জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক একেবারেই তলানিতে পৌঁছেছে। দুদেশই উভয়ের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। ভারত সরকার সেনাবাহিনীকে যেকোনো সামরিক অভিযান পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। এদিকে, পাকিস্তান সরকার আশঙ্কা করছে- ভারত যেকোনো মুহূর্তে হামলা চালাতে পারে। তাই তারাও পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে। একই সঙ্গে ভারতকে কঠিন জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। সব মিলিয়ে দুদেশের মধ্যে যুদ্ধ লাগার অবস্থা তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় চীন স্পষ্ট জানিয়েছে দিয়েছে, দেশটি যেকোনো পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের পাশে থাকবে।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে নিযুক্ত চীনা কনসাল জেনারেল ঝাও শিরেন একথা বলেন। বৃহস্পতিবার (১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, লাহোরে চীনের কনসাল জেনারেল ঝাও শিরেন বলেছেন, সব পরিস্থিতিতেই পাকিস্তানের পাশে থাকবে চীন। অবশ্য তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়; পাকিস্তান ও ভারতের উচিত সংলাপ ও কূটনৈতিক পথে শান্তির রাস্তা খোঁজা।
লাহোরে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কেন্দ্রীয় পাঞ্জাব শাখার নেতাদের সঙ্গে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় পিপিপি কেন্দ্রীয় পাঞ্জাবের অর্থ সম্পাদক আহমাদ জাওয়াদ রানার বাসভবনে।
ঝাও বলেন, চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক কৌশলগত সহযোগিতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তা অবকাঠামোতে দীর্ঘদিনের। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, ‘চীন পাকিস্তানের সঙ্গে ছিল, আছে, এবং ভবিষ্যতেও থাকবে—বিশেষ করে নিরাপত্তা, কৌশলগত সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে।’
আড়াই ঘণ্টা স্থায়ী এ বৈঠকে জাতীয় ও আঞ্চলিক নানা বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়। ঝাও বলেন, চীন-পাকিস্তানের বন্ধুত্বের শিকড় গভীরে গাঁথা। তিনি জানান, ‘প্রত্যেক চীনা নাগরিক পাকিস্তানকে ভালোবাসে এবং পাকিস্তানিরাও চীনকে একইরকম ভালোবাসা ও সম্মান দেখায়।’
বৈঠকে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও খোলামেলা আলোচনা হয়। দুই পক্ষই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য বহুপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হন।
বৈঠকের শেষ দিকে দুই দেশই চীন-পাকিস্তান বন্ধুত্ব চিরকাল অটুট থাকবে বলে পুনর্ব্যক্ত করে। ঝাও বলেন, পাকিস্তান শুধু প্রতিবেশী বা মিত্র নয়, চীনের কাছে এক পরীক্ষিত বন্ধু। তিনি আরও বলেন, ‘পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও কৌশলগত সহযোগিতাই আমাদের সম্পর্কের ভিত্তি।’