স্টকহোমের পশ্চিমে ওরেব্রো শহর। এ শহরেই রিসবার্গস্কা স্কুলে একজন বন্দুকধারীর গুলিতে ১১ জন নিহত এবং ছয়জনের মতো আহত হয়েছে।
ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে।একজন মুখোশধারী ব্যক্তি স্কুল ক্যাম্পাসে ঢুকে গুলি চালায়।
কলেজের প্রধান, ইঙ্গেলা ব্যাক গুস্তাফসন, পাবলিক ব্রডকাস্টার এসভিটিকে বলেছেন যে তিনি সহকর্মীদের সাথে যখন তার দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন তখন বিপুল সংখ্যক ছাত্র তাদের কাছে চিৎকার করে দৌড়ে এসে জানায় ‘আমাদের বাঁচান’।
তিনি বলেন, “ছাত্রদের একটি বড় দলের সাথে আমি স্কুলের উঠানে দৌড়ে বেরিয়েছিলাম, এবং যখন আমি সেখানে ছিলাম তখন আমি কাছাকাছি গুলির শব্দ শুনেছিলাম,”। তিনি বলেন, “আমি এবং অন্য অনেকেই চিৎকার করছিলাম ‘পালাও, পালাও’। এবং আমরা আমাদের প্রাণের জন্য দৌড়ে গেলাম।”
Aftonbladet সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে স্কুলের একটি দরজার জানালা দিয়ে বন্দুকধারীর একটি আভাস দেখা যায়।
লেনা ওয়ারেনমার্ক নামের অন্য শিক্ষক পাবলিক ব্রডকাস্টার এসভিটি-র কাছে বলেন, যে সেখানে অস্বাভাবিকভাবে খুব কম ছাত্র ছিল, কারণ তারা আগের দিন একটি জাতীয় পরীক্ষার পরে বাড়ি চলে গিয়েছিল।
কেন্দ্রটি মূলত রিসবার্গস্কা স্কোলান নামে একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে নির্মিত হয়েছিল, কিন্তু ২০১৭ সালে একটি বিশেষায়িত বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়েছিল। যেখানে ২০ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা শেষ করতে, সুইডিশ শিখতে এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারে।
পুলিশ বুধবার ভোরে নিশ্চিত করেছে, মধ্যরাতের ঠিক পরে, হামলায় এগারো জন নিহত হয়েছেন। পুলিশের প্রেস মুখপাত্র ফ্রেডরিক সভেদেমির এসভিটিকে বলেন, নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
“আমাদের কাছে এই মুহূর্তে আহতের সংখ্যার একটি সম্পূর্ণ ছবি নেই, এবং যেহেতু আমাদের কাছে হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের অবস্থা সম্পর্কে কোনও বিশদ বিবরণ নেই, দুর্ভাগ্যবশত একটি ঝুঁকি রয়েছে যে সংখ্যাটি এগারোটিতে থামবে না,”।
ওরেব্রোর স্বাস্থ্যসেবা পরিচালক জোনাস ক্ল্যাসন মঙ্গলবার বিকেলে একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন যে ছয়জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বুধবার সকালে, তিনি এসভিটি নিউজকে নিশ্চিত করেছেন যে রোগীদের মধ্যে পাঁচজনকে গুলি করা হয়েছে এবং তাদের সকলের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। দুজনকে নিবিড় পরিচর্যায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মোট ১৫ জন আহত হয়েছে।
পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে, তবে পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে কোনো কর্মকর্তা আহত হয়নি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে পুলিশ আত্মবিশ্বাসী ছিল যে বিপদ কেটে গেছে।
ওরেব্রোর পুলিশ প্রধান রবার্তো ইদ ফরেস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “বর্তমানে, আমরা মনে করছি যে আর কোনো হামলা হবে না।কারণ হামলাকারীও সম্ভবত মারা গেছে ।
তবে দেশটির নিয়ম অনুযায়ী অপরাধীর পরিচয় ও ছবি প্রকাশ করার নিয়ম নেই বলে পুলিশ কিছুই বলছে না। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন বলেছেন, হত্যাকারী মাদকাসক্ত ছিল। সে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল” ।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে ওরেব্রোর ভাসথাগা এলাকার লোকজনকে স্কুলের আশেপাশের এলাকা থেকে দূরে থাকার জন্য ও বাড়ির ভিতরে থাকতে সতর্কতা জারি করেছিল। সূত্র, দ্য লোকাল।
আজ বুধবার সকাল ৭টার পরেও স্কুলের বাইরে পুলিশি কর্ডন ছিল। এলাকা বেশ থমথমে। সুইডেনে অপরাধ হয় না বললেই চলে, সেখানে এরকম ১১ জনের মৃত্যু ‘সর্বোচ্চ বলে অভিহিত করেছে পুলিশ বিভাগ।
প্রধানমন্ত্রীও শোক জানিয়েছেন।