বুধবার | ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo গাইবান্ধা এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত যুবক Logo খুবিতে আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা: নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় সভা Logo প্রগতিশীল প্রতিষ্ঠান চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির ‘হেমন্তসন্ধ্যা ও হাঁস পার্টি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে Logo টেকনাফে কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ গোলা-বারুদসহ দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ Logo সদরপুরে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য কর্মবিরতি পালন করেছে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা Logo কয়রায় আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস পালিত Logo খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর Logo খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন সিবি’এর দোয়া মাহফিল Logo জলবায়ু সহিষ্ণু ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশের কৃষকদের সক্ষম করে তুলতে হবে— আন্তর্জাতিক সেমিনারে নোবিপ্রবি উপাচার্য Logo পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক

শিকলে বাঁধা সাকুর কপালে জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতাকার্ড

  • rahul raj
  • আপডেট সময় : ০৬:২১:৫৩ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০
  • ৮৮৬ বার পড়া হয়েছে

বায়েজীদ (গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি)  :

দুই বছর আগে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে রাজিব মিয়া সাকু (১৭)। এর পর থেকে শিকলে বন্দি জীবন কাটছে তার। কিন্তু অসহায় দরিদ্র পরিবারের এই সাকুর কপালে জোটেনি সরকারি সুযযোগ-সুবিধা কিংবা প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড।

প্রতিবন্ধী রাজিব মিয়া সাকুর বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার ঘাগোয়া ইউনিয়নের দারিয়াপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত শাহজাহান মিয়া ও বিধবা বেওয়া বেওয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, দুই বছর ধরে যুবক সন্তানকে শিকলে বেঁধে রেখেছেন অসহায় মা। কোনোমতে নুন-ভাতে কাটে তাঁদের জীবন। ছেলের চিকিৎসার চিন্তা তাদের কাছে বিলাসিতার সমান! তাই বিধবা মাকেই ছেলের খাওয়ানো থেকে শুরু করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার যাবতীয় কাজ করতে হয়। তিনি চোখ বুজলে ছেলের কী হবে? তা ভেবে চোখের পানি ফেলেন মা। এখন পর্যন্ত ওই ছেলেটির কপালে জোটেনি সরকারি সহায়তাসহ প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড।

স্বজনরা জানান, দারিয়াপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলো সাকু মিয়া। এরপর পরিবারের দারিদ্রতার কারণে তার লেখা-পড়া বন্ধ হয়ে যায়। তাই মাকে সাহায্য করতে যোগ দেন কাজে। এরপর ১৪-১৫ বছর বয়সে হঠাৎ সে অমানুষিক আচারণ শুরু করে। এরপর তার মা তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসকরা জানান তার মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। রংপুরে কিছুদিন চিকিৎসার পর অর্থের অভাবে তাও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সাকু মিয়াকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তার মা রমিছা বেওয়া। ফলে তার মানষিক রোগ আরও বেড়ে যায়। বেপরোয়া হয়ে ওসে সে। কাছে যাকে পায় তাকে কামড়ে দেয়। যানবাহনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ছেলে-মেয়েকে মারধর করে। কোন উপায় না পেয়ে ছেলেকে শিকলে বেঁধে রাখেন তার মা।

আরো জানা যায়, রমিছা বেওয়ার বসবাস উপযোগি ঘর-দর্জা কিছুই নেই। অন্যের জায়গায় একটু চালা তুলে কোন মতে দিন কাটছে তার। ঝড় বৃষ্টির সাথে লড়াই করে থাকতে হয় পাগল ছেলেকে নিয়ে। ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতাসহ নিজের বিধবা ভাতাও পানটি তিনি। ঝিঁয়ের বাড়ির কাজই তার একমাত্র সম্বল।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার নাসির উদ্দিন সাহ  বলেন, প্রতিবন্ধী রাজিব হোসেন সাকুর সহায়তা দেওয়া ব্যবস্থা করা হবে।

 

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গাইবান্ধা এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত যুবক

শিকলে বাঁধা সাকুর কপালে জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতাকার্ড

আপডেট সময় : ০৬:২১:৫৩ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২০

বায়েজীদ (গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি)  :

দুই বছর আগে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে রাজিব মিয়া সাকু (১৭)। এর পর থেকে শিকলে বন্দি জীবন কাটছে তার। কিন্তু অসহায় দরিদ্র পরিবারের এই সাকুর কপালে জোটেনি সরকারি সুযযোগ-সুবিধা কিংবা প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড।

প্রতিবন্ধী রাজিব মিয়া সাকুর বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার ঘাগোয়া ইউনিয়নের দারিয়াপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত শাহজাহান মিয়া ও বিধবা বেওয়া বেওয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানায়, দুই বছর ধরে যুবক সন্তানকে শিকলে বেঁধে রেখেছেন অসহায় মা। কোনোমতে নুন-ভাতে কাটে তাঁদের জীবন। ছেলের চিকিৎসার চিন্তা তাদের কাছে বিলাসিতার সমান! তাই বিধবা মাকেই ছেলের খাওয়ানো থেকে শুরু করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার যাবতীয় কাজ করতে হয়। তিনি চোখ বুজলে ছেলের কী হবে? তা ভেবে চোখের পানি ফেলেন মা। এখন পর্যন্ত ওই ছেলেটির কপালে জোটেনি সরকারি সহায়তাসহ প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড।

স্বজনরা জানান, দারিয়াপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছিলো সাকু মিয়া। এরপর পরিবারের দারিদ্রতার কারণে তার লেখা-পড়া বন্ধ হয়ে যায়। তাই মাকে সাহায্য করতে যোগ দেন কাজে। এরপর ১৪-১৫ বছর বয়সে হঠাৎ সে অমানুষিক আচারণ শুরু করে। এরপর তার মা তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসকরা জানান তার মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। রংপুরে কিছুদিন চিকিৎসার পর অর্থের অভাবে তাও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সাকু মিয়াকে বাড়িতে নিয়ে আসেন তার মা রমিছা বেওয়া। ফলে তার মানষিক রোগ আরও বেড়ে যায়। বেপরোয়া হয়ে ওসে সে। কাছে যাকে পায় তাকে কামড়ে দেয়। যানবাহনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ছেলে-মেয়েকে মারধর করে। কোন উপায় না পেয়ে ছেলেকে শিকলে বেঁধে রাখেন তার মা।

আরো জানা যায়, রমিছা বেওয়ার বসবাস উপযোগি ঘর-দর্জা কিছুই নেই। অন্যের জায়গায় একটু চালা তুলে কোন মতে দিন কাটছে তার। ঝড় বৃষ্টির সাথে লড়াই করে থাকতে হয় পাগল ছেলেকে নিয়ে। ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতাসহ নিজের বিধবা ভাতাও পানটি তিনি। ঝিঁয়ের বাড়ির কাজই তার একমাত্র সম্বল।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার নাসির উদ্দিন সাহ  বলেন, প্রতিবন্ধী রাজিব হোসেন সাকুর সহায়তা দেওয়া ব্যবস্থা করা হবে।