শিরোনাম :
Logo মৃত্যুদণ্ড বজায় রেখে গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন Logo সিরাজদিখানে মরহুম হাজী জয়নাল আবেদীন মাষ্টার স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের দুটি ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত Logo ঢাকায় হামলার প্রতিবাদে খুবিতে প্রকৌশল অধিকার দাবিতে মানববন্ধন Logo চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন প্রবাসফেরত ইসমাইল হোসেন Logo চিত্রা-নড়াইল জেলা ছাত্রকল্যাণ ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে আরমান ও বোরহান Logo চাঁদপুর সদরের জনবান্ধব ইউএনও সাখাওয়াত জামিল সৈকতকে লক্ষ্মীপুরের এডিসি পদে বদলী Logo বেরোবিতে ভর্তি পরীক্ষার আসন বরাদ্দে অনিময়ের অভিযোগ ; প্রশাসন বলছে শিক্ষার্থীদের বুঝার ভুল Logo প্রকাশিত হয়েছে কবি ও কথাসাহিত্যিক নুরুন্নাহার মুন্নির সাহিত্য পত্রিকা ‘আখ্যান’ Logo পলাশবাড়ী পৌর এলাকায় জমি জবর দখলের অভিযোগ Logo প্রবাসফেরত ইসমাইলের পাশে দাঁড়ালেন এনসিপি নেতা ডা. আরিফুল ইসলাম

মিথ্যা মামলা থেকে খালাস পেলেন চুয়াডাঙ্গার দুই সাংবাদিক

  • আপডেট সময় : ১০:৫৪:০২ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ৭৪৬ বার পড়া হয়েছে

সাকিব আল হাসান :
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মিথ্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন স্থানীয় দৈনিক পশ্চিমাঞ্চলের চিফ রিপোর্টার ও জাতীয় দৈনিক ঢাকা টাইমসের চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি আহসান আলম এবং মোহনা টেলিভিশনের চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি সাইফ জাহান।

মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারি) খুলনা বিভাগীয় সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মুমিনুন নেছা বেগম তাদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন। এই মামলায় আদালত বাদী ও ৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় দেন।

এদিকে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ ভোগান্তির পর বেকসুর খালাস পাওয়ায় সাংবাদিক আহসান আলম ও সাইফ জাহানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে হঠাৎ তাদেরকে শুভেচ্ছা জানান সহকর্মীরা।

মামলা সুত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে স্থানীয় একটি দৈনিক ও একটি অনলাইনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের এমএসআর প্রজেক্টে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার ওষুধ ক্রয়ে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হয়। মূলত ২০২০ সালের জুনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ চার উপজেলার জন্য মহামারির সময় জরুরি ওষুধ, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও সার্জিক্যাল মালামাল ক্রয়ে ১১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, বরাদ্দের টাকা আসার পর চুয়াডাঙ্গার তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবীরকে প্রধান করে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন। ওই বোর্ড স্থানীয়ভাবে ঠিকাদারের মাধ্যমে কেনাকাটা শেষে সবকিছু বুঝে নিয়ে বিল পরিশোধের জন্য জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে পাঠায়। এই কেনাকাটায় চরম অনিয়ম হয়েছে বলে ২০২০ সালের ২৮ জুন প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, দুই কোটি ৭৫ লাখ টাকার মালামাল ক্রয় করা হয়েছে। সাড়ে চার কোটি টাকার কোনো ওষুধই কেনা হয়নি।

ওই প্রতিবেদনের জের ধরে ২০২০ সালের ১ জুলাই তৎকালীন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শামীম কবীর বাদী হয়ে দুই সংবাদকর্মীর নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা করেন। সেই মামলাটিই খুলনা বিভাগীয় সাইবার ক্রাইম আদালতে দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার সাংবাদিক আহসান আলম ও সাইফ জাহানকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মুমিনুন নেছা বেগম।

মামলার বিবাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মোফাজ্জেল আলম বন্দ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলাটিতে বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ শুনানি করেছে। বাদী এবং ৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। পরিশেষে মঙ্গলবার বিবাদীদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।’

সাংবাদিক আহসান আলম ও সাইফ জাহান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে পাঁচ বছর আমাদেরকে ভোগান্তির মধ্যে রাখা হয়েছিল। এই মামলার ভোগান্তি আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে বাধাগ্রস্ত করেছিল। নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তবে আমাদের বিশ্বাস ছিল, এই মামলা থেকে আমরা বেকসুর খালাস পাবো।

তারা আরও বলেন, আমরা জনগণের কল্যাণে অনিয়ম তুলে ধরেছিলাম সংবাদ প্রকাশ করে। জনস্বার্থেই আমরা কাজ করি। আমরা কোনো অন্যায় করিনি। তবুও আমাদের কত দিক থেকে হয়রানি করা হয়েছে। আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া, আমাদের এই ঝামেলা আল্লাহ উদ্ধার করেছেন। এবং সম্মানের সাথেই উদ্ধার করেছেন।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মৃত্যুদণ্ড বজায় রেখে গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

মিথ্যা মামলা থেকে খালাস পেলেন চুয়াডাঙ্গার দুই সাংবাদিক

আপডেট সময় : ১০:৫৪:০২ পূর্বাহ্ণ, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সাকিব আল হাসান :
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মিথ্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন স্থানীয় দৈনিক পশ্চিমাঞ্চলের চিফ রিপোর্টার ও জাতীয় দৈনিক ঢাকা টাইমসের চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি আহসান আলম এবং মোহনা টেলিভিশনের চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি সাইফ জাহান।

মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারি) খুলনা বিভাগীয় সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মুমিনুন নেছা বেগম তাদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন। এই মামলায় আদালত বাদী ও ৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় দেন।

এদিকে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ ভোগান্তির পর বেকসুর খালাস পাওয়ায় সাংবাদিক আহসান আলম ও সাইফ জাহানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে হঠাৎ তাদেরকে শুভেচ্ছা জানান সহকর্মীরা।

মামলা সুত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে স্থানীয় একটি দৈনিক ও একটি অনলাইনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের এমএসআর প্রজেক্টে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার ওষুধ ক্রয়ে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হয়। মূলত ২০২০ সালের জুনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ চার উপজেলার জন্য মহামারির সময় জরুরি ওষুধ, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও সার্জিক্যাল মালামাল ক্রয়ে ১১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, বরাদ্দের টাকা আসার পর চুয়াডাঙ্গার তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবীরকে প্রধান করে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন। ওই বোর্ড স্থানীয়ভাবে ঠিকাদারের মাধ্যমে কেনাকাটা শেষে সবকিছু বুঝে নিয়ে বিল পরিশোধের জন্য জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে পাঠায়। এই কেনাকাটায় চরম অনিয়ম হয়েছে বলে ২০২০ সালের ২৮ জুন প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, দুই কোটি ৭৫ লাখ টাকার মালামাল ক্রয় করা হয়েছে। সাড়ে চার কোটি টাকার কোনো ওষুধই কেনা হয়নি।

ওই প্রতিবেদনের জের ধরে ২০২০ সালের ১ জুলাই তৎকালীন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শামীম কবীর বাদী হয়ে দুই সংবাদকর্মীর নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা করেন। সেই মামলাটিই খুলনা বিভাগীয় সাইবার ক্রাইম আদালতে দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার সাংবাদিক আহসান আলম ও সাইফ জাহানকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মুমিনুন নেছা বেগম।

মামলার বিবাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মোফাজ্জেল আলম বন্দ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলাটিতে বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ শুনানি করেছে। বাদী এবং ৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। পরিশেষে মঙ্গলবার বিবাদীদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।’

সাংবাদিক আহসান আলম ও সাইফ জাহান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে পাঁচ বছর আমাদেরকে ভোগান্তির মধ্যে রাখা হয়েছিল। এই মামলার ভোগান্তি আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে বাধাগ্রস্ত করেছিল। নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তবে আমাদের বিশ্বাস ছিল, এই মামলা থেকে আমরা বেকসুর খালাস পাবো।

তারা আরও বলেন, আমরা জনগণের কল্যাণে অনিয়ম তুলে ধরেছিলাম সংবাদ প্রকাশ করে। জনস্বার্থেই আমরা কাজ করি। আমরা কোনো অন্যায় করিনি। তবুও আমাদের কত দিক থেকে হয়রানি করা হয়েছে। আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া, আমাদের এই ঝামেলা আল্লাহ উদ্ধার করেছেন। এবং সম্মানের সাথেই উদ্ধার করেছেন।’