আশঙ্কাই সত্যি হল। বন্যায় তিবলিসির চিড়িয়াখানা থেকে পালানো একটি বাঘের হামলায় প্রাণ হারালেন এক জন। ঘাতক বাঘটিকেও গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ব্যক্তি একটি কাপড় কারখানার কর্মী ছিলেন। বুধবার সকালে তিনি একটি গুদাম ঘরে ঢুকলে তাঁর উপর ঝাপিয়ে পড়ে লুকিয়ে থাকা বাঘটি। এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে, ‘‘গুদামে ঢুকতেই একটি বিরাট সাদা বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে গলা কামড়ে ধরে লোকটির। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বাঘের থাবায় জখম হয়েছেন আর এক ব্যক্তিও। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানিয়েছে, বাঘটিকে প্রথমে আচ্ছন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি এতই হিংস্র যে বাধ্য হয়ে গুলি চালানো হয়েছে। ছবিতে দেখা গিয়েছে, পুরসভার কর্মীরা টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে বাঘটিকে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, সিংহের হামলায় মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। পরে জানা যায়, গায়ে জল-কাদা লেগে থাকায় বাঘটিকে সিংহ বলে মনে হয়েছিল।
রবিবারের বন্যায় তিবলিসির চিড়িয়াখানা থেকে পালিয়েছিল একাধিক হিংস্র পশু। শহরের রাস্তায় দেখা মিলেছিল জলহস্তী, কুমির থেকে শুরু করে ভালুকও। পশু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এখন লুকিয়ে থাকলেও যত দিন গড়াবে ততই খিদের তাড়নায় গা ঢাকা দিয়ে থাকা পশুরা বেরিয়ে পড়বে আড়াল থেকে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চিড়িয়াখানা থেকে পালানো একটি আফ্রিকান পেঙ্গুইন উদ্ধার হয়েছে আজেরবাইজান থেকে। তিবলিসির একটি নদীতে ভাসতে ভাসতে ৩০ মাইল চলে গিয়েছিল পেঙ্গুইনটি। সেটিকে ফিরিয়ে আনতে একটি বিশেষজ্ঞ দল গিয়েছে। বন্যায় মৃত্যু হয়েছে একশোরও বেশি কুকুরের। চিড়িয়াখানা সংলগ্ন একটি বেসরকারি হোমে থাকত সেগুলি।
রবিবারের বন্যায় এখনও পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। হিংস্র পশুরা এ ভাবে আড়াল থেকে বেরিয়ে এলে কী ভাবে রক্ষা করা হবে স্থানীয় বাসিন্দাদের, তা নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন। অনেক পশুকেই গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশের বিশেষ বাহিনী। যত্রতত্র মিলছে পশুদের কঙ্কাল। আশ্রয়হীন পশুদের এ ভাবে গুলি করে হত্যার সমালোচনা করেছেন পশুপ্রেমীরা। তাঁদের দাবি, অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজন না থাকলেও পশু হত্যা করছে পুলিশ। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ হঠকারিতা দেখাচ্ছে। এর তদন্ত প্রয়োজন।
সূত্র : আন্দবাজার