মঙ্গলবার | ২ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo বিএনপি চেয়ারপার্সনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় জীবননগরে ছাত্রদল ও শ্রমিকদের দোয়া Logo জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারে ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের Logo কারুবাক পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পেলেন এইচএম জাকির Logo চাঁদপুরে নতুন খাবারের আকর্ষণ ‘কাচ্চি ডাইন’ গ্রাহকদের ভিড় বেড়েই চলছে Logo বেগম খালেদা জিয়া’র আশু রোগমুক্তি কামনায় ৮ নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo নোবিপ্রবির আধুনিকায়নে ৩৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা, বীরগঞ্জ উপজেলায় অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ Logo চাঁদপুরে যোগদানের প্রথম দিনেই সাংবাদিকদের সাথে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময়

কোটচাঁদপুর বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারিতে চাইনিজ কার্প মাছের রেনু উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৯:০১ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট ২০২২
  • ৮২৭ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-

চীন ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানীকৃত মাছের রেনু নিয়ে এক সমৃদ্ধ ভান্ডার গড়ে উঠেছে বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারিতে। চলতি বছর থেকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর হ্যাচারিতে চাইনিজ কার্প জাতীয় মাছের রেনু উৎপাদন শুরু করেছে।

প্রথম বছরে মাঠ পর্যায়ের মাছ চাষিরা সাফল্য পাওয়ায় বিভিন্ন জেলায় কদর বেড়েছে বিভিন্ন প্রজাতির রেনুর। বর্তমান এই হ্যাচারিতে চীন থেকে আমদানীকৃত সিলবার, বিগহেড ও গ্রাসকার্পের রেনু ও ভিয়েতনামীয় পাঙ্গাস, কালিবাউস এবং সুবর্ন রুই মাছ লালন পালন করা হচ্ছে। আর এই কৃতিত্বের কারণে ৩৮ বছর পর বলুহর হ্যাচারির ললাটে যুক্ত হয়েছে শ্রেষ্ঠত্বের পালক। হ্যাচারি কর্মকর্তারা আশা করছেন পুরানো ব্রুড মাছের সাথে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত মাছ সংযোজন হলে বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারিতে রেনুর ব্রুড ভান্ডার সমৃদ্ধ হবে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের জেলার মাছ চাষি, মৎস্যজীবী, হ্যাচারি, নার্সারি মালিক ও সাধারন মানুষকে উন্নত জাতের কার্প জাতীয় মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করে আমিষের ঘাটতি পুরণের লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে কোটচাঁদপুরের বলুহর গ্রামে দেশের সর্ববৃহৎ মৎস্য হ্যাচারি কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১০৩ একর আয়তন বিশিষ্ট এই হ্যাচারিতে রয়েছে ৩০টি দৃষ্টিনন্দন পুকুর।

ঝিনাইদহ ছাড়াও যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, রাজবাড়ি, মেহেরপুর ও সাতক্ষিরাসহ বিভিন্ন জেলায় এই হ্যচারির উৎপাদিত রেনু পৌছে যাচ্ছে। একাবাসি ও হ্যাচারির কর্মচারিরা জানান, হ্যাচারি ম্যানেজার হিসেবে মোঃ আশরাফ-উল-ইসলাম যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির পরিবর্তন ফিরে আসে।

করোনাকালীন বা যে কোন দুযোর্গের মধ্যেও শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ লাখ ১১ হাজার টাকা হলেও অর্জিত হয়েছে ৪৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা। আব্দুল করিম নামে ঝিনাইদহের নলডাঙ্গা এলাকার এক মৎস্য চাষি জানান, ব্রুড উনয়নের পাশাপাশি ১৫ বছর বন্ধ থাকা প্রশাসনিক ভবন চালু চালু করা হয়েছে।

অথচ আগে কোন হ্যাচারি ম্যানেজার প্রশাসনিক ভবন সংস্কার বা উন্নয়নের মাধ্যমে চালু করতে পারেনি। ফলে কর্মকর্তা কর্মচারিদের কোন অফিস ছিল না। এখন চিরচেনা এক পরিপাটি ভবনে দাপ্তরীক কাজ হচ্ছে। তিনি বলেন, হ্যাচারির মধ্যে আবর্জনা স্তুপে ভরা ছিল। সেগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে ফুল বাগান তৈরীর মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে মজবুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।

আর এসবই হয়েছে হ্যাচারি ম্যানেজার হিসেবে মোঃ আশরাফ-উল-ইসলাম যোগদানের পর। হাটগোপালপুর এলাকার চাষি তুষার আহম্মেদ জানান, আমার মতো দাক্ষিনাঞ্চলের ১০ জেলার মৎস্য চাষিরা বলুহর হ্যাচারির রেন নিয়ে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বি হচ্ছেন।

অনেক বেকার যুবক পুনবার্সিত হয়েছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারিতে লোকবলের অভাবে কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। মোট ২৭টি পদের মধ্যে ১৯টি পদ শুন্য রয়েছে। গুরুত্বপুর্ন পদগুলো জনবল নিয়োগ করা হলে এই হ্যাচারি রেনু উৎপাদে আকাশ ছোয়া সাফল্য এনে দিত। তাছাড়া হ্যাচারির অতিপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরী হয়ে পড়েছে। অনেক ভবন এখনো জরাজীর্ন।

হ্যাচারি ম্যানেজার মোঃ আশরাফ-উল-ইসলাম জানান, বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারি একটি সেবামুলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে মানসম্পন্ন রেনু উৎপাদন করে মৎস্য চাষিদের কাছে সুলভ মুল্যে বিক্রি করে থাকে। এছাড়া আধুনিক কলাকৌশল ও সর্বশেষ লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাছ চাষিদের জীবন মান উন্নত করে থাকে।

ফলে এলাকায় বেকারত্ব হ্রাসের পাশাপাশি ব্যপক হারে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন দক্ষিনাঞ্চলের ১০ জেলার মাছ চাষি, মৎস্যজীবী, হ্যাচারি, নার্সারি মালিক ও সাধারন মানুষের পুকুরে ৬০ ভাগ রেনু বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারি থেকে যায়। তিনি বলেন শুন্যপদে জনবল নিয়োগ ও হ্যাচারির মধ্যে অতিপ্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করা হলে বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারির মান আরো বৃদ্ধি হতো।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ

কোটচাঁদপুর বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারিতে চাইনিজ কার্প মাছের রেনু উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য

আপডেট সময় : ০৮:৫৯:০১ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-

চীন ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানীকৃত মাছের রেনু নিয়ে এক সমৃদ্ধ ভান্ডার গড়ে উঠেছে বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারিতে। চলতি বছর থেকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর হ্যাচারিতে চাইনিজ কার্প জাতীয় মাছের রেনু উৎপাদন শুরু করেছে।

প্রথম বছরে মাঠ পর্যায়ের মাছ চাষিরা সাফল্য পাওয়ায় বিভিন্ন জেলায় কদর বেড়েছে বিভিন্ন প্রজাতির রেনুর। বর্তমান এই হ্যাচারিতে চীন থেকে আমদানীকৃত সিলবার, বিগহেড ও গ্রাসকার্পের রেনু ও ভিয়েতনামীয় পাঙ্গাস, কালিবাউস এবং সুবর্ন রুই মাছ লালন পালন করা হচ্ছে। আর এই কৃতিত্বের কারণে ৩৮ বছর পর বলুহর হ্যাচারির ললাটে যুক্ত হয়েছে শ্রেষ্ঠত্বের পালক। হ্যাচারি কর্মকর্তারা আশা করছেন পুরানো ব্রুড মাছের সাথে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত মাছ সংযোজন হলে বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারিতে রেনুর ব্রুড ভান্ডার সমৃদ্ধ হবে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, দেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের জেলার মাছ চাষি, মৎস্যজীবী, হ্যাচারি, নার্সারি মালিক ও সাধারন মানুষকে উন্নত জাতের কার্প জাতীয় মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করে আমিষের ঘাটতি পুরণের লক্ষ্যে ১৯৮৪ সালে কোটচাঁদপুরের বলুহর গ্রামে দেশের সর্ববৃহৎ মৎস্য হ্যাচারি কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১০৩ একর আয়তন বিশিষ্ট এই হ্যাচারিতে রয়েছে ৩০টি দৃষ্টিনন্দন পুকুর।

ঝিনাইদহ ছাড়াও যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, রাজবাড়ি, মেহেরপুর ও সাতক্ষিরাসহ বিভিন্ন জেলায় এই হ্যচারির উৎপাদিত রেনু পৌছে যাচ্ছে। একাবাসি ও হ্যাচারির কর্মচারিরা জানান, হ্যাচারি ম্যানেজার হিসেবে মোঃ আশরাফ-উল-ইসলাম যোগদানের পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির পরিবর্তন ফিরে আসে।

করোনাকালীন বা যে কোন দুযোর্গের মধ্যেও শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ৪৮ লাখ ১১ হাজার টাকা হলেও অর্জিত হয়েছে ৪৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা। আব্দুল করিম নামে ঝিনাইদহের নলডাঙ্গা এলাকার এক মৎস্য চাষি জানান, ব্রুড উনয়নের পাশাপাশি ১৫ বছর বন্ধ থাকা প্রশাসনিক ভবন চালু চালু করা হয়েছে।

অথচ আগে কোন হ্যাচারি ম্যানেজার প্রশাসনিক ভবন সংস্কার বা উন্নয়নের মাধ্যমে চালু করতে পারেনি। ফলে কর্মকর্তা কর্মচারিদের কোন অফিস ছিল না। এখন চিরচেনা এক পরিপাটি ভবনে দাপ্তরীক কাজ হচ্ছে। তিনি বলেন, হ্যাচারির মধ্যে আবর্জনা স্তুপে ভরা ছিল। সেগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে ফুল বাগান তৈরীর মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে মজবুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।

আর এসবই হয়েছে হ্যাচারি ম্যানেজার হিসেবে মোঃ আশরাফ-উল-ইসলাম যোগদানের পর। হাটগোপালপুর এলাকার চাষি তুষার আহম্মেদ জানান, আমার মতো দাক্ষিনাঞ্চলের ১০ জেলার মৎস্য চাষিরা বলুহর হ্যাচারির রেন নিয়ে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বি হচ্ছেন।

অনেক বেকার যুবক পুনবার্সিত হয়েছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, বলুহর কেন্দ্রীয় মৎস্য হ্যাচারিতে লোকবলের অভাবে কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। মোট ২৭টি পদের মধ্যে ১৯টি পদ শুন্য রয়েছে। গুরুত্বপুর্ন পদগুলো জনবল নিয়োগ করা হলে এই হ্যাচারি রেনু উৎপাদে আকাশ ছোয়া সাফল্য এনে দিত। তাছাড়া হ্যাচারির অতিপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরী হয়ে পড়েছে। অনেক ভবন এখনো জরাজীর্ন।

হ্যাচারি ম্যানেজার মোঃ আশরাফ-উল-ইসলাম জানান, বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারি একটি সেবামুলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে মানসম্পন্ন রেনু উৎপাদন করে মৎস্য চাষিদের কাছে সুলভ মুল্যে বিক্রি করে থাকে। এছাড়া আধুনিক কলাকৌশল ও সর্বশেষ লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাছ চাষিদের জীবন মান উন্নত করে থাকে।

ফলে এলাকায় বেকারত্ব হ্রাসের পাশাপাশি ব্যপক হারে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন দক্ষিনাঞ্চলের ১০ জেলার মাছ চাষি, মৎস্যজীবী, হ্যাচারি, নার্সারি মালিক ও সাধারন মানুষের পুকুরে ৬০ ভাগ রেনু বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারি থেকে যায়। তিনি বলেন শুন্যপদে জনবল নিয়োগ ও হ্যাচারির মধ্যে অতিপ্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করা হলে বলুহর কেন্দ্রীয় হ্যাচারির মান আরো বৃদ্ধি হতো।