শিরোনাম :
Logo চুয়াডাঙ্গায় বিয়ের খবর শুনে প্রেমিকের বাড়িতে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক তরুণীর অবস্থান, ঘটনাস্থলে পুলিশ Logo বিএসএফের হাতে আটক বাংলাদেশী কিশোরকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির নিকট হস্তান্তর Logo ব্যানসন গ্ৰুপের কোনো ঘরবাড়ি থাকবে না; রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাহী Logo নতুন পোপ নির্বাচিত হবে যেভাবে Logo শুল্কযুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রকে যে বার্তা দিলো চীন Logo পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক Logo পারভেজ হত্যার বিচারের দাবিতে ইবি ছাত্রদলের মানববন্ধন Logo পঞ্চগড়ে ট্রাক মেরামতের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মেকানিক নিহত, আহত সহকারী Logo সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চাঁদপুর সওজ বিভাগ Logo জাবিতে বটতলাসহ ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো ওয়াশরুম স্থাপনের দাবি লাল সবুজের

যেখানে মৃতদের সঙ্গে জীবিতদের বসবাস !

  • আপডেট সময় : ০২:০৭:১৪ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৭
  • ৭৪৪ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

শিরোনামটা দেখে হয়তো চোখ ছানাবোড়া হতে পারে! কারণ পৃথিবীর অনেক সংস্কৃতি বা ধর্মেই মৃত্যুকে মনে করা হয় শুধুমাত্র শারীরিক বিনাশ। যা এই জগতের শেষ, তবে অন্য আরেক জগতের শুরু। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার একটি অঞ্চলে বিষয়টি একটু আলাদা। সেখানে একজনের মৃত্যু হলেও, তার শেষকৃত্য হতে অনেক সময় লেগে যায়। মৃতদের নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিও ভিন্ন।

একটি ভিডিও তে দেখা যায়, বসার কক্ষে পরিবারের সদস্যরা বসে কফি খাচ্ছেন। সবাই খু্ব হাসিখুশি, আর এরই পাশের কক্ষের বিছানায় একজন শুয়ে আছেন। তিনি কোন নড়াচড়া করছেন না। তার ধুসর বর্ণের মুখে ছোট ছোট অনেক দাগ, যেন পোকা মাকড় কামড় দিয়েছে। শরীরে অনেক কাপড় পেঁচানো।

বাড়ির ছোট মেয়ে মামাক লিসা বলছিলেন, “তার সাথে হৃদয়ের আবেগের খুব সম্পর্ক আছে। আমাদের সেই সম্পর্ক এখনো আছে। ” অথচ এই ব্যক্তি মারা গেছেন ১২ বছর আগে। যদিও তার পরিবার মনে করে, তিনি এখনো জীবিত কিন্তু একটু অসুস্থ। এই মৃত ব্যক্তি তার পরিবারের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রারই একটি অংশ।

ইন্দোনেশিয়ার তোরাজন এলাকার পুরনো প্রথার এটিও একটি, যেখানে মৃতরা জীবিতদের সাথেই বসবাস করে। কেউ মারা যাওয়ার অনেক মাস পর. অনেক বছর পর শেষকৃত্য হয়। এ মধ্যবর্তী সময়ে নানা হারবাল ও রাসায়নিক দিয়ে মৃতদেহ সংরক্ষণ করে পরিবারের সাথেই রাখা হয়। তাকে দিনে দুইবার খাবার দেয়া হয়, এমনটি টয়লেটের জন্যও রুমে এক কোণে একটি পাত্র রাখা হয়।

তার কন্যা বলছিলেন, “এটা আমার দুঃখবোধ কাটাতে অনেক সাহায্য করছে। আমার বাবা যে মারা গেছেন সে কষ্টের সাথে অভ্যস্ত হতে আমি সময় পাচ্ছি। ” যখন চূড়ান্ত ভাবে মৃতদের বিদায় জানানো হয় তখন অনুষ্ঠান হয় অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ। আত্মীয়স্বজনরা আসেন। অনেক টাকা পয়সাও খরচ করা হয়। আবার এ শেষকৃত্য কিন্তু চূড়ান্ত বিচ্ছেদ নয়। কয়েক বছর পর পর নানা উপলক্ষে কফিন খুলে মৃতদেহ বের করা হয়। বন্ধু আর আত্মীয়রা তাকে নানা খাবার দেন, পরিষ্কার করে একত্রে তার সাথে ছবিও তুলেন।

সমাজবিজ্ঞানী আন্দি তান্দি লোলো, “সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দেখলে এটি জীবিত ও মৃতদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার মতো ব্যাপার। ” তিন বছর আগে নিহত এক ব্যক্তির পুত্রবধূ বলছেন, যখন তাকে দেখতে পাই তখন মনে হয় তিনি আমাদের কত ভালোবাসতেন। তবে এ প্রাচীন প্রথাটি এখন ক্রমশ বিলুপ্তির পথে।

সূত্র : বিবিসি

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় বিয়ের খবর শুনে প্রেমিকের বাড়িতে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক তরুণীর অবস্থান, ঘটনাস্থলে পুলিশ

যেখানে মৃতদের সঙ্গে জীবিতদের বসবাস !

আপডেট সময় : ০২:০৭:১৪ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

শিরোনামটা দেখে হয়তো চোখ ছানাবোড়া হতে পারে! কারণ পৃথিবীর অনেক সংস্কৃতি বা ধর্মেই মৃত্যুকে মনে করা হয় শুধুমাত্র শারীরিক বিনাশ। যা এই জগতের শেষ, তবে অন্য আরেক জগতের শুরু। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার একটি অঞ্চলে বিষয়টি একটু আলাদা। সেখানে একজনের মৃত্যু হলেও, তার শেষকৃত্য হতে অনেক সময় লেগে যায়। মৃতদের নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিও ভিন্ন।

একটি ভিডিও তে দেখা যায়, বসার কক্ষে পরিবারের সদস্যরা বসে কফি খাচ্ছেন। সবাই খু্ব হাসিখুশি, আর এরই পাশের কক্ষের বিছানায় একজন শুয়ে আছেন। তিনি কোন নড়াচড়া করছেন না। তার ধুসর বর্ণের মুখে ছোট ছোট অনেক দাগ, যেন পোকা মাকড় কামড় দিয়েছে। শরীরে অনেক কাপড় পেঁচানো।

বাড়ির ছোট মেয়ে মামাক লিসা বলছিলেন, “তার সাথে হৃদয়ের আবেগের খুব সম্পর্ক আছে। আমাদের সেই সম্পর্ক এখনো আছে। ” অথচ এই ব্যক্তি মারা গেছেন ১২ বছর আগে। যদিও তার পরিবার মনে করে, তিনি এখনো জীবিত কিন্তু একটু অসুস্থ। এই মৃত ব্যক্তি তার পরিবারের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রারই একটি অংশ।

ইন্দোনেশিয়ার তোরাজন এলাকার পুরনো প্রথার এটিও একটি, যেখানে মৃতরা জীবিতদের সাথেই বসবাস করে। কেউ মারা যাওয়ার অনেক মাস পর. অনেক বছর পর শেষকৃত্য হয়। এ মধ্যবর্তী সময়ে নানা হারবাল ও রাসায়নিক দিয়ে মৃতদেহ সংরক্ষণ করে পরিবারের সাথেই রাখা হয়। তাকে দিনে দুইবার খাবার দেয়া হয়, এমনটি টয়লেটের জন্যও রুমে এক কোণে একটি পাত্র রাখা হয়।

তার কন্যা বলছিলেন, “এটা আমার দুঃখবোধ কাটাতে অনেক সাহায্য করছে। আমার বাবা যে মারা গেছেন সে কষ্টের সাথে অভ্যস্ত হতে আমি সময় পাচ্ছি। ” যখন চূড়ান্ত ভাবে মৃতদের বিদায় জানানো হয় তখন অনুষ্ঠান হয় অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ। আত্মীয়স্বজনরা আসেন। অনেক টাকা পয়সাও খরচ করা হয়। আবার এ শেষকৃত্য কিন্তু চূড়ান্ত বিচ্ছেদ নয়। কয়েক বছর পর পর নানা উপলক্ষে কফিন খুলে মৃতদেহ বের করা হয়। বন্ধু আর আত্মীয়রা তাকে নানা খাবার দেন, পরিষ্কার করে একত্রে তার সাথে ছবিও তুলেন।

সমাজবিজ্ঞানী আন্দি তান্দি লোলো, “সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দেখলে এটি জীবিত ও মৃতদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার মতো ব্যাপার। ” তিন বছর আগে নিহত এক ব্যক্তির পুত্রবধূ বলছেন, যখন তাকে দেখতে পাই তখন মনে হয় তিনি আমাদের কত ভালোবাসতেন। তবে এ প্রাচীন প্রথাটি এখন ক্রমশ বিলুপ্তির পথে।

সূত্র : বিবিসি