শিরোনাম :
Logo কোরআন থেকে শিক্ষা Logo বাংলাদেশের বোলিং তোপে ১১০ রানে অলআউট পাকিস্তান Logo সিরাজগঞ্জে ওয়ার্ড সভা অনুষ্ঠিত Logo ইসরাইলের ড্রোন হামলায় লেবাননে নিহত ২ Logo আইট্রিপলই’র সামার সিম্পোজিয়ামে প্রথম ইবি’র ফাহাদ Logo সাজিদের রহস্যজনক মৃত্যু: সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রো-ভিসি’র ব্রিফিং Logo চাঁদপুরে বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির স্মারকলিপি প্রদান Logo সিরাজগঞ্জের সালেহা ইসহাক সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়ে বিস্তর অভিযোগ, তদন্ত হলেও পদক্ষেপ অনিশ্চিত Logo চাঁদপুর বিআরটিএ কার্যালয়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের নেপথ্যে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান Logo বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সদস্য ফরম বিতরণ কর্মসূচি

রাবিতে ‘এমপাওয়ারিং ইয়ুথ ফর ইকোনোমিক রেভ্যুলেশন’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ‘এমপাওয়ারিং ইয়ুথ ফর ইকোনোমিক রেভ্যুলেশন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেল’ (আইকিউএসি) এর উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়।

রোববার (২০ জুলাই) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি সেমিনারের আগে অনুষ্ঠিত হওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেজ আইডিয়া কম্পিটিশন (রুবিক) এর বিজয়ী দুটি দল তাদের প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করে এবং তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়৷

এ আয়োজনে বক্তারা তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা তৈরি এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁরা বলেন, অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটাতে হলে তরুণদের শুধু চাকরি প্রত্যাশী না হয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া, টেকসই উন্নয়ন ও আত্মনির্ভর অর্থনীতি গঠনে তরুণ সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ অনিবার্য।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মাসুমা হাবিব। তিনি বলেন, ‘উদ্যোক্তা হতে হলে প্রয়োজন সাহস, সৃজনশীলতা, পর্যবেক্ষণক্ষমতা, দক্ষতা এবং লেগে থাকার ধৈর্য। শুরুটা ছোট হলেও লক্ষ্যটা বড় রাখতে হবে। আইডিয়া জেনারেট করে তার সঙ্গে লেগে থাকতে পারলেই সফলতা আসবে। আমাদের দেশে ৫ কোটি তরুণ রয়েছে, যারা আমাদের ভবিষ্যৎ। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় ২২ হাজার তরুণ বিভিন্ন কর্মের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। কেউ ক্যাম্পাসে বই কিংবা পিঠা বিক্রি করেও উদ্যোক্তা হয়ে যাচ্ছে। উদ্যোক্তা হতে হলে শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শেষটাও কল্পনায় দেখতে জানতে হবে। সফল হতে হলে নিয়মনিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তোমরা উদ্যোক্তা হও বা যা-ই হও না কেন, সততার সঙ্গে সফল হতে হবে।’

সেমিনারের সভাপতি রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ এই টার্মটা বারবার আসছে। এটা হচ্ছে, একটা রাষ্ট্রের যে জনগোষ্ঠী আছে, তার মধ্যে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অংশটা কত—তার একটা হিসাব। এ অংশটা যত বেশি হয়, সেই রাষ্ট্র তার দক্ষ জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যায়। আমরা যদি নরওয়ে, জাপান, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নেদারল্যান্ডসের কথা বলি—তারা অনেক উন্নত দেশ হলেও মহা বিপদে আছে। বিপদটা হলো, তারা এই ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’-এর দিকটাতে ভীষণভাবে পিছিয়ে। তাদের সবচেয়ে বড় চিন্তা হলো, ৬০ থেকে ৮০ বছর বয়সের যে জনগোষ্ঠী এবং যারা আগের মতো কর্মক্ষম নয়—সেই সংখ্যাটা অনেক বেড়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা এক ক্রান্তিকালীন সময়ের মধ্যেই আছি, কারণ ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’-এর সুযোগ আমরা ১০০ বছরে একবার পাই এবং বর্তমানে আমরা সেই সময়ের ভেতরেই আছি। আগামী ২০ বছর যদি আমরা আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ বহুদূর এগিয়ে যাবে। আর যদি এই সময়টা চলে যায়, তাহলে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াটা অসম্ভব কঠিন হবে। তাই এ সমস্ত জায়গাতে রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে তোমরা (শিক্ষার্থীরা) ছাড়া গতি নেই। তোমরা সাহসী—আমি বিশ্বাস করি, তোমরা দেশের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে সক্ষম।’

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন খান, ইউজিসির স্ট্র‍্যটিজিক প্ল্যানিং অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ডিরেক্টর ড. দুর্গা রানী সরকার, এসপায়ার টূ ইনোভেট এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর রাশিদুল মান্নাফ কাবির ও এসএমই ফাউন্ডেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।

উল্লেখ্য, রুবিক কম্পিটেশন এ মোট ১১৫ টি টিম রেজিষ্ট্রেশন করে। এর মধ্যে ৬৮ টি বিজনেজ আইডিয়া জমা হয়। বাস্তবসম্মতা, ইউনিকনেস ও গ্রহণযোগ্যতা ইত্যাদি বিবেচনায় ১০টি দলকে নির্বাচন করা হয়৷ ১০টি দল থেকে বাছাই করে ৩টি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়৷ এর মধ্যে ১টি চ্যাম্পিয়ন ও ৩টি রানারআপ নির্বাচন করা হয়৷ চ্যাম্পিয়ন দল হলো টিম এমপাওয়ারহার। রানার্সআপ ৩টি দল হলো অ্যাসিডিক এভেঞ্জার্স, ওয়েভব্লক এবং মেলোনেস্ট। চ্যাম্পিয়ন দল পুরস্কার হিসেবে ৫০ হাজার টাকা ও রানার্সআপ ৩টি দলের মধ্যে ১ম রানার্সআপ ৩০ হাজার ও বাকি দুটি দল যথাক্রমে ২০ হাজার টাকা করে প্রাইজমানি পেয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কোরআন থেকে শিক্ষা

রাবিতে ‘এমপাওয়ারিং ইয়ুথ ফর ইকোনোমিক রেভ্যুলেশন’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সেমিনার

আপডেট সময় : ০৪:১৫:২৯ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ‘এমপাওয়ারিং ইয়ুথ ফর ইকোনোমিক রেভ্যুলেশন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেল’ (আইকিউএসি) এর উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়।

রোববার (২০ জুলাই) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি সেমিনারের আগে অনুষ্ঠিত হওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিজনেজ আইডিয়া কম্পিটিশন (রুবিক) এর বিজয়ী দুটি দল তাদের প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করে এবং তাদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়৷

এ আয়োজনে বক্তারা তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা তৈরি এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁরা বলেন, অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটাতে হলে তরুণদের শুধু চাকরি প্রত্যাশী না হয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া, টেকসই উন্নয়ন ও আত্মনির্ভর অর্থনীতি গঠনে তরুণ সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ অনিবার্য।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মাসুমা হাবিব। তিনি বলেন, ‘উদ্যোক্তা হতে হলে প্রয়োজন সাহস, সৃজনশীলতা, পর্যবেক্ষণক্ষমতা, দক্ষতা এবং লেগে থাকার ধৈর্য। শুরুটা ছোট হলেও লক্ষ্যটা বড় রাখতে হবে। আইডিয়া জেনারেট করে তার সঙ্গে লেগে থাকতে পারলেই সফলতা আসবে। আমাদের দেশে ৫ কোটি তরুণ রয়েছে, যারা আমাদের ভবিষ্যৎ। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় ২২ হাজার তরুণ বিভিন্ন কর্মের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। কেউ ক্যাম্পাসে বই কিংবা পিঠা বিক্রি করেও উদ্যোক্তা হয়ে যাচ্ছে। উদ্যোক্তা হতে হলে শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শেষটাও কল্পনায় দেখতে জানতে হবে। সফল হতে হলে নিয়মনিষ্ঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তোমরা উদ্যোক্তা হও বা যা-ই হও না কেন, সততার সঙ্গে সফল হতে হবে।’

সেমিনারের সভাপতি রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ এই টার্মটা বারবার আসছে। এটা হচ্ছে, একটা রাষ্ট্রের যে জনগোষ্ঠী আছে, তার মধ্যে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অংশটা কত—তার একটা হিসাব। এ অংশটা যত বেশি হয়, সেই রাষ্ট্র তার দক্ষ জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যায়। আমরা যদি নরওয়ে, জাপান, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নেদারল্যান্ডসের কথা বলি—তারা অনেক উন্নত দেশ হলেও মহা বিপদে আছে। বিপদটা হলো, তারা এই ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’-এর দিকটাতে ভীষণভাবে পিছিয়ে। তাদের সবচেয়ে বড় চিন্তা হলো, ৬০ থেকে ৮০ বছর বয়সের যে জনগোষ্ঠী এবং যারা আগের মতো কর্মক্ষম নয়—সেই সংখ্যাটা অনেক বেড়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা এক ক্রান্তিকালীন সময়ের মধ্যেই আছি, কারণ ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’-এর সুযোগ আমরা ১০০ বছরে একবার পাই এবং বর্তমানে আমরা সেই সময়ের ভেতরেই আছি। আগামী ২০ বছর যদি আমরা আমাদের তরুণ জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ বহুদূর এগিয়ে যাবে। আর যদি এই সময়টা চলে যায়, তাহলে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়াটা অসম্ভব কঠিন হবে। তাই এ সমস্ত জায়গাতে রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে তোমরা (শিক্ষার্থীরা) ছাড়া গতি নেই। তোমরা সাহসী—আমি বিশ্বাস করি, তোমরা দেশের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে সক্ষম।’

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন খান, ইউজিসির স্ট্র‍্যটিজিক প্ল্যানিং অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ডিরেক্টর ড. দুর্গা রানী সরকার, এসপায়ার টূ ইনোভেট এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর রাশিদুল মান্নাফ কাবির ও এসএমই ফাউন্ডেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।

উল্লেখ্য, রুবিক কম্পিটেশন এ মোট ১১৫ টি টিম রেজিষ্ট্রেশন করে। এর মধ্যে ৬৮ টি বিজনেজ আইডিয়া জমা হয়। বাস্তবসম্মতা, ইউনিকনেস ও গ্রহণযোগ্যতা ইত্যাদি বিবেচনায় ১০টি দলকে নির্বাচন করা হয়৷ ১০টি দল থেকে বাছাই করে ৩টি দলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়৷ এর মধ্যে ১টি চ্যাম্পিয়ন ও ৩টি রানারআপ নির্বাচন করা হয়৷ চ্যাম্পিয়ন দল হলো টিম এমপাওয়ারহার। রানার্সআপ ৩টি দল হলো অ্যাসিডিক এভেঞ্জার্স, ওয়েভব্লক এবং মেলোনেস্ট। চ্যাম্পিয়ন দল পুরস্কার হিসেবে ৫০ হাজার টাকা ও রানার্সআপ ৩টি দলের মধ্যে ১ম রানার্সআপ ৩০ হাজার ও বাকি দুটি দল যথাক্রমে ২০ হাজার টাকা করে প্রাইজমানি পেয়েছে।