নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা শহরের টিএনটি মোড়ে পূর্বশত্রুতার জের ধরে হঠাৎ মারামারিতে দুজন আহত হওয়া ঘটনা ঘটেছে। নারীকে মারধর, মাদক ব্যবসা ও জমিজমার পূর্ব বিরোধে এ সংঘর্ষ বাধলে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে একই এলাকার রুস্তম আলী বুদো ও তাঁর ভাতিজা অনিক গুরুতর জখম হন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শহরের টিএনটি মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত রুস্তম আলী বুদো (৫০) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার আরামপাড়ার মৃত রেজাউলের ছেলে ও তাঁর ভাতিজা অনিক (২৬) একই এলাকার কামরুল ইসলামের ছেলে। ঘটনার পরই শহরজুড়ে মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিলে বড়ধরণের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়েছে। এ ঘটনায় রাতেই হামলার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিরা হলেন খুলনা জেলার বাসিন্দা সামাদের ছেলে রাজিব, চুয়াডাঙ্গা জোয়ার্দ্দারপাড়ার মৃত মুনতাজের ছেলে বাবন হোসেন বাবুন ও ইসলামপাড়ার মৃত সামাদের ছেলে তরিকুল ইসলাম। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার, সদর থানার ওসি (তদন্ত) লুৎফুল কবিরসহ ডিবি পুলিশের টীম। পরে হাসপাতালেও ছুটে যান চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার, পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপুসহ নেতা-কর্মীরা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খুলনা জেলার বাসিন্দা সামাদের ছেলে রাজিব (৩২) দীর্ঘদিন যাবৎ চুয়াডাঙ্গার আরামপাড়ায় নানার বাড়িতে বসবাসের পাশাপাশি মাদক ব্যবসা করে আসছেন। রাজিবের কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। বেশ কিছুদিন আগেও একটি ঘটনায় তাঁকে আটক করেছিল সদর থানার পুলিশ। কিছুদিন আগে এক নারীকে মারধরের ঘটনায় মামলাও হয় তাঁর নামে। রাজিবের সঙ্গে রুস্তম আলী বুদোর জমিজমা-সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গতকাল এরই জের ধরে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে রাজিব, বা, তরিকুলসহ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে রুস্তম আলী বুদো ও তাঁর ভাতিজা অনিককে কুপিয়ে জখম করেন। এ নিয়ে শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। মুহূর্তেই জনশূন্য হয়ে যায় এলাকা। মোতায়ন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই পুলিশ।
রুস্তম আলী বুদো বলেন, ‘রাজিব একজন মাদক ব্যবসায়ী। কয়েক দিন আগে তার মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় এক নারীকে পিটিয়ে জখম করে রাজিব। শুধু তাই নয়, ওই নারীর স্বামী মারধরের প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। গতকাল রাতে আমি ও আমার ভাতিজা অনিক টিএনটির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। কিছু না বোঝার আগেই রাজিব, বা, তরিকুলসহ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে আমাদের।’
এদিকে, এ ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কানাই লাল সরকার ও পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পদক জাকির হোসেন জ্যাকিসহ নেতা-কর্মীরা।
এ বিষয়ে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আহত দুজনের অবস্থা শঙ্কামুক্ত। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান বলেন, ‘জমিজমা-সংক্রান্ত বিষয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন অভিযুক্তকে রাতেই অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে। বাবুন মাদক মামলার আসামি এবং রাজিব নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। আমরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’