বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশ ও মানুষের কল্যাণে যেসব মৌলিক অবদান রাখা প্রয়োজন, তা জাতির জন্য বাস্তবায়ন করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি কেবল একজন রাষ্ট্রপ্রধান নন, বরং এক স্বনির্ভর বাংলাদেশের রূপকার ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে সাদা দলের আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
“শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শিক্ষাদর্শন ও কর্মসূচি” শীর্ষক এ আয়োজনে অংশ নিয়ে রিজভী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেননি’। তিনি আরও বলেন, “জিয়াউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন, কিন্তু কখনোই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেননি। বরং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কথা মন দিয়ে শুনেছেন, যা গণতন্ত্রের প্রকৃত উদাহরণ।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষা, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি—সব ক্ষেত্রেই তিনি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করেছিলেন। আজ তাঁকে নিয়ে নানা কথা বলা হলেও, আন্তর্জাতিক মহলে তিনি একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে স্বীকৃত।”
রিজভীর ভাষ্য অনুযায়ী, জিয়াউর রহমানের গতিশীল কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে ফারাক্কা ইস্যু জাতিসংঘ পর্যন্ত গিয়েছিল। চীন এতে নিন্দা জানায় এবং জাতিসংঘও প্রতিবাদ জানায়, যা ছিল তাঁর আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক দক্ষতার প্রতিফলন।
তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান সবসময় দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতেন। তিনি ছিলেন চামচামিহীন, গণতান্ত্রিক চেতনায় উজ্জীবিত এক সত্যিকারের রাষ্ট্রনায়ক।”
রিজভী আরও বলেন, “জিয়া পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা কূটনৈতিকভাবে এবং স্ট্রিক্ট অ্যান্ড টেরর পদ্ধতিতে মোকাবিলা করেছিলেন। তিনি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সীমান্ত সুরক্ষায় কাজ করেছেন। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড রোধে তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”
তিনি ইঙ্গিত করে বলেন, “একদিকে জিয়াউর রহমান যেখানে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাসী ছিলেন, সেখানে আরেকজন সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে চারটি বাদে সব গণমাধ্যম বন্ধ করে বাকশাল কায়েম করেছিলেন।”
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সাদা দলের আহ্বায়ক ও ঢাবির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান।