বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সভাপতি মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যার বিচার, বিচার চাইতে গিয়ে গ্রেফতার হওয়া ২১জন ছাত্র-যুবকের নি:শর্ত মুক্তি, মানবিক করিডোর এবং বিতর্কিত নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট বাতিলের দবিতে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চাঁদপুর জেলা শাখা। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের কাছে এই স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।
সোমবার (১২ মে ) দুপুরে ছাত্রসেনা চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মো. কামরুল হাসান বাবুর নেতৃত্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের হাতে এই স্মারকলিপি তুলে দেন। সাথে ছিলেন ছাত্রসেনা চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাফেজ শাহাদাত হোসেন জাহিদসহ নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়- গত ২৬ এপ্রিল ২০২৫ খ্রি: ঢাকায় সর্বস্তরের সুন্নি জনতার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত মুভমেন্ট ফর এ ফ্রি প্যালেস্টাইন কর্মসূচিতে মুসল্লি সমবেত উপস্থিত হয়েছিলেন বিধায় গাজীপুরে মাওলানা রইছ উদ্দিনের মসজিদের সুন্নি মতাদর্শের বিরোধী পক্ষ বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। তারা মতাদর্শগত বিরোধকে নৈপথ্যে রেখে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সভাপতি, গাজীপুর কাপাসিয়া আখলাদুল জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিব মাওলানা রইস উদ্দিনকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মব তৈরি করে নির্মমভাবে প্রহার করে। পরবর্তীতে ২৮ এপ্রিল ২০২৫ খ্রি: কারাগারে পুলিশ হাজতে বিনা চিকিৎসায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। গত ৫ মে ২০২৫ সোমবার সকাল ৯ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার আহ্বানে সারাদেশে ১৫০টি স্পটের মধ্যে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। তার মধ্যে ৪টি স্পটে ছাত্রসেনার নেতা কর্মীদের উপর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হামলা করে শতাধিক নেতা-কর্মীকে আহত করে। অবরোধ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর তথাকথিত ঘটনা দেখিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা, যুবসেনা ও ইসলামী ফ্রন্টের ২১জন নেতা-কর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আমাদের দাবি হচ্ছে শহীদ মাওলানা রইস উদ্দিন হত্যার সাথে জড়িত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
মানবিক করিডোর বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে- অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকার যদি করিডোরের নামে রাখাইনের বিদ্রোহীদের সঙ্গে সমঝোতা করে মায়ানমারের সার্বভৌমত্বকে উপেক্ষা করে নেয়, তাহলে বাংলাদেশে সরাসরি এক বিপজ্জনক যুদ্ধ জটিলতায় জড়িয়ে পড়তে পারে। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত প্রতিবেদন সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী। এ ধরনের নীতিমালা দেশে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করতে পারে। বর্তমান নারী সংস্কার কমিশন বাতিল করে যোগ্য আলেম, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদগণের সমন্বয়ে নারী সংস্কার কমিশন পুনর্গঠন করা দেশের স্বার্থে খুব প্রয়োজন।
আমরা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রেখে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থা দেখতে চাই। জুলাই বিপ্লবের চরিত্রের উপর আঘাত করা কোনো ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ পুনরায় দেখতে চায় না দেশের সাধারণ জনগণ।
ছবির ক্যাপশন: চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি হস্তান্তর করছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার নেতৃবৃন্দ।