শিরোনাম :
Logo সদ্য নির্বাচিত বোদা উপজেলা বিএনপির সভাপতিকে শোকজ Logo রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ দিতে যেয়ে হেনস্তার শিকার জবি শিক্ষার্থী Logo ইবিতে রিপোর্টার্স ইউনিটির কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব Logo অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি জিরো টলারেন্স ;বেরোবি উপাচার্য Logo কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে পাবিপ্রবিতে ইনকিলাব মঞ্চের মানববন্ধন Logo খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি নির্বাচন ২০২৫ এর কমিশন গঠন ও তফসিল ঘোষণা Logo কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের অনশন Logo কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশন—ইবি শিক্ষার্থীদের একাত্মতা Logo জাবিতে “সংগ্রামের শত রঙ” নামে জুলাই-বিপ্লবের আলোকচিত্র প্রদর্শনী Logo শ্রীবরদীতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় ছাত্রদল

সিরাজগঞ্জে ভাঙন ও ভোগান্তি নিয়ে বাস করছে বানভাসী মানুষ

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৩:১৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪
  • ৭৩৫ বার পড়া হয়েছে

যমুনার ভাঙন ও পানিবন্দীর কারণে ভোগান্তি নিয়েই বসবাস করছে যমুনার কোলঘেষা সিরাজগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার ৩৪ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। পানি কিছুটা কমলেও এখনো বিপদসীমার ১১ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় হাজার হাজার বসতভিটা পানির নীচে রয়েছে। কিছু কিছু বসতভিটা থেকে পানি নামলেও স্যাঁতসেঁতে ও দুর্গন্ধময় পানি জমে রয়েছে। এতে চলাচল করায় হাত-পায়ে ঘা দেখা দিচ্ছে।

বিশুদ্ধ পানির সংকটের কারণে ডায়রিয়াসহ নানারোগে আক্রান্ত হচ্ছে বানভাসিরা।

পানি বন্দী ও ভাঙন কবলিতরা শ্রমিক, কৃষক ও দিনমজুর হওয়ায় কাজ কর্ম না থাকায় খাদ্য, শিশু খাদ্য, ওষুধ ও গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিতদের মধ্যে ত্রাণের হাহাকার পড়েছে। সরকারীভাবে যে চাল বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

পুর্বমোহনপুর গ্রামের বয়োবৃদ্ধ হরমুজ আলী জানান, মনে হয় আল্লাহ আমাগোরে দুর্যোগ ও দুর্ভোগে থাকার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। ঘরে পানি-বাইরে পানি। চলাচল করতে পারি না। দুই ছেলে বেকার বসে আছে। হাত পায়ে ঘা ও জ্বর ঠাণ্ডা শুরু হচ্ছে। একটা ট্যাবলেট কিনতে পারি না। টাকা ও খাদ্যের কষ্ট চরমে। শুনেছি সরকার ত্রাণ দেয়, কিন্তু খোদার কসম একফোঁটা ত্রাণও কপালে জোটেনি।

একই এলাকার ইউনুছ আলী বলেন, আমরা মানুষ কষ্ট করে পানিতে বসবাস করছি। আমাদের সাথে বোবা পশুগুলোও কষ্ট করছে। গরু-ছাগলগুলোকেও ঠিকমতো খেতে দিতে পারছি না। কিছু মুরগী টিনের চালে থাকছে কিছু ভেসে গেছে। এতো কষ্টে থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না।

ভাঙ্গন কবলিতরা বলছে, প্রতিদিন ভাঙ্গনে বসতভিটা, গাছপালা, ফসলী জমিসহ সবকিছু বিলীন হয়ে নি:স্ব হয়ে যাচ্ছি। যমুনা আমাদের পথের ফকির বানিয়ে দিচ্ছে। ঘর তোলার জায়গা না থাকায় খোলা আকাশের নীচে বসবাস করতে হচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান জানান, ১৭৪ মে.টন চাল ও ৫ লক্ষ টাকা এবং ৩শ শুকনো খাবার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। বন্যায় এরই মধ্যে ৯ জন মারা গেছে। ২৪ হাজার পরিবার পানি বন্দী রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, যমুনার পানি কমছে। আগামী ৪৮ ঘন্টা পানি হ্রাস পাবে। পানি কমা ও বাড়ার সাথে যেসব এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে তার মধ্যে কিছু এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলে ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সদ্য নির্বাচিত বোদা উপজেলা বিএনপির সভাপতিকে শোকজ

সিরাজগঞ্জে ভাঙন ও ভোগান্তি নিয়ে বাস করছে বানভাসী মানুষ

আপডেট সময় : ০৮:৩৩:১৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪

যমুনার ভাঙন ও পানিবন্দীর কারণে ভোগান্তি নিয়েই বসবাস করছে যমুনার কোলঘেষা সিরাজগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার ৩৪ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। পানি কিছুটা কমলেও এখনো বিপদসীমার ১১ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় হাজার হাজার বসতভিটা পানির নীচে রয়েছে। কিছু কিছু বসতভিটা থেকে পানি নামলেও স্যাঁতসেঁতে ও দুর্গন্ধময় পানি জমে রয়েছে। এতে চলাচল করায় হাত-পায়ে ঘা দেখা দিচ্ছে।

বিশুদ্ধ পানির সংকটের কারণে ডায়রিয়াসহ নানারোগে আক্রান্ত হচ্ছে বানভাসিরা।

পানি বন্দী ও ভাঙন কবলিতরা শ্রমিক, কৃষক ও দিনমজুর হওয়ায় কাজ কর্ম না থাকায় খাদ্য, শিশু খাদ্য, ওষুধ ও গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিতদের মধ্যে ত্রাণের হাহাকার পড়েছে। সরকারীভাবে যে চাল বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

পুর্বমোহনপুর গ্রামের বয়োবৃদ্ধ হরমুজ আলী জানান, মনে হয় আল্লাহ আমাগোরে দুর্যোগ ও দুর্ভোগে থাকার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। ঘরে পানি-বাইরে পানি। চলাচল করতে পারি না। দুই ছেলে বেকার বসে আছে। হাত পায়ে ঘা ও জ্বর ঠাণ্ডা শুরু হচ্ছে। একটা ট্যাবলেট কিনতে পারি না। টাকা ও খাদ্যের কষ্ট চরমে। শুনেছি সরকার ত্রাণ দেয়, কিন্তু খোদার কসম একফোঁটা ত্রাণও কপালে জোটেনি।

একই এলাকার ইউনুছ আলী বলেন, আমরা মানুষ কষ্ট করে পানিতে বসবাস করছি। আমাদের সাথে বোবা পশুগুলোও কষ্ট করছে। গরু-ছাগলগুলোকেও ঠিকমতো খেতে দিতে পারছি না। কিছু মুরগী টিনের চালে থাকছে কিছু ভেসে গেছে। এতো কষ্টে থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না।

ভাঙ্গন কবলিতরা বলছে, প্রতিদিন ভাঙ্গনে বসতভিটা, গাছপালা, ফসলী জমিসহ সবকিছু বিলীন হয়ে নি:স্ব হয়ে যাচ্ছি। যমুনা আমাদের পথের ফকির বানিয়ে দিচ্ছে। ঘর তোলার জায়গা না থাকায় খোলা আকাশের নীচে বসবাস করতে হচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান জানান, ১৭৪ মে.টন চাল ও ৫ লক্ষ টাকা এবং ৩শ শুকনো খাবার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। বন্যায় এরই মধ্যে ৯ জন মারা গেছে। ২৪ হাজার পরিবার পানি বন্দী রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, যমুনার পানি কমছে। আগামী ৪৮ ঘন্টা পানি হ্রাস পাবে। পানি কমা ও বাড়ার সাথে যেসব এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিচ্ছে তার মধ্যে কিছু এলাকায় জিও ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলে ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।