শনিবার | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo মনোহরদীতে বিএজেএসএম মডেল কলেজে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ Logo মতলব দক্ষিণ উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা Logo হাদীর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo মিয়ানমারে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ সিমেন্ট ও বার্মিজ লুঙ্গিসহ ২২ জন পাচারকারী আটক Logo কচুয়ায় র‍্যাবের অভিযানে ৫ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক Logo চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের পিতার মৃত্যুতে দোয়া Logo জাতীয় ছাত্রশক্তি জাবি শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা Logo জাবিতে ইলিয়াস ও পিনাকীর কুশপুত্তলিকা দাহন Logo পদত্যাগ করলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ Logo সাতক্ষীরা-কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ভারতীয় মদ ও ঔষধসহ আড়াই লক্ষাধিক টাকার চোরাচালানী মালামাল জব্দ

আবু সাঈদের খুনিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৬:০৯ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭৮২ বার পড়া হয়েছে

কোটা সংস্কার আন্দোলনে যে শিক্ষার্থীর মৃত্যু গোটা বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, সেটা রংপুরের আবু সাঈদের মৃত্যু। আবু সাঈদ হত্যার প্রায় ২ মাস হতে চললো, কিন্তু সেদিনের হামলাকারী ছাত্র-শিক্ষকরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।

গত ১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছিল ভারী অস্ত্রসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র। ছাত্রদের প্রতিহত করতে হেলমেট পরিধান করে অবস্থান করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কজন শিক্ষক।

৫ আগস্টের পরে, ওই সব শিক্ষক, কর্মকর্তা, ছাত্রলীগ নেতারা গা-ঢাকা দিলেও অস্ত্র হাতে তাদের মহড়ার ভিডিও ফুটেজ এখন সবার হাতে হাতে ঘুরছে।

আবু সাঈদের মৃত্যুর দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, পার্কের মোড়, (শহিদ আবু সাঈদ চত্বর) মহাসড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগ নেতাদের এসব অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। এসবের নির্বিচার ব্যবহারে ঝরে শহিদ হয়েছে আবু সাঈদ, আহত হয়েছেন কয়েক শত শিক্ষার্থী।

এসব অস্ত্রধারীর মধ্যে রয়েছেন বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি রুমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, সহসভাপতি বিধান বর্মন, মো. রেজওয়ান-উল-আনাম তন্ময়, মো. তানভীর আহমেদ, মো. শাহীন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাকিব-আল-হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার দাস টগর, উপ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মো. সেজান আহমেদ (আরিফ), উপ-সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় রায়, সুদীপ্ত সরকার বাধন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মেজবাউল সরকার জয়, ইমরান চৌধুরী আকাশ, কফি আনান মান্নান, উজ্জ্বল মিয়া, শাখাওয়াত হোসেন, শোয়াইবুল (সাল্লু), মোজ্জামেল হক গ্লেসিয়ার রাব্বি, মুসান্নাবিন আহম্মেদ নাবিল, আবু সালেহ নাহিদ, মাসুদুল হাসান, হাবিবুর রহমান, জামাল, এস এম লাবু ইসলাম, শাহিন ইসলাম নাম না জানা আরো অনেক নেতাকর্মী।

এ ছাড়া আবু সাঈদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বেরোবি শিক্ষক মো. মশিয়ার রহমান, মো. আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ। কর্মকর্তা মো. রাফিউল হাসান (রাসেল), নুর নাবী, মনিরুজ্জামান, পলাশ মিয়া, আবুল কালাম আজাদ এবং কর্মচারী নূর আলম, সুবহান, মুক্তার, আমির হোসেনসহ আরও অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। যারা সবাই এখন লাপাত্তা।

এই বিষয়ে দুই শিক্ষককে একাধিক বার কল করা হলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী  আশিকুর রহমান বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছাত্রলীগ, শিক্ষক, কর্মকতা-কর্মচারীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। দেশের ক্রান্তিকালে যারা ছাত্রদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়ে দাঁড়াতে পারে তারা কারো শুভাকাঙ্ক্ষী হতে পারে না। আমরা চাই দ্রুত এসব হামলাকারীদের শনাক্ত করে এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং অপরাধের ধরণ অনুযায়ী এদেরকে বহিষ্কার করা হোক।

গোলাম রহমান শাওন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নায্য দাবিতে অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে সে যেই হোক না কেন ছাত্রলীগ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের প্রত্যেককেই আমরা বিচারের মুখোমুখি করতে চাই। বেরোবি ছাত্রলীগ ও মহানগর ছাত্রলীগ মরণঘাতী অস্ত্র নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। আমরা ভিডিওতে কিন্তু দেখতে পেয়েছি, প্রক্টরিয়াল বডির একজন বার বার পুলিশকে বলছিলো, শিক্ষার্থীর ওপর গুলি চালাতে। আসাদ স্যার, মশিউর স্যার তারা মাথায় হেলমেট পরে, হাতে অস্ত্র নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করতে এসেছে। যারা প্রত্যক্ষভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলার জন্য ইন্ধন দিয়েছে আমরা তাদের বিচার চাই। এ ছাড়া যেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত আছে তাদেরও বিচার চাই।

ক্যাম্পাসের আরেক শিক্ষার্থী মহসিনা তাবাসসুম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নামের শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের বাস্তবায়ন করার জন্য মাঠে নেমেছিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ছাত্রত্ব বাতিল ও নিয়োগ বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মনোহরদীতে বিএজেএসএম মডেল কলেজে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ

আবু সাঈদের খুনিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে

আপডেট সময় : ০৮:৩৬:০৯ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে যে শিক্ষার্থীর মৃত্যু গোটা বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, সেটা রংপুরের আবু সাঈদের মৃত্যু। আবু সাঈদ হত্যার প্রায় ২ মাস হতে চললো, কিন্তু সেদিনের হামলাকারী ছাত্র-শিক্ষকরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।

গত ১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছিল ভারী অস্ত্রসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র। ছাত্রদের প্রতিহত করতে হেলমেট পরিধান করে অবস্থান করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কজন শিক্ষক।

৫ আগস্টের পরে, ওই সব শিক্ষক, কর্মকর্তা, ছাত্রলীগ নেতারা গা-ঢাকা দিলেও অস্ত্র হাতে তাদের মহড়ার ভিডিও ফুটেজ এখন সবার হাতে হাতে ঘুরছে।

আবু সাঈদের মৃত্যুর দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, পার্কের মোড়, (শহিদ আবু সাঈদ চত্বর) মহাসড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রলীগ নেতাদের এসব অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। এসবের নির্বিচার ব্যবহারে ঝরে শহিদ হয়েছে আবু সাঈদ, আহত হয়েছেন কয়েক শত শিক্ষার্থী।

এসব অস্ত্রধারীর মধ্যে রয়েছেন বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি রুমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, সহসভাপতি বিধান বর্মন, মো. রেজওয়ান-উল-আনাম তন্ময়, মো. তানভীর আহমেদ, মো. শাহীন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাকিব-আল-হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার দাস টগর, উপ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মো. সেজান আহমেদ (আরিফ), উপ-সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় রায়, সুদীপ্ত সরকার বাধন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মেজবাউল সরকার জয়, ইমরান চৌধুরী আকাশ, কফি আনান মান্নান, উজ্জ্বল মিয়া, শাখাওয়াত হোসেন, শোয়াইবুল (সাল্লু), মোজ্জামেল হক গ্লেসিয়ার রাব্বি, মুসান্নাবিন আহম্মেদ নাবিল, আবু সালেহ নাহিদ, মাসুদুল হাসান, হাবিবুর রহমান, জামাল, এস এম লাবু ইসলাম, শাহিন ইসলাম নাম না জানা আরো অনেক নেতাকর্মী।

এ ছাড়া আবু সাঈদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বেরোবি শিক্ষক মো. মশিয়ার রহমান, মো. আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ। কর্মকর্তা মো. রাফিউল হাসান (রাসেল), নুর নাবী, মনিরুজ্জামান, পলাশ মিয়া, আবুল কালাম আজাদ এবং কর্মচারী নূর আলম, সুবহান, মুক্তার, আমির হোসেনসহ আরও অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। যারা সবাই এখন লাপাত্তা।

এই বিষয়ে দুই শিক্ষককে একাধিক বার কল করা হলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী  আশিকুর রহমান বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছাত্রলীগ, শিক্ষক, কর্মকতা-কর্মচারীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। দেশের ক্রান্তিকালে যারা ছাত্রদের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়ে দাঁড়াতে পারে তারা কারো শুভাকাঙ্ক্ষী হতে পারে না। আমরা চাই দ্রুত এসব হামলাকারীদের শনাক্ত করে এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং অপরাধের ধরণ অনুযায়ী এদেরকে বহিষ্কার করা হোক।

গোলাম রহমান শাওন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নায্য দাবিতে অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে সে যেই হোক না কেন ছাত্রলীগ, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের প্রত্যেককেই আমরা বিচারের মুখোমুখি করতে চাই। বেরোবি ছাত্রলীগ ও মহানগর ছাত্রলীগ মরণঘাতী অস্ত্র নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। আমরা ভিডিওতে কিন্তু দেখতে পেয়েছি, প্রক্টরিয়াল বডির একজন বার বার পুলিশকে বলছিলো, শিক্ষার্থীর ওপর গুলি চালাতে। আসাদ স্যার, মশিউর স্যার তারা মাথায় হেলমেট পরে, হাতে অস্ত্র নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করতে এসেছে। যারা প্রত্যক্ষভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলার জন্য ইন্ধন দিয়েছে আমরা তাদের বিচার চাই। এ ছাড়া যেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত আছে তাদেরও বিচার চাই।

ক্যাম্পাসের আরেক শিক্ষার্থী মহসিনা তাবাসসুম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নামের শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের বাস্তবায়ন করার জন্য মাঠে নেমেছিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ছাত্রত্ব বাতিল ও নিয়োগ বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি।