চুয়াডাঙ্গায় আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)-এর উদ্যোগে একটি বিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকাল ৪টায় শহরের হোটেল ভিআইপিতে এই সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা এবি পার্টির আহবায়ক আলমগীর হোসেন।
বক্তারা বলেন, এবি পার্টি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে এবং আগামী দিনের রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। দলকে তৃণমূল পর্যন্ত আরও সংগঠিত ও শক্তিশালী করতে সদস্যদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।
সভায় চুয়াডাঙ্গা জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। প্রাণবন্ত আলোচনার মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম আরও গতিশীল করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ তার বক্তব্যই বলেন,
আজকের এই সময়ে এসে আমরা দেখতে পাচ্ছি, দেশের রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরে গেছে।
এই চেয়ার শুধু মেরামত করলে হবে না — এখন সময় হয়েছে চেয়ারটাই পরিবর্তন করার।
কারণ, রাজনীতি যদি জনগণের কল্যাণে না আসে, তবে সে রাজনীতির কোনো মূল্য নেই।
আমরা চাই, আমার দেশের কৃষক, জেলে, দিনমজুর — নিরলস পরিশ্রম করা প্রতিটি মানুষ যেন রাষ্ট্রের সঠিক সেবা পায়। শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি সহ প্রতিটি খাতে যেন সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
আজ আমি চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন সমস্যা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম, শিক্ষার অবনতি ও অবকাঠামো উন্নয়নে দুর্নীতি উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। সাধারণ মানুষ এখনো ন্যায্য সেবা থেকে বঞ্চিত।
বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গার পানি সংকট নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
মাথাভাঙ্গা নদীসহ জেলার অনেক নদী শুকিয়ে যাচ্ছে।
অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, নদী দখল ও দূষণের কারণে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। নদী বাঁচাতে হলে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নদী না বাঁচলে কৃষি এবং জনজীবনও হুমকির মুখে পড়বে।
আমরা নদী ও পানির ন্যায্য অধিকার রক্ষায় সোচ্চার থাকবো।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন,
“বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন ইউনুস সরকার কিছু সম্ভাবনাময় অগ্রগতি দেখিয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
সম্পূর্ণ পরিমাণ রেমিট্যান্স আসতে শুরু করেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।
এই পরিবর্তন দীর্ঘদিন পরে দেখতে পাচ্ছি, যা আমাদের আশাবাদী করে তুলেছে।”
তিনি আরও বলেন,
“সংস্কার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন — সবই প্রয়োজন।
ইউনুস সরকার যেহেতু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই এই বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে, আমরা আশাবাদী তিনি তার কথা রাখবেন।
দেশের জন্য একটি টেকসই গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হবে — এই প্রত্যাশাই আমাদের।”