শিরোনাম :
Logo সেনাবাহিনী সব সময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে : সেনাপ্রধান Logo জীবননগরের উথলীতে আবারও রেললাইনে ফাটল, তবে স্বাভাবিক রয়েছে ট্রেন চলাচল Logo Alpha connect day প্রতিযোগিতায় দেশসেরা জাককানইবির আশরাফুল ইসলাম Logo চাঁদপুর জেলা পুলিশের সফল অভিযান; গত ৩ মাসে ১০৩ জন কিশোর গ্যাং ও ডাকাত আটক Logo শেরপুরে ৫ দফা দাবিতে মউশিক শিক্ষকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান Logo চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের আলোচনা ও ইফতার মাহফিল Logo ইসবগুল যেভাবে খেলে বেশি উপকার মেলে Logo জিহ্বা দেখেই বুঝে নিন শরীরে কোন রোগ বাসা বেঁধেছে Logo ঈদ উদযাপনে পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার ঘোষণা আসিফ মাহমুদ এর Logo মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে এলো জাহাজভর্তি মাটিমিশ্রিত কয়লার চালান

নিউক্লিয়ার এ্যানর্জি: চেনা জানা কিছু অজানা কথা !

  • আপডেট সময় : ০৩:০৮:১৭ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৭৫৬ বার পড়া হয়েছে

এক সময়ে গ্রামের বাসায় আঙিনায় বসে যখন কারেন্ট চলে যেতো তখন আধারে নিরেট বোকা চাঁদ টাকে খুব উদাস ভাবে দেখতাম। মাঝে মাঝে দক্ষিণা হাওয়া ছুয়ে যেতো সারাটা দেহ, শিহরণ জাগাতো প্রতিটা মূহুর্তে। অথবা বৃষ্টির রাতে কারেন্ট চলে গেলে খাতা মুড়ি দিয়ে টিনের চালে বৃস্টি পড়ার শব্দ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাওয়া, এসব দিন গুলো সত্যিই নস্টালজিক। হয়তো এখনও কেউ কেউ বয়সকালে ছোটবেলার এসব স্মৃতি চাংগা করতে বাড়ী বানায় দেশের বাড়ীতে এবং থাকার ব্যাবস্হা নেয়।কিন্তু বৃষ্টি পড়ুক না পড়ুক, চাদ হাসুক না হাসুক, বিদ্যুৎ চলে গেলে মাথা সপ্তমে চড় যায়, গালাগালি শুরু বাংলাদেশের সরকার থেকে আর শেষ করে এদেশের মানুষের স্বভাবের দুর্নীতিতে!

তার মানে একটা জিনিস বোঝা যাচ্ছে আমরা মুখে যতই বলি দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতি চরমে আর এর প্রয়োজনীয়তা ঢুকে গেছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে, কিন্তু উত্তরনের পথ সহজে কেউ দেখাতে চাচ্ছেন না বা সমস্যার সমাধান কেউ ঘাড় পেতে দিচ্ছনও না। এমন নয় যে পাওয়ার জেনারেশন বাড়ছে না অথবা জেনারেশন বন্ধ থাকছে কিন্তু জেনারেশনের সাথে সাথে এর ভোগের পরিমাণ বাড়ছে চক্রবৃদ্ধি হারে। এটা এদেশে নয়, সারা বিশ্বে! মানুষের এগিয়ে যাবার জন্য বিদ্যুৎ মৌলিক চাহিদায় ঢুকে যাচ্ছে আর চিন্তায় আস্তে আস্তে করে ঢুকছে পাওয়ার প্লান্ট বসানোর কথা। কিন্তু এখানেও সমস্যা।
এক সময় মনে করতাম এত পানি দিয়ে কি হবে, গাছ দিয়ে কি হবে, দক্ষিণ মেরু বা উত্তর মেরুর বরফ দিয়ে কি হবে? কিন্তু যখন গরমে প্রচন্ড গরম পরে, বা সিডরের মতো ঝড় সারা দেশ উড়িয়ে দুর্ভিক্ষ লাগিয়ে দেয়, যখন চাল কেনার পর আর কিছু কেনা যায় না, তখন মানুষ বুঝে কিছু একটা খারাপ হচ্ছে। আর সে খারাপ কিছু একটা হচ্ছে গ্রীন হাউস গ্যাস বা কার্বন ডাই অক্সাইড যেটার কারনে বিশ্বে ঘটছে একের পর এক দুর্যোগ।

বিদ্যুৎ এর ঘাটতি:নিরাপদ সমাধান আছে কি?

তাহলে বলা যায় এর সাথে নিউক্লিয়ার এ্যানর্জির সম্পর্ক কি?

তাহলে একটু বিশ্লেষণ মূলক উত্তরে যাই। কয়লা আমাদের দেশে সবচেয়ে সহজলভ্য জ্বালানী যেটা দিয়ে আমরা একটা বড় প্রোডাকশনে যেতে পারি কিন্তু এই কয়লাই হচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইডের সবচেয়ে বড় আধার। অনেকে আবার তখন বলে বসে তাহলে প্রাকৃতিক গ্যাস! প্রাকৃতিক গ্যাসে আসলেই কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমান কম আর অকটেন নম্বর বেশী থাকার কারনে অল্প ব্যাবহারেই বেশী বিটিইউ পাওয়া যায়। তবে সমস্যা থেকেই যায় এ গ্যাসের মধ্যে কার্বন সমৃদ্ধ গ্যাসের পরিমাণই বেশি (মিথেন, সালফার ইত্যাদি) আর দিন যাবে এর দামও বৃদ্ধি পাবে বিলুপ্তির সম্ভাবনা বাড়ার সাথে সাথে । আবার এখনতো আবার শোনা যাচ্ছে যে গ্যাস আছে আর যেরকম ব্যাবহার চলছে হয়তোবা বছর 10 এর মধ্যে সব গ্যাস হাওয়ায় উড়ে যাবে। তাহলে এসব দিয়ে পাওয়ার স্টেশনে ঢুকালে হয়তো গ্যাস শেষ হবার পর মানুষ গ্যাসের বদলে সব গাছ কেটে ইলিশ ভাজা খাবে।আর গ্রীন হাউস গ্যাস পাওয়ার স্টেশন ভিতর বাইর দুজায়গা থেকেই বেড়োবে আর পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র বলতে যেকোনো সচেতন নাগরিকই বুঝতে পারেন এটা সবসময়ই একটা লস প্রজেক্ট!তবে এই ফসিল ফুয়েল দিয়ে কাজ করলে প্রচুর পরিমাণে এরকম দূষন হবেই এবং ঠেকানো যাবে না যদিও বা এর উপর ট্যাক্স নেয়া হয়।

nuclear-power-plant.jpg
নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের ছবি

সেদিক দিয়ে নিউক্লিয়ার পাওয়ার স্টেশন একেবারেই নিরাপদ যদিও জনগন এখনো ভোলেনি সেই চেরোনোবিল বা থ্রীমাইল দ্বীপের দুর্ঘটনা।
আরেকটা পরিসংখ্যান দেই, 2050 সাল নাগাদ সারা বিশ্বে 160 শতাংশ ইলেক্ট্রিসিটির ব্যাবহার বেড়ে যাবে। এপরিমান বিদ্যুৎ চাহিদার জন্য যে কয়েক হাজার পাওয়ার স্টেশন বানাতে হবে তখন হয়তো আকাশে চোখ তুললে গ্রীন হাউস গ্যাসের স্তর দেখা যাবে। তবে 100 টা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বসালে এ সমস্যার একটা আশু সমাধান পাওয়া যাবে। আর সেক্ষেত্রে এর মূল্য খুবই কম থাকবে ওসব প্রাকৃতিক জ্বালানীর বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে 2000 সালের পর থেকে শুধু প্রাচ্যে 20000 মেগাওয়াটের বেশী বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে যেটা মূলত নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট থেকেই আসছে।

diablocanyon-northranch-april2007.jpg

এ ব্যাপারে 2003 সালে এমআইটির একটা স্ট্যাডিতে (The future of Nuclear Power) দেখা গেছে 2050সাল নাগাদ নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন তিনগুন বেড়ে 10 লক্ষ মেগাওয়াটে গিয়ে দাড়াবে, যেটা মূলত পৃথিবীর বায়ুমন্ডলকে প্রতিবছর 0.8 বিলিয়ন থেকে 1.8 বিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদন থেকে বাচাবে সেটার উৎস যেটাই হোউক; গ্যাস বা কয়লা!এ হিসাবে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট অবশ্যই এই গ্রীন হাউস গ্যাসের হাত থেকে এ পৃথিবীকে বাচাতে পারবে যেটা হিসেব করলে দেখা যায় 700 কোটি টন কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস 2050 সাল নাগাদ!

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সেনাবাহিনী সব সময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে : সেনাপ্রধান

নিউক্লিয়ার এ্যানর্জি: চেনা জানা কিছু অজানা কথা !

আপডেট সময় : ০৩:০৮:১৭ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬

এক সময়ে গ্রামের বাসায় আঙিনায় বসে যখন কারেন্ট চলে যেতো তখন আধারে নিরেট বোকা চাঁদ টাকে খুব উদাস ভাবে দেখতাম। মাঝে মাঝে দক্ষিণা হাওয়া ছুয়ে যেতো সারাটা দেহ, শিহরণ জাগাতো প্রতিটা মূহুর্তে। অথবা বৃষ্টির রাতে কারেন্ট চলে গেলে খাতা মুড়ি দিয়ে টিনের চালে বৃস্টি পড়ার শব্দ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যাওয়া, এসব দিন গুলো সত্যিই নস্টালজিক। হয়তো এখনও কেউ কেউ বয়সকালে ছোটবেলার এসব স্মৃতি চাংগা করতে বাড়ী বানায় দেশের বাড়ীতে এবং থাকার ব্যাবস্হা নেয়।কিন্তু বৃষ্টি পড়ুক না পড়ুক, চাদ হাসুক না হাসুক, বিদ্যুৎ চলে গেলে মাথা সপ্তমে চড় যায়, গালাগালি শুরু বাংলাদেশের সরকার থেকে আর শেষ করে এদেশের মানুষের স্বভাবের দুর্নীতিতে!

তার মানে একটা জিনিস বোঝা যাচ্ছে আমরা মুখে যতই বলি দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতি চরমে আর এর প্রয়োজনীয়তা ঢুকে গেছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে, কিন্তু উত্তরনের পথ সহজে কেউ দেখাতে চাচ্ছেন না বা সমস্যার সমাধান কেউ ঘাড় পেতে দিচ্ছনও না। এমন নয় যে পাওয়ার জেনারেশন বাড়ছে না অথবা জেনারেশন বন্ধ থাকছে কিন্তু জেনারেশনের সাথে সাথে এর ভোগের পরিমাণ বাড়ছে চক্রবৃদ্ধি হারে। এটা এদেশে নয়, সারা বিশ্বে! মানুষের এগিয়ে যাবার জন্য বিদ্যুৎ মৌলিক চাহিদায় ঢুকে যাচ্ছে আর চিন্তায় আস্তে আস্তে করে ঢুকছে পাওয়ার প্লান্ট বসানোর কথা। কিন্তু এখানেও সমস্যা।
এক সময় মনে করতাম এত পানি দিয়ে কি হবে, গাছ দিয়ে কি হবে, দক্ষিণ মেরু বা উত্তর মেরুর বরফ দিয়ে কি হবে? কিন্তু যখন গরমে প্রচন্ড গরম পরে, বা সিডরের মতো ঝড় সারা দেশ উড়িয়ে দুর্ভিক্ষ লাগিয়ে দেয়, যখন চাল কেনার পর আর কিছু কেনা যায় না, তখন মানুষ বুঝে কিছু একটা খারাপ হচ্ছে। আর সে খারাপ কিছু একটা হচ্ছে গ্রীন হাউস গ্যাস বা কার্বন ডাই অক্সাইড যেটার কারনে বিশ্বে ঘটছে একের পর এক দুর্যোগ।

বিদ্যুৎ এর ঘাটতি:নিরাপদ সমাধান আছে কি?

তাহলে বলা যায় এর সাথে নিউক্লিয়ার এ্যানর্জির সম্পর্ক কি?

তাহলে একটু বিশ্লেষণ মূলক উত্তরে যাই। কয়লা আমাদের দেশে সবচেয়ে সহজলভ্য জ্বালানী যেটা দিয়ে আমরা একটা বড় প্রোডাকশনে যেতে পারি কিন্তু এই কয়লাই হচ্ছে কার্বন ডাই অক্সাইডের সবচেয়ে বড় আধার। অনেকে আবার তখন বলে বসে তাহলে প্রাকৃতিক গ্যাস! প্রাকৃতিক গ্যাসে আসলেই কার্বনডাইঅক্সাইডের পরিমান কম আর অকটেন নম্বর বেশী থাকার কারনে অল্প ব্যাবহারেই বেশী বিটিইউ পাওয়া যায়। তবে সমস্যা থেকেই যায় এ গ্যাসের মধ্যে কার্বন সমৃদ্ধ গ্যাসের পরিমাণই বেশি (মিথেন, সালফার ইত্যাদি) আর দিন যাবে এর দামও বৃদ্ধি পাবে বিলুপ্তির সম্ভাবনা বাড়ার সাথে সাথে । আবার এখনতো আবার শোনা যাচ্ছে যে গ্যাস আছে আর যেরকম ব্যাবহার চলছে হয়তোবা বছর 10 এর মধ্যে সব গ্যাস হাওয়ায় উড়ে যাবে। তাহলে এসব দিয়ে পাওয়ার স্টেশনে ঢুকালে হয়তো গ্যাস শেষ হবার পর মানুষ গ্যাসের বদলে সব গাছ কেটে ইলিশ ভাজা খাবে।আর গ্রীন হাউস গ্যাস পাওয়ার স্টেশন ভিতর বাইর দুজায়গা থেকেই বেড়োবে আর পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র বলতে যেকোনো সচেতন নাগরিকই বুঝতে পারেন এটা সবসময়ই একটা লস প্রজেক্ট!তবে এই ফসিল ফুয়েল দিয়ে কাজ করলে প্রচুর পরিমাণে এরকম দূষন হবেই এবং ঠেকানো যাবে না যদিও বা এর উপর ট্যাক্স নেয়া হয়।

nuclear-power-plant.jpg
নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের ছবি

সেদিক দিয়ে নিউক্লিয়ার পাওয়ার স্টেশন একেবারেই নিরাপদ যদিও জনগন এখনো ভোলেনি সেই চেরোনোবিল বা থ্রীমাইল দ্বীপের দুর্ঘটনা।
আরেকটা পরিসংখ্যান দেই, 2050 সাল নাগাদ সারা বিশ্বে 160 শতাংশ ইলেক্ট্রিসিটির ব্যাবহার বেড়ে যাবে। এপরিমান বিদ্যুৎ চাহিদার জন্য যে কয়েক হাজার পাওয়ার স্টেশন বানাতে হবে তখন হয়তো আকাশে চোখ তুললে গ্রীন হাউস গ্যাসের স্তর দেখা যাবে। তবে 100 টা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বসালে এ সমস্যার একটা আশু সমাধান পাওয়া যাবে। আর সেক্ষেত্রে এর মূল্য খুবই কম থাকবে ওসব প্রাকৃতিক জ্বালানীর বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে 2000 সালের পর থেকে শুধু প্রাচ্যে 20000 মেগাওয়াটের বেশী বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে যেটা মূলত নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট থেকেই আসছে।

diablocanyon-northranch-april2007.jpg

এ ব্যাপারে 2003 সালে এমআইটির একটা স্ট্যাডিতে (The future of Nuclear Power) দেখা গেছে 2050সাল নাগাদ নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন তিনগুন বেড়ে 10 লক্ষ মেগাওয়াটে গিয়ে দাড়াবে, যেটা মূলত পৃথিবীর বায়ুমন্ডলকে প্রতিবছর 0.8 বিলিয়ন থেকে 1.8 বিলিয়ন টন কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদন থেকে বাচাবে সেটার উৎস যেটাই হোউক; গ্যাস বা কয়লা!এ হিসাবে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট অবশ্যই এই গ্রীন হাউস গ্যাসের হাত থেকে এ পৃথিবীকে বাচাতে পারবে যেটা হিসেব করলে দেখা যায় 700 কোটি টন কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস 2050 সাল নাগাদ!