শিরোনাম :
Logo কয়রায় যৌথবাহিনীর চেকপোস্ট Logo লক্ষ্মীপুরে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকে ইসলামী আন্দোলন নেতৃবৃন্দের নগদ অর্থ প্রদান Logo বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চাঁদপুরে স্মরণকালের বর্ণাঢ্য র‌্যালি Logo জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা Logo শ্রীরাধার প্রেম ও প্রার্থনায় মুখর ইবির টিএসএসসি প্রাঙ্গণ Logo চবি শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ Logo রাকসু নিয়ে উত্তেজনা ; বক্তব্য দেওয়ার সময় শিবির সভাপতির বুকে বোতল নিক্ষেপ Logo মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পানির ফিল্টার দিলেন স্বেচ্ছাসেবী নারী উদ্যোক্তা সংগঠন বিজয়ী Logo চাঁদপুরে মাদক নির্মূলে সাহসিকতার সাথে কাজ করছে সহকারী পরিচালক মুহাঃ মিজানুর রহমান Logo পশ্চিম ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটিকে সংবর্ধনা – ঐক্যবদ্ধভাবে মিলনকে এমপি করার অঙ্গীকার

ইবি ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বাস অবরোধ

কুষ্টিয়ার চৌড়হাস বাসস্ট্যান্ডে জনি পরিবহনের এক লোকাল বাসের হেল্পারের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রী। ভুক্তভোগী রাফসান আরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে ৪টি রূপসা বাস আটক করে।

জানা যায়, ভুক্তভোগী ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে বাসে এসে কুষ্টিয়ার চৌঁড়হাস থেকে জনি বাসে উঠেন। এসময় ভাড়া নিয়ে হেলপারের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে হেলপার ভুক্তভোগীর ফোন কেড়ে নিয়ে গালে থাপ্পড় মারে ও মাথায় ২-৩ টা ঘুষি ও ধাক্কা মেরে হাতে আঘাত করে। পরে ভুক্তভোগীর ভিডিও ধারণ ও জোর করে ভুক্তভোগীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মেয়েটার থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে তার গালে থাপ্পড় মারছে। গায়ে হাত দিয়েছে। আশেপাশে এত মানুষ থাকার পরও কেউ কথা বলছে না। আমি ওই মেয়েকে বলছি কেউ কথা না বললেও আমি তোমার বিষয়ে সবখানে বলবো।

ভুক্তভোগী রাফসান আরা বলেন, পরীক্ষার জন্য আমি ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে আসছিলাম। চৌড়হাস থেকে আমি রূপসা বাসে উঠতে চাইছিলাম। তখন ওনারা আমাকে আরেকটা বাস (জনি) দেখিয়ে বললো এটাতে উঠেন। এটা দ্রুত যাবে। তখন হেলপারকে বললাম আমি যেটা বেসিক ভাড়া ২৫ টাকা ভাড়া দিবো। তখন বাসে উঠার পর টাকা নেওয়ার সময় ৪০ টাকা রাখছে। তখন বললাম ভাড়াই তো ২৫ টাকা।

তিনি আরো বলেন, তখন হেলপার আমাকে বললো ‘কোথাকার অশিক্ষিত মেয়ে তুমি, আমি শেখপাড়ায় থাকি ভাড়া কত এটা আমরা জানি না? নাটক শুরু করছো।’ তখন আমি আমার স্বামীকে ফোন দিতে গেলে ফোন কেড়ে নিয়ে গায়ে আঘাত করছে। আমার মুখে ২-৩টা ঘুসি মারছে। আমি যখন প্রতিবাদ করতে ছিলাম একটা লোকও আমার সাপোর্টে কথা বলতে ছিল না। একটা মহিলা বেড়িয়ে বললো সব দোষ ওই লোকের। কেউ কোনো কথা শুনছিলো না। আমার বাপ-মা তুলে গালিগালাজ করতে ছিল। এমনকি আমার ভিডিও ধারণ করে ওরা আমাকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. খুরশিদা জাহান বলেন, ওনার হাতে, কপালে, মাথায় আর নাকে আঘাত পেয়েছে। গুরুতর তেমন কিছু হয়নি, রক্তপাত হয়নি। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি ও পর্যবেক্ষণে থাকতে বলেছি। এরপর কোনো প্রয়োজন হলে আসতে বলেছি।

শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ঘটনায় জড়িত বাস সহযোগীর শাস্তি নিশ্চিত করা, ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, ক্যাম্পাস থেকে জনি বাস বাতিল ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ রুট পারমিট বাতিল করা।

লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. জুলফিকার হোসেন শিক্ষার্থীদের বলেন, তোমরা যেভাবে চাও সেভাবেই হবে। এসব বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যারা মারধর ও হেনস্তা করেছে তাদের বিচার ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।

পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আব্দুর রউফ বলেন, আমরা ঘটনাটি জানতে পেরেছি। শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকটা বাস আটক করেছে। বাসগুলো ক্যাম্পাসে নিরাপদে রাখা হয়েছে। মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, মালিক সমিতি ও বাস মালিকের সাথে কথা হয়েছে। তারা ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি পাঠাবে। তারপর সবাই বসে পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।

ট্যাগস :

কয়রায় যৌথবাহিনীর চেকপোস্ট

ইবি ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বাস অবরোধ

আপডেট সময় : ০৫:০৮:২৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

কুষ্টিয়ার চৌড়হাস বাসস্ট্যান্ডে জনি পরিবহনের এক লোকাল বাসের হেল্পারের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রী। ভুক্তভোগী রাফসান আরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে ৪টি রূপসা বাস আটক করে।

জানা যায়, ভুক্তভোগী ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে বাসে এসে কুষ্টিয়ার চৌঁড়হাস থেকে জনি বাসে উঠেন। এসময় ভাড়া নিয়ে হেলপারের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে হেলপার ভুক্তভোগীর ফোন কেড়ে নিয়ে গালে থাপ্পড় মারে ও মাথায় ২-৩ টা ঘুষি ও ধাক্কা মেরে হাতে আঘাত করে। পরে ভুক্তভোগীর ভিডিও ধারণ ও জোর করে ভুক্তভোগীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মেয়েটার থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে তার গালে থাপ্পড় মারছে। গায়ে হাত দিয়েছে। আশেপাশে এত মানুষ থাকার পরও কেউ কথা বলছে না। আমি ওই মেয়েকে বলছি কেউ কথা না বললেও আমি তোমার বিষয়ে সবখানে বলবো।

ভুক্তভোগী রাফসান আরা বলেন, পরীক্ষার জন্য আমি ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে বগুড়া থেকে আসছিলাম। চৌড়হাস থেকে আমি রূপসা বাসে উঠতে চাইছিলাম। তখন ওনারা আমাকে আরেকটা বাস (জনি) দেখিয়ে বললো এটাতে উঠেন। এটা দ্রুত যাবে। তখন হেলপারকে বললাম আমি যেটা বেসিক ভাড়া ২৫ টাকা ভাড়া দিবো। তখন বাসে উঠার পর টাকা নেওয়ার সময় ৪০ টাকা রাখছে। তখন বললাম ভাড়াই তো ২৫ টাকা।

তিনি আরো বলেন, তখন হেলপার আমাকে বললো ‘কোথাকার অশিক্ষিত মেয়ে তুমি, আমি শেখপাড়ায় থাকি ভাড়া কত এটা আমরা জানি না? নাটক শুরু করছো।’ তখন আমি আমার স্বামীকে ফোন দিতে গেলে ফোন কেড়ে নিয়ে গায়ে আঘাত করছে। আমার মুখে ২-৩টা ঘুসি মারছে। আমি যখন প্রতিবাদ করতে ছিলাম একটা লোকও আমার সাপোর্টে কথা বলতে ছিল না। একটা মহিলা বেড়িয়ে বললো সব দোষ ওই লোকের। কেউ কোনো কথা শুনছিলো না। আমার বাপ-মা তুলে গালিগালাজ করতে ছিল। এমনকি আমার ভিডিও ধারণ করে ওরা আমাকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. খুরশিদা জাহান বলেন, ওনার হাতে, কপালে, মাথায় আর নাকে আঘাত পেয়েছে। গুরুতর তেমন কিছু হয়নি, রক্তপাত হয়নি। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি ও পর্যবেক্ষণে থাকতে বলেছি। এরপর কোনো প্রয়োজন হলে আসতে বলেছি।

শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ঘটনায় জড়িত বাস সহযোগীর শাস্তি নিশ্চিত করা, ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, ক্যাম্পাস থেকে জনি বাস বাতিল ও কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ রুট পারমিট বাতিল করা।

লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. জুলফিকার হোসেন শিক্ষার্থীদের বলেন, তোমরা যেভাবে চাও সেভাবেই হবে। এসব বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যারা মারধর ও হেনস্তা করেছে তাদের বিচার ও ভুক্তভোগী ছাত্রীর ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।

পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আব্দুর রউফ বলেন, আমরা ঘটনাটি জানতে পেরেছি। শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকটা বাস আটক করেছে। বাসগুলো ক্যাম্পাসে নিরাপদে রাখা হয়েছে। মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, মালিক সমিতি ও বাস মালিকের সাথে কথা হয়েছে। তারা ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি পাঠাবে। তারপর সবাই বসে পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।