কোরবানির কতদিন আগে চুল-নখ কাটতে হয়?

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৪:৪০:৫৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • ৭১৩ বার পড়া হয়েছে

মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানি সামনে রেখে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ঘুরপাক খায় অনেকের মনে—কোরবানির আগে কি চুল ও নখ কাটা যাবে? ইসলামিক শরিয়াহ অনুযায়ী, যারা কোরবানি দেওয়ার নিয়ত করেছেন, তাদের জন্য রয়েছে একটি নির্দিষ্ট বিধান।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর হাদিস অনুযায়ী, জিলহজ মাসের প্রথম দশদিনের মধ্যে কোরবানির নিয়ত করা ব্যক্তি চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকবেন।

সহীহ মুসলিম শরীফে বর্ণিত রয়েছে উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন জিলহজ মাসের দশদিন শুরু হয় এবং তোমাদের কেউ কোরবানি করতে চায়, তখন সে যেন তার চুল ও শরীরের কোনো অংশ না কাটে।’ (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ১৯৭৭)

এই নির্দেশনাটি মূলত কোরবানি করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এক ধরনের প্রস্তুতি ও আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রতীক।

কারা নিয়মে পড়বেন?

বিশেষজ্ঞ আলেমরা জানান, কেবল সেই ব্যক্তি, যিনি নিজে কোরবানি দিচ্ছেন বা যার পক্ষ থেকে কোরবানি হচ্ছে—এই নিয়ম তার জন্য প্রযোজ্য। পরিবারে অন্য কেউ যদি কোরবানি না দেন, তবে তার চুল-নখ কাটায় কোনো বাধা নেই।

কবে থেকে এই নিয়ম মানতে হবে?

এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয় ১ জিলহজ থেকে, অর্থাৎ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদের ১০ দিন আগে থেকে। এটি চলবে কোরবানি দেয়ার আগ পর্যন্ত। অর্থাৎ, পশু জবাইয়ের পর আবার চুল-নখ কাটতে কোনো বাধা নেই।

ইসলামী দৃষ্টিকোণে এর তাৎপর্য

ইসলামিক গবেষকগণ বলেন, এই আমল কোরবানির অনুভূতির গভীরতাকে প্রতিফলিত করে। যেহেতু হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাই এই সময়কালটি আত্মসংযম, আত্মত্যাগ ও ইবাদতের বিশেষ সময় হিসেবে গণ্য করা হয়।

কোরবানি শুধু একটি পশু জবাই নয়, বরং এটি আত্মত্যাগ, সংযম ও আল্লাহর নির্দেশের প্রতি আনুগত্যের প্রতীক। চুল ও নখ না কাটা এই শিক্ষা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের একটি প্রতীকী চর্চা, যা আমাদেরকে কোরবানির প্রকৃত তাৎপর্য স্মরণ করিয়ে দেয়।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কোরবানির কতদিন আগে চুল-নখ কাটতে হয়?

আপডেট সময় : ০৪:৪০:৫৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানি সামনে রেখে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ঘুরপাক খায় অনেকের মনে—কোরবানির আগে কি চুল ও নখ কাটা যাবে? ইসলামিক শরিয়াহ অনুযায়ী, যারা কোরবানি দেওয়ার নিয়ত করেছেন, তাদের জন্য রয়েছে একটি নির্দিষ্ট বিধান।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর হাদিস অনুযায়ী, জিলহজ মাসের প্রথম দশদিনের মধ্যে কোরবানির নিয়ত করা ব্যক্তি চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকবেন।

সহীহ মুসলিম শরীফে বর্ণিত রয়েছে উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন জিলহজ মাসের দশদিন শুরু হয় এবং তোমাদের কেউ কোরবানি করতে চায়, তখন সে যেন তার চুল ও শরীরের কোনো অংশ না কাটে।’ (সহীহ মুসলিম, হাদিস: ১৯৭৭)

এই নির্দেশনাটি মূলত কোরবানি করার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের এক ধরনের প্রস্তুতি ও আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রতীক।

কারা নিয়মে পড়বেন?

বিশেষজ্ঞ আলেমরা জানান, কেবল সেই ব্যক্তি, যিনি নিজে কোরবানি দিচ্ছেন বা যার পক্ষ থেকে কোরবানি হচ্ছে—এই নিয়ম তার জন্য প্রযোজ্য। পরিবারে অন্য কেউ যদি কোরবানি না দেন, তবে তার চুল-নখ কাটায় কোনো বাধা নেই।

কবে থেকে এই নিয়ম মানতে হবে?

এই নিষেধাজ্ঞা শুরু হয় ১ জিলহজ থেকে, অর্থাৎ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদের ১০ দিন আগে থেকে। এটি চলবে কোরবানি দেয়ার আগ পর্যন্ত। অর্থাৎ, পশু জবাইয়ের পর আবার চুল-নখ কাটতে কোনো বাধা নেই।

ইসলামী দৃষ্টিকোণে এর তাৎপর্য

ইসলামিক গবেষকগণ বলেন, এই আমল কোরবানির অনুভূতির গভীরতাকে প্রতিফলিত করে। যেহেতু হজরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাই এই সময়কালটি আত্মসংযম, আত্মত্যাগ ও ইবাদতের বিশেষ সময় হিসেবে গণ্য করা হয়।

কোরবানি শুধু একটি পশু জবাই নয়, বরং এটি আত্মত্যাগ, সংযম ও আল্লাহর নির্দেশের প্রতি আনুগত্যের প্রতীক। চুল ও নখ না কাটা এই শিক্ষা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের একটি প্রতীকী চর্চা, যা আমাদেরকে কোরবানির প্রকৃত তাৎপর্য স্মরণ করিয়ে দেয়।