সিলেটের এমসি কলেজের এক শিক্ষার্থীর উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে আওয়ামী দোসরদের বিচার ও তাদের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরা। আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু এবং বিভিন্ন মোড় প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের মূল ফটকে সমবেত হন তারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার সমন্বয়ক এস.এম সুইট। এছাড়াও সহ সমন্বয়ক ইয়াসুর কবীর, মোঃ জাকারিয়া, গোলাম রব্বানীসহ অন্যান্য সদস্য ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভ মিছিল চলাকালীন জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে; লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে, দিয়েছি তো রক্ত আরো দেব রক্ত; আবু সাঈদ মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ; আমার ভাইয়ের উপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই; এমসি কলেজে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই; হই হই রই রই, ফ্যাসিবাদ তুই গেলি কই; আর নয় হেলাফেলা, এবার হবে ফাইনাল খেলা; সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না; সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না; সহ নানা স্লোগান দেন তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার অন্যতম সহ সমন্বয়ক ইয়াসুর কবীর বলেন, আমরা দেখেছি ক্যাম্পাসে আওয়ামী দোসরা এখন নিজস্ব পদে বহাল রয়েছে। আমরা চাই তাই তাদের অতি দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক। এছাড়াও আওয়ামী লীগের আমলে যেসব অযোগ্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করে সৎ, যোগ্য ও মেধাবীদের নিয়োগ দেওয়া হোক। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি আওয়ামী লীগের আমলে যেসব নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছে তার একটি শ্বেতপত্র শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসীদের কোনো দল-মত হয় না, সন্ত্রাসীদের আসল পরিচয় তারা সন্ত্রাসী সেটা সিলেটের এমসি কলেজর হউক আর কুয়েট হউক। সকল সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশ সমাপনী বক্তব্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস.এম সুইট বলেন, আজকে বই খাতা ছেড়ে রাতে প্রশাসন সামনে আসার কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী সরকার যেমন বিনা ভোটে এমপি তৈরি করে ছিল তেমনি কিছু বুদ্ধিজীবী তৈরি করে ছিল যারা ২০১৮ সালের নির্বাচন এবং জুলাইয়ের গণহত্যাকে সমর্থন দিয়েছিল। এর মধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু শিক্ষক কর্মকর্তা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন নতুন প্রশাসন আসে আমরা সেদিনই বলেছি তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে কিন্তু তারা বলেছিল একাডেমিক কাজের উপর দৃষ্টি রেখে ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ৬-৭ মাস পেরিয়েও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। আজ আওয়ামী দোসরা ঠিক আগের মতোই দাঁত কেলিয়ে হাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে যা প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য। আমরা চাই অনতিবিলম্বে বিগত ১৬ বছরে যেসব অনিয়ম দুর্নীতি করেছে সব বিষয়ের উপর শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। সেই সাথে যারা কুয়েট এবং সিলেট এমসি কলেজের শিক্ষার্থীর উপর হামলা করেছে সন্ত্রাসী ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন যেই দলমতের হোক না কেন আমরা তাদের চিনতে চাই না দেশের প্রশাসন কাছে অতি দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তি আওতায় আনা হোক। যেখানে অন্যায় অবিচার, বৈষম্য সেখানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শিক্ষার্থীরা একসাথে কাঁধে কাঁধ রেখে লড়বো।