ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা দুর্গাপূজার সময় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) তারা ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর কাছে এ স্মারকলিপি জমা দেন।
এ সময় স্থায়ী মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য একটি খসড়া কমিটির তালিকাও উপাচার্যের হাতে তুলে দেন শিক্ষার্থীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. এয়াকুব আলী, প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহিনুজ্জামান, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পংকজ রায়সহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের সুযোগ পাওয়া সাংবিধানিক ও মানবিক অধিকার। একই সময়ে পরীক্ষা নিলে তা ধর্মীয় সম্প্রীতি ক্ষুণ্ণ করতে পারে।
শিক্ষার্থীরা জানান, দুর্গাপূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। কিন্তু এবছর বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা এ সময়ে নির্ধারণ করায় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে সমস্যা তৈরি হবে। তাই অবিলম্বে দুর্গাপূজার সময় পরীক্ষা স্থগিত করা এবং ভবিষ্যতে কোনো ধর্মীয় উৎসবের সময় পরীক্ষা না নেয়ার অনুরোধ জানান তারা।
পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পংকজ রায় জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা হলেও, এ বছর ক্যাম্পাস বন্ধ হবে ৩০ সেপ্টেম্বর, ফলে মাত্র তিন দিনের ছুটি শিক্ষার্থীদের জন্য যথেষ্ট নয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকের বাড়ি চট্টগ্রাম বিভাগের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, যেখানে পৌঁছাতে প্রায় দুই দিন সময় লাগে। ফলে ৩০ তারিখে রওনা দিলে পূজার সময় প্রায় শেষ হয়ে যাবে। তিনি এটিকে প্রশাসনিক অপরিপক্বতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বলেন, পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় সনাতনী প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
এছাড়াও তারা স্থায়ী মন্দির ও কমিটি গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছেন। উপাচার্য ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন, যার জন্য সকল সনাতনী ছাত্র-ছাত্রী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
এবিষয়ে উপাচার্য ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক। সবার ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা নিশ্চিতে সচেষ্ট থাকবে। এছাড়াও পূজা উদযাপন পরিষদ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুতই একটি স্থায়ী মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের অস্থায়ী মন্দির কক্ষে দ্রুতই ওয়াইফাই সংযোগ, একটি কম্পিউটার ও প্রিন্টার সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।