শিরোনাম :
Logo বাংলাদেশকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ বানানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচ অভিযোগ আমলে নিল ট্রাইব্যুনাল Logo বাজেট উপস্থাপনের সময় পরিবর্তন Logo কুবির সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটির নিন্দা ও প্রতিবাদ Logo রোটারেক্ট ক্লাব অব এইচএসটিইউ এর নেতৃত্বে সিয়াম-নিলয় Logo চুয়াডাঙ্গায় গাফফার হত্যার বিচারের দাবিতে ট্রেন আটকে বিক্ষোভ Logo বিজিএমইএ সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় মাহমুদ হাসান খান বাবু জীবননগর উপজেলা বিএনপিসহ প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে অভিনন্দন Logo চুয়াডাঙ্গায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে ভারতীয় নাগরিক Logo বিচারহীনতায় বাড়ছে মানব পাচার, কার্যকর উদ্যোগ নেই সরকারের6 Logo এবার নেতাকর্মীদের যে বার্তা দিলেন জামায়াত আমির

নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিরতা

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:৫২ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
  • ৭১৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি, যদিও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ করেছেন। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি নির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ রূপরেখা ঘোষণা করেনি।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এসব সংলাপকে ফলপ্রসূ না বলে আখ্যায়িত করছে এবং একে নিয়মিত ও দায়সারা আলোচনা হিসেবে দেখছে। তাদের অভিযোগ, সরকার নির্বাচনের সময়সূচি বা কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এবং সংশ্লিষ্ট মহল সতর্ক করে বলছেন, এই অনির্দিষ্টতা চলতে থাকলে অস্থিরতা আরও বাড়বে। তাদের মতে, স্বচ্ছতা না থাকলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অনাস্থা আরও বাড়বে, যা রাজনৈতিক সংঘাতকে উসকে দিতে পারে।

দলীয় নেতারা বলছেন, সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে— এর অংশ হিসেবে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ এবং বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমান আচরণ নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকার যদি বিএনপির আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। প্রধান উপদেষ্টা নির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা করলে এবং রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি হলে এই অচলাবস্থা নিরসন সম্ভব।’

গত সপ্তাহজুড়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোর নিয়ে বিতর্ক, চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের দাবিতে আন্দোলন এবং এনসিপির নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠনের দাবিসহ বেশ কয়েকটি ইস্যু ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে।

একই সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে, যা জনজীবনে ভোগান্তি সৃষ্টি করছে।

এই পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস শনিবার ও রোববার দুই দিনব্যাপী রাজনৈতিক সংলাপে বসেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপিসহ কয়েকটি বড় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে।

শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিএনপির পক্ষে সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন নির্বাচনের সময়সীমা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্ধারণ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিনজন বিতর্কিত উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং নির্বাচন ও সংস্কার সংক্রান্ত একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান।

বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেননি। সরকার কোনো স্পষ্ট সিদ্ধান্ত দেয়নি। আমরা প্রেস সচিবের আনুষ্ঠানিক বিবৃতির পর আমাদের অবস্থান জানাবো।’

জামায়াত আমির শফিকুর রহমানও নির্বাচন ও সংস্কারের রোডম্যাপ দাবি করেন এবং দুইটি সম্ভাব্য সময়সূচির প্রস্তাব দেন— ফেব্রুয়ারি মাঝামাঝি অথবা রমজান মাসের পর।

তবে বিএনপির একাধিক নেতার মতে, সংলাপ প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং মূল সমস্যাগুলোই অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকে গেছে। দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি এক-দুই দিনের মধ্যেই তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

সূত্রগুলো জানায়, বিএনপি আপাতত আন্দোলনে না গেলেও সরকারের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ও রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি চালাবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মানুষ চায় একটা নির্দিষ্ট রোডম্যাপ। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের তারিখ ও মাস স্পষ্ট করে বলুন। তার দায়িত্বের জায়গা থেকে এখনই ঘোষণা দেওয়া উচিত।’

গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘সরকার যখন নির্বাচন নিয়ে কিছু বলে না, তখন মানুষ সন্দেহে পড়ে। এই সন্দেহ থেকেই জন্ম নেয় বিশৃঙ্খলা।’

রোববার একটি অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তিহীন যেকোনো পরিকল্পনা ব্যর্থ হবেই।

বিএনপির মিত্র দল ও বামপন্থি জোটগুলোও ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন এবং বিস্তারিত রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে।

সংলাপে অংশ নেওয়া অন্তত পাঁচটি রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, বৈঠকগুলো ফলপ্রসূ ছিল না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সরকার কোনো নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি— না নির্বাচনের সময়সূচি, না সংস্কারের রূপরেখা।

তারা সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন, যাতে বিতর্কিত সদস্যদের বাদ দিয়ে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা যায়।

লেফট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) রোববার এক লিখিত বিবৃতিতে সরকারের দেরিতে সংস্কার, গণহত্যা বিচার প্রক্রিয়া স্থবির রাখা এবং নিজ এখতিয়ারের বাইরে সিদ্ধান্ত নেওয়াকে বর্তমান সংকটের জন্য দায়ী করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার ২০২৪ সালের গণহত্যা বিচার দৃশ্যমান করুক, ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন করে একটি নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক।’

এছাড়াও এলডিএ অভিযোগ করে, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছে এবং একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর পক্ষ অবলম্বন করছে— যা সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, সরকার যদি নির্দিষ্ট নির্বাচন রোডম্যাপ ঘোষণা না করে, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে সংশয়ে থাকবে।

তারা বলেন, সরকারকে অবশ্যই রাজনৈতিক দল এবং ভোটারদের কাছে নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে— যেন নির্বাচনকে ঘিরে পক্ষপাতিত্বের কোনো অভিযোগ না থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশ্লেষক মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘সরকার রাখাইন করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যুর মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ না করে বড় ভুল করেছে।’

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকার যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে সামরিক বা আধাসামরিক সরকার ক্ষমতা নিতে পারে— যা ভারতের ও আওয়ামী লীগের জন্য লাভজনক হলেও দেশের জন্য হবে মারাত্মক ক্ষতিকর।’

 

ট্যাগস :

বাংলাদেশকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ বানানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিরতা

আপডেট সময় : ১১:৪৬:৫২ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অনিশ্চয়তা এখনও কাটেনি, যদিও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ করেছেন। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য একটি নির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ রূপরেখা ঘোষণা করেনি।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এসব সংলাপকে ফলপ্রসূ না বলে আখ্যায়িত করছে এবং একে নিয়মিত ও দায়সারা আলোচনা হিসেবে দেখছে। তাদের অভিযোগ, সরকার নির্বাচনের সময়সূচি বা কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এবং সংশ্লিষ্ট মহল সতর্ক করে বলছেন, এই অনির্দিষ্টতা চলতে থাকলে অস্থিরতা আরও বাড়বে। তাদের মতে, স্বচ্ছতা না থাকলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও অনাস্থা আরও বাড়বে, যা রাজনৈতিক সংঘাতকে উসকে দিতে পারে।

দলীয় নেতারা বলছেন, সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে— এর অংশ হিসেবে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের অপসারণ এবং বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমান আচরণ নিশ্চিত করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকার যদি বিএনপির আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। প্রধান উপদেষ্টা নির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা করলে এবং রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি হলে এই অচলাবস্থা নিরসন সম্ভব।’

গত সপ্তাহজুড়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোর নিয়ে বিতর্ক, চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের দাবিতে আন্দোলন এবং এনসিপির নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠনের দাবিসহ বেশ কয়েকটি ইস্যু ঘিরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে।

একই সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে, যা জনজীবনে ভোগান্তি সৃষ্টি করছে।

এই পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস শনিবার ও রোববার দুই দিনব্যাপী রাজনৈতিক সংলাপে বসেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপিসহ কয়েকটি বড় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে।

শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিএনপির পক্ষে সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন নির্বাচনের সময়সীমা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্ধারণ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিনজন বিতর্কিত উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং নির্বাচন ও সংস্কার সংক্রান্ত একটি নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান।

বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা দেননি। সরকার কোনো স্পষ্ট সিদ্ধান্ত দেয়নি। আমরা প্রেস সচিবের আনুষ্ঠানিক বিবৃতির পর আমাদের অবস্থান জানাবো।’

জামায়াত আমির শফিকুর রহমানও নির্বাচন ও সংস্কারের রোডম্যাপ দাবি করেন এবং দুইটি সম্ভাব্য সময়সূচির প্রস্তাব দেন— ফেব্রুয়ারি মাঝামাঝি অথবা রমজান মাসের পর।

তবে বিএনপির একাধিক নেতার মতে, সংলাপ প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং মূল সমস্যাগুলোই অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকে গেছে। দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি এক-দুই দিনের মধ্যেই তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

সূত্রগুলো জানায়, বিএনপি আপাতত আন্দোলনে না গেলেও সরকারের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ও রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি চালাবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মানুষ চায় একটা নির্দিষ্ট রোডম্যাপ। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের তারিখ ও মাস স্পষ্ট করে বলুন। তার দায়িত্বের জায়গা থেকে এখনই ঘোষণা দেওয়া উচিত।’

গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘সরকার যখন নির্বাচন নিয়ে কিছু বলে না, তখন মানুষ সন্দেহে পড়ে। এই সন্দেহ থেকেই জন্ম নেয় বিশৃঙ্খলা।’

রোববার একটি অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, স্বচ্ছতা ও রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তিহীন যেকোনো পরিকল্পনা ব্যর্থ হবেই।

বিএনপির মিত্র দল ও বামপন্থি জোটগুলোও ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন এবং বিস্তারিত রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে।

সংলাপে অংশ নেওয়া অন্তত পাঁচটি রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, বৈঠকগুলো ফলপ্রসূ ছিল না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সরকার কোনো নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি— না নির্বাচনের সময়সূচি, না সংস্কারের রূপরেখা।

তারা সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছেন, যাতে বিতর্কিত সদস্যদের বাদ দিয়ে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা যায়।

লেফট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) রোববার এক লিখিত বিবৃতিতে সরকারের দেরিতে সংস্কার, গণহত্যা বিচার প্রক্রিয়া স্থবির রাখা এবং নিজ এখতিয়ারের বাইরে সিদ্ধান্ত নেওয়াকে বর্তমান সংকটের জন্য দায়ী করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার ২০২৪ সালের গণহত্যা বিচার দৃশ্যমান করুক, ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন করে একটি নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক।’

এছাড়াও এলডিএ অভিযোগ করে, সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছে এবং একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর পক্ষ অবলম্বন করছে— যা সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, সরকার যদি নির্দিষ্ট নির্বাচন রোডম্যাপ ঘোষণা না করে, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে সংশয়ে থাকবে।

তারা বলেন, সরকারকে অবশ্যই রাজনৈতিক দল এবং ভোটারদের কাছে নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে— যেন নির্বাচনকে ঘিরে পক্ষপাতিত্বের কোনো অভিযোগ না থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও বিশ্লেষক মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘সরকার রাখাইন করিডোর ও চট্টগ্রাম বন্দর ইস্যুর মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ না করে বড় ভুল করেছে।’

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকার যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে সামরিক বা আধাসামরিক সরকার ক্ষমতা নিতে পারে— যা ভারতের ও আওয়ামী লীগের জন্য লাভজনক হলেও দেশের জন্য হবে মারাত্মক ক্ষতিকর।’