চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন আর নেই। শুক্রবার (১৩ জুন) সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ এই রাজনীতিক। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসাদুল হক বিশ্বাস তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন ছেলুন জোয়ার্দ্দার। শেষদিকে এভার কেয়ার হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্ট থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়, এরপরই তার মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গার আরামপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৪৬ সালের ১৫ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার। ছাত্রজীবনেই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। চুয়াডাঙ্গা মহকুমা ছাত্রলীগ ও পরবর্তীতে যুবলীগের সভাপতি হিসেবে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে সভাপতি নির্বাচিত হন।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের মেঘালয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী এই মুক্তিযোদ্ধা রাজনৈতিক জীবন ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তিনি চুয়াডাঙ্গা রাইফেল ক্লাব, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার দীর্ঘদিনের দায়িত্বে ছিলেন।
ছেলুন জোয়ার্দ্দার ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান, যদিও ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতায় তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও চুয়াডাঙ্গার রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছেলুন জোয়ার্দ্দারের মৃত্যুতে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দলীয় নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী ও এলাকাবাসীর মধ্যে নেমে এসেছে গভীর শোক ও বেদনা।
মরহুমের জানাজা ও দাফনের বিষয়টি পারিবারিকভাবে পরবর্তীতে জানানো হবে বলে জানা গেছে।
ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।