শিরোনাম :
Logo অসুস্থ স্ত্রীর জন্য দোয়া চাইলেন সাতক্ষীরা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শেখ শরিফুজ্জামান সজিব Logo ঝিনাইদহে দীর্ঘ ২৩ বছর পর পৈত্রিক জমি ফিরে পেলেন সাবেক প্রকৌশলী Logo বর্ণাঢ্য আয়োজনে চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন Logo অছাত্র ও ছাত্রলীগের দোসর দিয়ে কমিটি গঠনের প্রতিবাদে শহিদ স্মৃতি কলেজে ছাত্রদলের মানববন্ধন Logo বিচারহীনতার প্রতিবাদে ইবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মিছিল Logo নাব্যতা হারিয়ে ঝালকাঠির খরশ্রোতা বাসন্ডা নদী খালে পরিনত হচ্ছে, খননের দাবী এলাকাবাসীর Logo এফডিসির গেইটে রান্না করে গোয়ার সিনেমার প্রচার,নজির গড়লেন নায়ক রাসেল মিয়া Logo কবি জীবনানন্দ দাশ স্মরণে প্যাপিরাস পাঠাগারের সাহিত্য আড্ডা Logo বুটেক্সে অনুষ্ঠিত হলো জেনরা ফ্যাশন ওডিসি ২০২৫ Logo চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ৩১ বাংলাদেশী নারী-পুরুষ, শিশুকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ

পানির নীচে মাঠের পর মাঠ, খাল সংস্কারের দাবি

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১২:৫৩:৩৩ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭৭৬ বার পড়া হয়েছে

টানা ভারি বর্ষণে ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে মৌসুমি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষকের শত শত জমির মাসকলাই, শাকসবজি ও পাকা ধানখেত তলিয়ে গেছে। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের ফলে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি। যার কারণে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে মাঠের পর মাঠ ফসল পানিতে ডুবে আছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার চাষি।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের বংকিরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ডুবে আছে মাঠের পর মাঠ। পাঁকা ধান, মরিচখেত, বেগুন, সেচ পাম্পসহ হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল পানির নিচে। পাতা কপি, ফুল কপি, মরিচ গাছগুলো মরে নেতিয়ে পড়েছে। কলাগাছ ভেঙে পড়ে আছে।

গ্রামবাসী জানায়, জীবনা গ্রাম থেকে রাঙ্গিয়ারপোতা পর্যন্ত দীর্ঘ কাজল খালটি সংস্কার করা হলে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হতো। মধুহাটি, সাগান্না ও হলিধানী ইউনিয়নের মাঠেও এমন জলাবদ্ধতা দেখা মিলেছে। সদর উপজেলার ডাকবাংলা, রাঙ্গিয়ারপোতা, নাথকুন্ডু, ডহরপুকুর, বাথপুকুর, বেজিমারা, মামুনশিয়া, চোরকোল, বেড়াশুলা, সাধুহাটির সাইভাঙ্গার বিল ও পোতাহাটির কুড়ির মাঠ পানিতে ডুবে আছে।

বংকিরা গ্রামের কৃষক ইছানুল হক বিশ^াস জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবনা গ্রামের কিছু লোক বাঁধ দেওয়ার কারণে তার গ্রামের এক হাজার বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। তিনি বংকিরা গ্রামে বিএডিসি কর্তৃক খননকৃত কাজল খালটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, খালটি খনন না করা হলে শীত মৌসুমেও ধান চাষাবাদ করতে পারবেন না।

এদিকে ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, টানা তিন দিনের বর্ষণে জেলায় ৩ হাজার ২৬৫ হেক্টর ফসলি জমি আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষতি হওয়া ফসলের মধ্যে রোপা আমন ৯১৩ হেক্টর, সবজি ৬৬৫ হেক্টর, মাসকলাই ১১০৬ হেক্টর, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ৯৮ হেক্টর, মরিচ ২০০ হেক্টর, কলা ১৭০ হেক্টর, রোপা আউশ ১০ হেক্টর, তুলা ২১ হেক্টর, পান ২ হেক্টর ও মুগ ডাল ৮০ হেক্টর রয়েছে। আক্রান্ত ফসলের মধ্যে ১১৭৫ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। বেশি ক্ষতির আশঙ্কা হয়েছে মহেশপুর, কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলায়।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একবার ভারি বর্ষণে খেতের ফসল নষ্ট হয়েছিল, আবার নতুন করে বর্ষণ শুরু হয়েছে। আগে তো জেলায় ৩ হাজার ২৬৫ হেক্টর ফসলি জমি আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছিল ১১৭৫ হেক্টর জমির ফসল। নতুন করে তালিকা করে কৃষি বিভাগ আক্রান্ত ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করবে।

জলাবদ্ধতা নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের ঝিনাইদহ জোনের সহকারী প্রকৌশলী সৌরভ কুমার বিশ^াস জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন মাঠ পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে দেখা গেছে বহু খেতের ফসল বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

অসুস্থ স্ত্রীর জন্য দোয়া চাইলেন সাতক্ষীরা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শেখ শরিফুজ্জামান সজিব

পানির নীচে মাঠের পর মাঠ, খাল সংস্কারের দাবি

আপডেট সময় : ১২:৫৩:৩৩ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

টানা ভারি বর্ষণে ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে মৌসুমি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষকের শত শত জমির মাসকলাই, শাকসবজি ও পাকা ধানখেত তলিয়ে গেছে। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের ফলে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি। যার কারণে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে মাঠের পর মাঠ ফসল পানিতে ডুবে আছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার চাষি।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের বংকিরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় ডুবে আছে মাঠের পর মাঠ। পাঁকা ধান, মরিচখেত, বেগুন, সেচ পাম্পসহ হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল পানির নিচে। পাতা কপি, ফুল কপি, মরিচ গাছগুলো মরে নেতিয়ে পড়েছে। কলাগাছ ভেঙে পড়ে আছে।

গ্রামবাসী জানায়, জীবনা গ্রাম থেকে রাঙ্গিয়ারপোতা পর্যন্ত দীর্ঘ কাজল খালটি সংস্কার করা হলে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হতো। মধুহাটি, সাগান্না ও হলিধানী ইউনিয়নের মাঠেও এমন জলাবদ্ধতা দেখা মিলেছে। সদর উপজেলার ডাকবাংলা, রাঙ্গিয়ারপোতা, নাথকুন্ডু, ডহরপুকুর, বাথপুকুর, বেজিমারা, মামুনশিয়া, চোরকোল, বেড়াশুলা, সাধুহাটির সাইভাঙ্গার বিল ও পোতাহাটির কুড়ির মাঠ পানিতে ডুবে আছে।

বংকিরা গ্রামের কৃষক ইছানুল হক বিশ^াস জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবনা গ্রামের কিছু লোক বাঁধ দেওয়ার কারণে তার গ্রামের এক হাজার বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। তিনি বংকিরা গ্রামে বিএডিসি কর্তৃক খননকৃত কাজল খালটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, খালটি খনন না করা হলে শীত মৌসুমেও ধান চাষাবাদ করতে পারবেন না।

এদিকে ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, টানা তিন দিনের বর্ষণে জেলায় ৩ হাজার ২৬৫ হেক্টর ফসলি জমি আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষতি হওয়া ফসলের মধ্যে রোপা আমন ৯১৩ হেক্টর, সবজি ৬৬৫ হেক্টর, মাসকলাই ১১০৬ হেক্টর, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ৯৮ হেক্টর, মরিচ ২০০ হেক্টর, কলা ১৭০ হেক্টর, রোপা আউশ ১০ হেক্টর, তুলা ২১ হেক্টর, পান ২ হেক্টর ও মুগ ডাল ৮০ হেক্টর রয়েছে। আক্রান্ত ফসলের মধ্যে ১১৭৫ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। বেশি ক্ষতির আশঙ্কা হয়েছে মহেশপুর, কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলায়।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একবার ভারি বর্ষণে খেতের ফসল নষ্ট হয়েছিল, আবার নতুন করে বর্ষণ শুরু হয়েছে। আগে তো জেলায় ৩ হাজার ২৬৫ হেক্টর ফসলি জমি আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছিল ১১৭৫ হেক্টর জমির ফসল। নতুন করে তালিকা করে কৃষি বিভাগ আক্রান্ত ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করবে।

জলাবদ্ধতা নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের ঝিনাইদহ জোনের সহকারী প্রকৌশলী সৌরভ কুমার বিশ^াস জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন মাঠ পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে দেখা গেছে বহু খেতের ফসল বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।