১০ বছর সন্তানের লাশ বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন মা !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১২:৩১:৪৩ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০১৭
  • ৭৪১ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

নিজের সন্তানের মৃত্যুর পর তার লাশ ১০ বছর নিজ বাড়িতেই আগলে রেখেছিল মা। শিশুটির মা সবাইকে জানিয়েছিলেন, তার সন্তান বাবার কাছে আছে। বাবা অন্যদের জানিয়েছিলেন, তাদের মায়ের কথা। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিবিসি।

লন্ডনের এক বাড়িতে বাস করতেন ভিক্টোরিয়া-গেইল। সন্তান হওয়ার কিছুদিন পরেই তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। এরপর তাদের সন্তানেরও মৃত্যু ঘটে। তবে সন্তানের মৃত্যুর খবর গোপন করে রেখেছিলেন তারা দীর্ঘ ১০ বছর।

শিশুটির মৃত্যু হয় ২০০৫ সালে। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল এক বছরের কিছু বেশি। জন্মের পর অন্যান্য শিশুর মতোই তার রেজিস্ট্রেশন করা হয় সরকারের দপ্তরে। ঘটনার প্রায় ১০ বছর পর ২০১৫ সালে অন্য একটি ঘটনায় কাইজার গেইলের দুই বছর বয়সী আরেকটি কন্যাসন্তানের মৃত্যু হয়। সে সময় একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানা যায়, শিশুটি একটি ব্যাটারি গিলে ফেলেছিল। তবে এ সময় তার অন্য সন্তান কোথায়, এ প্রশ্ন ওঠে। পুলিশ বিষয়টি তদন্তের জন্য স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডে ট্রান্সফার করে।

এরপর ঘটনার বিবরণ প্রকাশ পায়। এতে জানা যায়, এক দশক আগে মৃত শিশুটির কোনো তথ্যই কেউ জানে না। তার মা শিশুটি বাবার কাছে আছে বলে দাবি করে। কিন্তু বাবাও এ বিষয়ে কিছু জানে না বলে জানায়। এমনকি শিশুটির ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কোনো মেডিকেল রেকর্ড ছিল না। স্কুলে ভর্তিরও কোনো রেকর্ড ছিল না। ফলে বিষয়টি তদন্তকারীদের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করে।

এরপর জেরার মুখে কাইজার গেইল স্বীকার করেন তিনি শিশুটির দেখাশোনা করেছিলেন পাঁচ মাস। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ নেই। কিন্তু এরপর তার মা আসে এবং শিশুটিকে নিয়ে যেতে চায়। তিনি তাকে শিশুটি দিয়ে দেন।

তবে তার মা জানান, তিনি শিশুটিকে বাবার কাছেই দিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর আর কোনো খবর নেননি। শিশুটি বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে, তাও তিনি খবর নেননি।

ঘটনাটি প্রকাশ পায় তখনই যখন তিনি তার বাড়ি পরিবর্তন করেন। ওই নারী তার বাড়ি পরিবর্তনের সময় তার স্টোর রুমে শিশুটির লাশ পাওয়া যায়। ১০ বছর ধরে এভাবে থাকার ফলে এখন অতি সামান্য অংশই অবশিষ্ট আছে।
এরপর পুলিশের জেরার মুখে শিশুটির মা স্বীকার করেন, শিশুটি হঠাৎ করেই একদিন মারা যায়। এরপর থেকে তিনি তার লাশ সেখানেই ঢেকে রেখে দিয়েছিলেন।

কিন্তু কেন তিনি শিশুটির লাশ ওভাবে রেখে দিলেন? এ প্রশ্নে সে নারী জানিয়েছেন অন্যরা যদি শিশুটির মৃত্যুর জন্য তাকে দায়ী করে সেজন্য তিনি তার মৃত্যুর খবর কাউকে জানাননি।

ময়নাতদন্তে শিশুটির অপুষ্টির লক্ষণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

১০ বছর সন্তানের লাশ বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন মা !

আপডেট সময় : ১২:৩১:৪৩ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

নিজের সন্তানের মৃত্যুর পর তার লাশ ১০ বছর নিজ বাড়িতেই আগলে রেখেছিল মা। শিশুটির মা সবাইকে জানিয়েছিলেন, তার সন্তান বাবার কাছে আছে। বাবা অন্যদের জানিয়েছিলেন, তাদের মায়ের কথা। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিবিসি।

লন্ডনের এক বাড়িতে বাস করতেন ভিক্টোরিয়া-গেইল। সন্তান হওয়ার কিছুদিন পরেই তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। এরপর তাদের সন্তানেরও মৃত্যু ঘটে। তবে সন্তানের মৃত্যুর খবর গোপন করে রেখেছিলেন তারা দীর্ঘ ১০ বছর।

শিশুটির মৃত্যু হয় ২০০৫ সালে। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল এক বছরের কিছু বেশি। জন্মের পর অন্যান্য শিশুর মতোই তার রেজিস্ট্রেশন করা হয় সরকারের দপ্তরে। ঘটনার প্রায় ১০ বছর পর ২০১৫ সালে অন্য একটি ঘটনায় কাইজার গেইলের দুই বছর বয়সী আরেকটি কন্যাসন্তানের মৃত্যু হয়। সে সময় একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানা যায়, শিশুটি একটি ব্যাটারি গিলে ফেলেছিল। তবে এ সময় তার অন্য সন্তান কোথায়, এ প্রশ্ন ওঠে। পুলিশ বিষয়টি তদন্তের জন্য স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডে ট্রান্সফার করে।

এরপর ঘটনার বিবরণ প্রকাশ পায়। এতে জানা যায়, এক দশক আগে মৃত শিশুটির কোনো তথ্যই কেউ জানে না। তার মা শিশুটি বাবার কাছে আছে বলে দাবি করে। কিন্তু বাবাও এ বিষয়ে কিছু জানে না বলে জানায়। এমনকি শিশুটির ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কোনো মেডিকেল রেকর্ড ছিল না। স্কুলে ভর্তিরও কোনো রেকর্ড ছিল না। ফলে বিষয়টি তদন্তকারীদের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করে।

এরপর জেরার মুখে কাইজার গেইল স্বীকার করেন তিনি শিশুটির দেখাশোনা করেছিলেন পাঁচ মাস। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ নেই। কিন্তু এরপর তার মা আসে এবং শিশুটিকে নিয়ে যেতে চায়। তিনি তাকে শিশুটি দিয়ে দেন।

তবে তার মা জানান, তিনি শিশুটিকে বাবার কাছেই দিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর আর কোনো খবর নেননি। শিশুটি বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে, তাও তিনি খবর নেননি।

ঘটনাটি প্রকাশ পায় তখনই যখন তিনি তার বাড়ি পরিবর্তন করেন। ওই নারী তার বাড়ি পরিবর্তনের সময় তার স্টোর রুমে শিশুটির লাশ পাওয়া যায়। ১০ বছর ধরে এভাবে থাকার ফলে এখন অতি সামান্য অংশই অবশিষ্ট আছে।
এরপর পুলিশের জেরার মুখে শিশুটির মা স্বীকার করেন, শিশুটি হঠাৎ করেই একদিন মারা যায়। এরপর থেকে তিনি তার লাশ সেখানেই ঢেকে রেখে দিয়েছিলেন।

কিন্তু কেন তিনি শিশুটির লাশ ওভাবে রেখে দিলেন? এ প্রশ্নে সে নারী জানিয়েছেন অন্যরা যদি শিশুটির মৃত্যুর জন্য তাকে দায়ী করে সেজন্য তিনি তার মৃত্যুর খবর কাউকে জানাননি।

ময়নাতদন্তে শিশুটির অপুষ্টির লক্ষণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।