্যাট বাছাই করতে চান। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে চাহিদা ও সরবরাহকে সামনে রেখে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলে আবাসন সেক্টরে সমন্বিত একটি কাঠামো তৈরি করা যেতে পারে। তাহলে আবাসন সেক্টর লাভবান হবে। আবাসন সেক্টরকে আলাদা করে দেখার কোনো বিষয় নয়।
তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে আবাসন সেক্টরে আরো বেশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। দরিদ্র মানুষ এখানে কাজ করেন বলে আবাসন সেক্টর দারিদ্র্য দুরীকরণে অনেক বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে। এ শিল্পের প্রতি নজর দিলে এটা দেশের অর্থনীতি বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে। এজন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।
বাহ্যিকভাবে দেখলে মনে হবে দেশটা বেশ শান্ত। হরতাল নেই, জ্বালাও-পোড়াও নেই, নেই ভাঙচুর। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হওয়ার কথা। কিন্তু মানুষের কাছে টাকা থাকা সত্বেও আস্থাহীনতায় তারা বিনিয়োগ ভরসা পাচ্ছে না। এখানে রাজনীতির হাত রয়েছে। তার মতে, রাজনীতির সুস্থ পরিবেশ নেই। যখন হরতাল-অবরোধ ও জ্বালাও-পোড়াও ছিল তখন ব্যবসায়ের পরিবেশ এতো খারাপ ছিল না। সামনে একটি ভালো নির্বাচন হলে, জনগণের সমর্থনে একটি সরকার ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য অবশ্যই আরো ভালো হবে।
ফারুকুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকে তারল্যের অভাব নেই। কিন্তু ব্যাংক বিনিয়োগ করার জায়গা পাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে। এগুলো শুধু শুধু ব্যাংকে রেখে দিয়ে লাভ নেই। বিনিয়োগ কার উচিৎ। বিনিয়োগ করতে পারলেই তা লাভসহ ফিরে আসবে। কিন্তু স্মার্টলি বিনিয়োগ হচ্ছে না।
তিনি বলেন, বেসরকারি ব্যাংকে সুদ হারে যে ভিন্নতা রয়েছে আন্তর্জাতিক মার্কেটে তা নেই। আমাদের দেশে দরিদ্রদের সুদ হার বেশি। অপরদিকে ধনীদের থাকে গ্রেস পিরিয়ড। এ প্রবণতা দুর করে সবার জন্য সমান সুদ হার নির্ধারণ করতে হবে।