শিরোনাম :
Logo বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণ কর্মসূচি Logo সিরাজগঞ্জে সরকারি জমির টাকা নিয়েও ব্রীজের জমিতে ভবন Logo কাউসার হোসেন টুটুল এখন সফল ফ্রিল্যান্সার Logo রাবিতে ‘এমপাওয়ারিং ইয়ুথ ফর ইকোনোমিক রেভ্যুলেশন’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার Logo গম আমদানির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর Logo জুলাই শহীদদের স্মরণে ঝিনাইদহে কৃষকদলের বৃক্ষরোপণ Logo আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্যসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ১৫ অক্টোবর Logo বিষাক্ত মদ খেয়ে খুলনায় ৫ জনের মৃত্যুর Logo কারফিউ শেষে গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি Logo দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা

চট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা পিছু ছাড়ছে না !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০২:৩৫:০০ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০১৭
  • ৭৫০ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

চট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা পিছু ছাড়ছে না। অতি বর্ষণে জলাবদ্ধতায় নাভিশ্বাস উঠেছে নগরবাসীর। গত দুইদিন ধরে টানা বর্ষণে নগরের প্রায় সব এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। অতীতে পানি উঠেনি এমন এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। ফলে নগরজীবনে চরম নাভিশ্বাস উঠেছে।

কার্যত গত মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয় এই বৃষ্টি। গত শনিবার কিছুটা কম থাকলেও রবিবার থেকে ফের শুরু হয় ভারী ও টানা বর্ষণ। টানা বর্ষণের কারণে আজ সকাল থেকেই নগরীতে ছিল গণপরিবহন সংকট। ব্যক্তিগত যানবাহন, রিকশা, অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলও ছিল কম।

এদিকে, ভারী বর্ষণে সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবানের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কের ওপরে পানি উঠে যায়।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৯৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১টা ২৭ মিনিটে ভাটা শুরু হয় এবং রাত ৮টা ১৪ মিনিটে জোয়ার শুরু হয়।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা শেখ হারুনুর রশিদ বলেন, ‘মৌসুমী বায়ুর তারতম্যের আধিক্যের কারণে সাগরে বাতাসের তীব্রতা বেশি। তবে আজ মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা কিছুটা কমতে পারে। বর্তমানে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত অব্যাহত আছে। তাছাড়া ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসের আশঙ্কাও রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির কারণে সোমবার সকাল থেকেই বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে নগরের আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, আগ্রাবাদ সিডিএ, কমার্স কলেজ রোড, বারিক বিল্ডিং মোড়, চকবাজার, হালিশহর, ইপিজেড মোড়, ষোলশহর ২ নম্বর গেইট, মুরাদপুর, বাকলিয়া, প্রবর্তক মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানিতে তলিয়ে যায়।

সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক বলেন, ‘জোয়ার ও প্রবল বর্ষণের পানি এক সঙ্গে হওয়ায় পানির পরিমাণ একটু বেশি ছিল। কিন্তু এই পরিমাণ পানি ধারণ করার মত ক্ষমতা নগরের সমতল এলাকার নেই। ফলে অনেক নিম্নাঞ্চলে পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। তবে এই পানি বেশি সময় ধরে স্থায়ী হচ্ছে না। কারণ ইতোমধ্যেই নগরের নালা-নর্দমা, ড্রেন ও খাল খনন এবং সংস্কার করা হয়েছে। ফলে কম সময়ের মধ্যে পানি নেমে যাচ্ছে।

এদিকে, বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় নগরের সড়কে গণপরিবহনের চরম স্বল্পতা দেখা দেয়। গণপরিবহন কম থাকায় অফিস, স্কুল-কলেজ কর্মমুখী মানুষেরা যাতায়াতে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েন। পরিবহন সল্পতায় যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়াও গুণতে হয়েছে যাত্রীদের। আবার অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও গন্তব্যে যেতে পারছে না পানির কারণে।

অন্যদিকে, দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জ ও চাক্তাই এলাকায়ও ছোবল মেরেছে জলাবদ্ধতা। অতি বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বৃহত্তম এই বাজারের অনেক দোকান এবং আড়ত। মূলত গত রবিবার থেকেই ব্যবসায়ীরা ক্রয়বিক্রয় করতে পারছেনা। খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, ‘দেশের বৃহত্তম এই তিন বাজারের ব্যবসায়ীদের এখন নাজুক অবস্থা। প্রায় সব আড়ত ও দোকানে পানি প্রবেশে করেছে। ফলে নষ্ট হয়েছে নানা পণ্য। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসায়ীরা। অনেক ব্যবসায়ী পণ্য রক্ষা করতে মালামাল অন্যত্র সরিয়েও নিয়েছেন ।

চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবান বিচ্ছিন্ন

অতিবর্ষণে চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সোমবার সকাল থেকেই সকল ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে পানি ওঠার কারণে সাতকানিয়ার সঙ্গে বাঁশখালীর সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। সাতকানিয়া-বান্দরবান সড়কের বাজালিয়া, গরদুয়ারা এলাকায় বেশি পানি উঠেছে।

সাতকানিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢল নামায় চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়ক তলিয়ে যায়। ফলে ছোট আকারের গাড়িগুলো চলাচল করতে পারছে না। তবে বড় আকারের গাড়িগুলো চলাচল করতে পারছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণ কর্মসূচি

চট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা পিছু ছাড়ছে না !

আপডেট সময় : ০২:৩৫:০০ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

চট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দাদের জলাবদ্ধতা পিছু ছাড়ছে না। অতি বর্ষণে জলাবদ্ধতায় নাভিশ্বাস উঠেছে নগরবাসীর। গত দুইদিন ধরে টানা বর্ষণে নগরের প্রায় সব এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। অতীতে পানি উঠেনি এমন এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। ফলে নগরজীবনে চরম নাভিশ্বাস উঠেছে।

কার্যত গত মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয় এই বৃষ্টি। গত শনিবার কিছুটা কম থাকলেও রবিবার থেকে ফের শুরু হয় ভারী ও টানা বর্ষণ। টানা বর্ষণের কারণে আজ সকাল থেকেই নগরীতে ছিল গণপরিবহন সংকট। ব্যক্তিগত যানবাহন, রিকশা, অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলও ছিল কম।

এদিকে, ভারী বর্ষণে সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবানের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কের ওপরে পানি উঠে যায়।

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১৯৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১টা ২৭ মিনিটে ভাটা শুরু হয় এবং রাত ৮টা ১৪ মিনিটে জোয়ার শুরু হয়।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা শেখ হারুনুর রশিদ বলেন, ‘মৌসুমী বায়ুর তারতম্যের আধিক্যের কারণে সাগরে বাতাসের তীব্রতা বেশি। তবে আজ মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা কিছুটা কমতে পারে। বর্তমানে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত অব্যাহত আছে। তাছাড়া ভারী বর্ষণে পাহাড়ধসের আশঙ্কাও রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির কারণে সোমবার সকাল থেকেই বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে নগরের আগ্রাবাদ এক্সেস রোড, আগ্রাবাদ সিডিএ, কমার্স কলেজ রোড, বারিক বিল্ডিং মোড়, চকবাজার, হালিশহর, ইপিজেড মোড়, ষোলশহর ২ নম্বর গেইট, মুরাদপুর, বাকলিয়া, প্রবর্তক মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পানিতে তলিয়ে যায়।

সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক বলেন, ‘জোয়ার ও প্রবল বর্ষণের পানি এক সঙ্গে হওয়ায় পানির পরিমাণ একটু বেশি ছিল। কিন্তু এই পরিমাণ পানি ধারণ করার মত ক্ষমতা নগরের সমতল এলাকার নেই। ফলে অনেক নিম্নাঞ্চলে পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। তবে এই পানি বেশি সময় ধরে স্থায়ী হচ্ছে না। কারণ ইতোমধ্যেই নগরের নালা-নর্দমা, ড্রেন ও খাল খনন এবং সংস্কার করা হয়েছে। ফলে কম সময়ের মধ্যে পানি নেমে যাচ্ছে।

এদিকে, বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় নগরের সড়কে গণপরিবহনের চরম স্বল্পতা দেখা দেয়। গণপরিবহন কম থাকায় অফিস, স্কুল-কলেজ কর্মমুখী মানুষেরা যাতায়াতে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েন। পরিবহন সল্পতায় যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়াও গুণতে হয়েছে যাত্রীদের। আবার অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও গন্তব্যে যেতে পারছে না পানির কারণে।

অন্যদিকে, দেশের অন্যতম বৃহত্তম পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জ ও চাক্তাই এলাকায়ও ছোবল মেরেছে জলাবদ্ধতা। অতি বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বৃহত্তম এই বাজারের অনেক দোকান এবং আড়ত। মূলত গত রবিবার থেকেই ব্যবসায়ীরা ক্রয়বিক্রয় করতে পারছেনা। খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, ‘দেশের বৃহত্তম এই তিন বাজারের ব্যবসায়ীদের এখন নাজুক অবস্থা। প্রায় সব আড়ত ও দোকানে পানি প্রবেশে করেছে। ফলে নষ্ট হয়েছে নানা পণ্য। আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যবসায়ীরা। অনেক ব্যবসায়ী পণ্য রক্ষা করতে মালামাল অন্যত্র সরিয়েও নিয়েছেন ।

চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবান বিচ্ছিন্ন

অতিবর্ষণে চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সোমবার সকাল থেকেই সকল ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে পানি ওঠার কারণে সাতকানিয়ার সঙ্গে বাঁশখালীর সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। সাতকানিয়া-বান্দরবান সড়কের বাজালিয়া, গরদুয়ারা এলাকায় বেশি পানি উঠেছে।

সাতকানিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢল নামায় চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়ক তলিয়ে যায়। ফলে ছোট আকারের গাড়িগুলো চলাচল করতে পারছে না। তবে বড় আকারের গাড়িগুলো চলাচল করতে পারছে।