গৃহনির্মাণ ঋণ বাড়ানো প্রক্রিয়ায় স্থবিরতা !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৫:৫০:১৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২১ আগস্ট ২০১৭
  • ৭৫৪ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য গৃহনির্মাণ ঋণের সিলিং বাড়ানোর প্রক্রিয়া স্থবির  হয়ে পড়েছে।
সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ সিলিং বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় গত বছর এ সিলিং বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো কোনো কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে এ উদ্যোগের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।

সূত্র জানায়, বর্তমান বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণের সিলিং নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে মতামত নেওয়ার জন্য একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বৈঠকে ঋণের সিলিং বাড়ানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। অর্থ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবকে সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণের সিলিং বাড়ানোর বিষয়ে একটি ধারণাপত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পর থেকে এ বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ নিয়ে চাকরিজীবীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে মতামত নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে বাড়ি নির্মাণের সিলিং রয়েছে মাত্র এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এটি একটি হাস্যকর বিষয়। একটি ঘরের দুটি আসবাবপত্র কিনতেই এখন এই টাকা ব্যয় করতে হয়। ২০-২৫ বছর আগে এই সিলিং নির্ধারণ করা হয়েছিল। এত বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও এটির কোনো পরিবর্তন হয়নি। বছরের পর বছর ধরে আমরা শুনেই আসছি, গৃহনির্মাণ ঋণের সিলিং বাড়ানো হবে। কিন্তু তা আর হয়নি, কবে হবে তাও জানি না।

তিনি বলেন, বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী এই সিলিং ৩০ লাখ থেকে ৪০ লাখ করা উচিত।

সূত্র জানায়, অর্থ বিভাগে অনুষ্ঠিত সরকারি চাররিজীবীদের গৃহনির্মাণ সিলিং বাড়ানো সংক্রান্ত এক বৈঠকে বলা হয়েছে, প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারীর একটি বড় অংশ ঢাকা বা অন্যান্য মহানগরীর বাইরে বসবাস করেন। বর্তমানে নির্ধারিত গৃহঋণ বাবদ এক লাখ ২০ হাজার টাকার সিলিং যৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে  জেলা-উপজেলাসহ মাঠপর্যায়ে কর্মরত কর্মচারীদের যদি ১০ লাখ টাকা দেওয়া সম্ভব হয় তবে ওই পর্যায়ের একজন সরকারি কর্মচারীর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। একইভাবে বিভাগীয় শহর ও মহানগরগুলোতে বসবাসকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গৃহনির্মাণের বিষয়টি যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবি।

বৈঠকে মত দেওয়া হয়, মূল বেতনের তিন ভাগের এক ভাগের বেশি কেটে নেওয়া যৌক্তিক হবে না। তবে যেহেতু এখন ৫০ ভাগ পেনশন গ্রহণের বাধ্যবাধকতা পুনঃবর্তন করা হয়েছে, সেহেতু গ্র্যাচুইটির একটি নির্দিষ্ট অংশকে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নিয়ে সিলিং নির্ধারণ করা যেতে পারে। এছাড়াও নবীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য গৃহঋণ সুবিধার আওতায় চাকরি জীবনের শুরুতেই একটি বাসস্থানের সংস্থান সম্ভব হলে সরকারি চাকরিতে মেধাবীরা আকৃষ্ট হবেন। এ ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠান হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে ঋণকার্যক্রম পরিচালনা করা যায় কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা উচিত।

বৈঠকে সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণে দেশি উৎসের পাশাপাশি বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নেওয়া যায় কিনা তাও খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বৈঠকে মত দেওয়া হয়, বিভিন্ন গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল বেতনের ওপর ভিত্তি করে বিদ্যমান ২০টি গ্রেডকে কয়েকটি গ্রুপে যৌক্তিকভাবে বিন্যস্ত করে গ্রুপভিত্তিক ঋণের সিলিং নির্ধারণ করতে হবে। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে মাসিক কিস্তি এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে গৃহনির্মাণ বাবদ গৃহীত ঋণের অপরিশোধিত অংশ পরিশোধের ক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসর গ্রহণের সময় প্রাপ্য গ্র্যাচুইটির একটি নির্দিষ্ট অংশের বেশি (সর্বোচ্চ ৫০-৭০ শতাংশ) পরিশোধ করতে না হয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গৃহনির্মাণ ঋণ বাড়ানো প্রক্রিয়ায় স্থবিরতা !

আপডেট সময় : ০৫:৫০:১৪ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২১ আগস্ট ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য গৃহনির্মাণ ঋণের সিলিং বাড়ানোর প্রক্রিয়া স্থবির  হয়ে পড়েছে।
সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ সিলিং বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় গত বছর এ সিলিং বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো কোনো কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে এ উদ্যোগের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।

সূত্র জানায়, বর্তমান বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণের সিলিং নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে মতামত নেওয়ার জন্য একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বৈঠকে ঋণের সিলিং বাড়ানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। অর্থ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিবকে সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণ ঋণের সিলিং বাড়ানোর বিষয়ে একটি ধারণাপত্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পর থেকে এ বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ নিয়ে চাকরিজীবীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে মতামত নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে বাড়ি নির্মাণের সিলিং রয়েছে মাত্র এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এটি একটি হাস্যকর বিষয়। একটি ঘরের দুটি আসবাবপত্র কিনতেই এখন এই টাকা ব্যয় করতে হয়। ২০-২৫ বছর আগে এই সিলিং নির্ধারণ করা হয়েছিল। এত বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও এটির কোনো পরিবর্তন হয়নি। বছরের পর বছর ধরে আমরা শুনেই আসছি, গৃহনির্মাণ ঋণের সিলিং বাড়ানো হবে। কিন্তু তা আর হয়নি, কবে হবে তাও জানি না।

তিনি বলেন, বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী এই সিলিং ৩০ লাখ থেকে ৪০ লাখ করা উচিত।

সূত্র জানায়, অর্থ বিভাগে অনুষ্ঠিত সরকারি চাররিজীবীদের গৃহনির্মাণ সিলিং বাড়ানো সংক্রান্ত এক বৈঠকে বলা হয়েছে, প্রায় ১৫ লাখ সরকারি কর্মচারীর একটি বড় অংশ ঢাকা বা অন্যান্য মহানগরীর বাইরে বসবাস করেন। বর্তমানে নির্ধারিত গৃহঋণ বাবদ এক লাখ ২০ হাজার টাকার সিলিং যৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে  জেলা-উপজেলাসহ মাঠপর্যায়ে কর্মরত কর্মচারীদের যদি ১০ লাখ টাকা দেওয়া সম্ভব হয় তবে ওই পর্যায়ের একজন সরকারি কর্মচারীর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। একইভাবে বিভাগীয় শহর ও মহানগরগুলোতে বসবাসকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গৃহনির্মাণের বিষয়টি যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা এখন সময়ের দাবি।

বৈঠকে মত দেওয়া হয়, মূল বেতনের তিন ভাগের এক ভাগের বেশি কেটে নেওয়া যৌক্তিক হবে না। তবে যেহেতু এখন ৫০ ভাগ পেনশন গ্রহণের বাধ্যবাধকতা পুনঃবর্তন করা হয়েছে, সেহেতু গ্র্যাচুইটির একটি নির্দিষ্ট অংশকে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নিয়ে সিলিং নির্ধারণ করা যেতে পারে। এছাড়াও নবীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য গৃহঋণ সুবিধার আওতায় চাকরি জীবনের শুরুতেই একটি বাসস্থানের সংস্থান সম্ভব হলে সরকারি চাকরিতে মেধাবীরা আকৃষ্ট হবেন। এ ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠান হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে ঋণকার্যক্রম পরিচালনা করা যায় কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা উচিত।

বৈঠকে সরকারি চাকরিজীবীদের গৃহনির্মাণে দেশি উৎসের পাশাপাশি বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নেওয়া যায় কিনা তাও খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বৈঠকে মত দেওয়া হয়, বিভিন্ন গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল বেতনের ওপর ভিত্তি করে বিদ্যমান ২০টি গ্রেডকে কয়েকটি গ্রুপে যৌক্তিকভাবে বিন্যস্ত করে গ্রুপভিত্তিক ঋণের সিলিং নির্ধারণ করতে হবে। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে মাসিক কিস্তি এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে গৃহনির্মাণ বাবদ গৃহীত ঋণের অপরিশোধিত অংশ পরিশোধের ক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসর গ্রহণের সময় প্রাপ্য গ্র্যাচুইটির একটি নির্দিষ্ট অংশের বেশি (সর্বোচ্চ ৫০-৭০ শতাংশ) পরিশোধ করতে না হয়।