পুরনো মোবাইল কিনলে আইএমইআই নম্বরসহ প্রকৃত মালিক যাচাই করে নিতে হবে..পুলিশ সুপার, চাঁদপুর
হারানো বা চুরি হওয়া মোবাইল ফোন পুনরুদ্ধারে জেলা পুলিশ সক্রিয়ভাবে কাজ করে, যদিও এটি সবসময় সম্ভব হয় না। পুলিশ সাধারণত সাইবার ক্রাইম ইউনিট বা মোবাইল ক্রাইম মনিটরিং সেল ব্যবহার করে ফোনের আইএমইআই নম্বর (IMEI number) এবং অন্যান্য ডেটার মাধ্যমে ফোনটি ট্র্যাক করার চেষ্টা করে। এই প্রক্রিয়া সফল হলে, উদ্ধার করা ফোনগুলো মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
চাঁদপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর জেলায় অন্তর্গত ৮টি থানায় সাইবার ক্রাইম মনিটরিং সেলের সফল প্রচেষ্টায়
বিভিন্ন কারণে মোবাইল ফোন হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মোবাইল ফোন মালিকদের সাধারণ ডায়েরির (জিডি) প্রেক্ষিতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গেল এক বছরে ৩ হাজার ৬৬৪ টি জিডির প্রেক্ষিতে হারানো অথবা চুরি যাওয়া মোট ১ হাজার ১১৪১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার পূর্বক প্রকৃত মালিকের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্ট তথ্যসূত্রে আরও জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১ আগষ্ট থেকে ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত
চাঁদপুর সদর মডেল থানায় ২০১টি, হাইমচর থানায় ৪০টি, ফরিদগঞ্জ থানায় ১০৯টি, মতলব দক্ষিণ থানায় ২৩৯টি, মতলব উত্তর থানায় ১২৪টি, শাহরাস্তি থানায় ৬৫ টি ও কচুয়া থানায় ২১০টি বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে মোবাইল ফোন উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর করেছে।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘গত এক বছর আগষ্ট মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত মোবাইল হারানোর ঘটনায় বেশ কিছু মিসিং ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। এসব জিডির ভিত্তিতে ডিবি এবং থানা পুলিশের সহযোগিতায় মোট ১১৪১টি মোবাইল উদ্ধার করে যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে মালিকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের সফল অভিযানে জনগণের পুলিশের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পাচ্ছে। একইসঙ্গে প্রতারক ও চোর চক্রের সদস্যরাও সতর্ক হচ্ছে, ফলে ধীরে ধীরে অভিযোগের পরিমাণও কমে আসছে।’ চাঁদপুর জেলা পুলিশের এই সাফল্য শুধু প্রযুক্তিগত সক্ষমতারই প্রমাণ নয়, বরং জনসাধারণের সেবায় আন্তরিকতারও একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
এসপি বলেন, ‘মোবাইল হারানো সংক্রান্ত জিডির ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের তদবির বা যোগাযোগ ব্যতিরেকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের সদস্যরা এ উদ্ধার কাজ করে থাকেন। চাঁদপুর একটি ছোট জেলা। এ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট ভালো। এ ছাড়া প্রান্তিক মানুষের মোবাইলগুলো উদ্ধারের যে কাজটি আমরা করি, এটি আমরা খুব আবেগ দিয়ে করি। মোবাইল উদ্ধার করে যখন মালিকের হাতে তুলে দিই, তখন তার মুখের হাসি আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করে। আমরা এই কাজটি সব সময় করে যাব। হারানো, চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোন ফিরে পাওয়া যায় না– এমন ধারণা থেকে বের হয়ে এসে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার আহ্বান করেন তিনি।
ভুক্তভোগীরা হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন হাতে পেয়ে প্রকৃত মালিকরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এ সময় তারা বলেন, পুলিশের প্রতি আমাদের যে আস্থা ছিল আজকের পর থেকে তা আরও বহুগুণে বেড়ে গেল। চাঁদপুর জেলা পুলিশ প্রশাসনকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাদের হারানো ফোন ফিরে পেয়ে পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।