শিরোনাম :
Logo সদ্য নির্বাচিত বোদা উপজেলা বিএনপির সভাপতিকে শোকজ Logo রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগ দিতে যেয়ে হেনস্তার শিকার জবি শিক্ষার্থী Logo ইবিতে রিপোর্টার্স ইউনিটির কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব Logo অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি জিরো টলারেন্স ;বেরোবি উপাচার্য Logo কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে পাবিপ্রবিতে ইনকিলাব মঞ্চের মানববন্ধন Logo খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি নির্বাচন ২০২৫ এর কমিশন গঠন ও তফসিল ঘোষণা Logo কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের অনশন Logo কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আমরণ অনশন—ইবি শিক্ষার্থীদের একাত্মতা Logo জাবিতে “সংগ্রামের শত রঙ” নামে জুলাই-বিপ্লবের আলোকচিত্র প্রদর্শনী Logo শ্রীবরদীতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় ছাত্রদল

সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমছে !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১২:৩৭:৫৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৪ জুন ২০১৭
  • ৭৩৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সঞ্চয়পত্রে সুদের হার আগামী মাস থেকে কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। সে অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রে সুদের হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হতে পারে।

সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রাণলয় সূত্রে জানা গেছে। এর আগে ২০১৫ সালের মে মাসে একবার সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখনো সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হয়।

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়কালে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৫৩ হাজার ৬৮৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় ৪০ দশমিক ৫৭ ভাগ বেশি। অন্যদিকে জুলাই-মার্চ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার নিট ঋণ গ্রহণ করেছে ৩৭ হাজার ৬৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে একই সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ ছিল ২৩ হাজার ১৮৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এই বাস্তবতায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি করে ৪৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সদ্যঘোষিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে অর্থবিভাগ থেকে বলা হয়েছে, ‘সঞ্চয়পত্র বিক্রির এই গতিধারা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে এ খাত থেকে ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। এর ফলে সুদবাবদ সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে। যা স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে সরকারের বাজেটের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।

অন্যদিকে সরকারের সম্পদ উদ্বৃত্তের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার রিভিউ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এ বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন,  আমাদের এখানে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার আসলেই বেশি। সাধারণত ব্যাংক আমানতের সুদের হারের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১-২ শতাংশ বেশি হয়ে থাকে। বর্তমানে এই ব্যবধান ৪ শতাংশের বেশি। এটা চলতে থাকলে এ খাতে বিনিয়োগ আরো বেড়ে যাবে। সরকারের ভবিষ্যৎ ঋণের বোঝা বেড়ে যাবে। সে কারণেই আমরা এটাকে রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।

বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে আমানতের সুদের হার ৪ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে। অন্যদিকে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার ১১ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর বিষয়ে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে এই হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হতে পারে। কিন্তু বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে বিবেচিত হয়ে আসছে। কারণ নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সঞ্চয়পত্রে অবসরভোগী ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ বেশি বিনিয়োগ করে থাকে। তাই এর পেছনে রাজনীতির বিষয়টি আমাদের ভাবতে হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে ১০ মে বাজারে চালু সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ থেকে প্রায় দুই ভাগ কমিয়ে ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ করা হয়। তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয় ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। অন্যান্য সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও দেড় শতাংশ কমানো হয়েছে।

আগে পাঁচ বছর মেয়াদি এক লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনলে মাসে এক হাজার ৭০ টাকা মুনাফা পাওয়া যেত। ২০১৫ সালে সুদহার কমানোর পর এখন পাওয়া যাচ্ছে ৯১২ টাকা। সুদের হার আরো কমানো হলে মুনাফাও অনেক কমে যাবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সদ্য নির্বাচিত বোদা উপজেলা বিএনপির সভাপতিকে শোকজ

সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমছে !

আপডেট সময় : ১২:৩৭:৫৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৪ জুন ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সঞ্চয়পত্রে সুদের হার আগামী মাস থেকে কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। সে অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রে সুদের হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হতে পারে।

সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রাণলয় সূত্রে জানা গেছে। এর আগে ২০১৫ সালের মে মাসে একবার সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখনো সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হয়।

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়কালে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৫৩ হাজার ৬৮৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় ৪০ দশমিক ৫৭ ভাগ বেশি। অন্যদিকে জুলাই-মার্চ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার নিট ঋণ গ্রহণ করেছে ৩৭ হাজার ৬৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে একই সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ ছিল ২৩ হাজার ১৮৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এই বাস্তবতায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি করে ৪৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সদ্যঘোষিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে অর্থবিভাগ থেকে বলা হয়েছে, ‘সঞ্চয়পত্র বিক্রির এই গতিধারা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে এ খাত থেকে ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। এর ফলে সুদবাবদ সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে। যা স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে সরকারের বাজেটের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।

অন্যদিকে সরকারের সম্পদ উদ্বৃত্তের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার রিভিউ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এ বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন,  আমাদের এখানে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার আসলেই বেশি। সাধারণত ব্যাংক আমানতের সুদের হারের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১-২ শতাংশ বেশি হয়ে থাকে। বর্তমানে এই ব্যবধান ৪ শতাংশের বেশি। এটা চলতে থাকলে এ খাতে বিনিয়োগ আরো বেড়ে যাবে। সরকারের ভবিষ্যৎ ঋণের বোঝা বেড়ে যাবে। সে কারণেই আমরা এটাকে রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।

বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে আমানতের সুদের হার ৪ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে। অন্যদিকে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার ১১ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর বিষয়ে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে এই হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হতে পারে। কিন্তু বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে বিবেচিত হয়ে আসছে। কারণ নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সঞ্চয়পত্রে অবসরভোগী ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ বেশি বিনিয়োগ করে থাকে। তাই এর পেছনে রাজনীতির বিষয়টি আমাদের ভাবতে হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে ১০ মে বাজারে চালু সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ থেকে প্রায় দুই ভাগ কমিয়ে ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ করা হয়। তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয় ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। অন্যান্য সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও দেড় শতাংশ কমানো হয়েছে।

আগে পাঁচ বছর মেয়াদি এক লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনলে মাসে এক হাজার ৭০ টাকা মুনাফা পাওয়া যেত। ২০১৫ সালে সুদহার কমানোর পর এখন পাওয়া যাচ্ছে ৯১২ টাকা। সুদের হার আরো কমানো হলে মুনাফাও অনেক কমে যাবে।