সন্ত্রাসী দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে দরপত্র অংশগ্রহণে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মো. হাবিবুর রহমান পান্না নামে একজনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) শেরে বাংলা নগরের পর্যটন করপোরেশন ভবনে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কক্সবাজারের হোটেল শৈবালের আওতাধীন গলফ মাঠের ষোল একর বিরাশি শতাংশ উন্মুক্ত জমি পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক বছরের জন্য লিজ দেওয়ার লক্ষ্যে আগ্রহী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। এ দরপত্র আহ্বানের শেষ তারিখ ছিল ২২ মে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পর্যটন করপোরেশনে আসেন কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এ দরপত্রে ৩১টি শিডিউল বিক্রি করা হয়। তার মধ্যে তিনটি দরপত্র জমাদানের সুযোগ দেওয়া হয়। বাকি ২৮ জনকে স্থানীয় সন্ত্রাসী দিয়ে ভয়-ভীতি দেখিয়ে করপোরেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরে এ বিষয়ে পর্যটন করপোরেশন চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মেসার্স আইল্যান্ড এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর হোসেন বাবু বলেন, ‘আমাদের টেন্ডারের শিডিউল ড্রপ করতে দেয়নি হাবিবুর রহমান পান্না। ৩১ জনের মধ্যে ২৮ জন শিডিউল ড্রপ করতে পারেনি। কক্সবাজার থেকে ঢাকার আগারগাঁওয়ে এসে টেন্ডার ড্রপ করতে পারিনি পান্নার কারণে। তার লোকজন হুমকি দিয়েছেন, পান্নার সঙ্গে কথা বলা ছাড়া টেন্ডার জনা দেওয়া যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন যদি টেন্ডার ড্রপ করতে না পারি, বলার কিছু নেই। আমরা চাচ্ছি পুনরায় টেন্ডার হোক। যেখানে সবাই টেন্ডার জমা দিতে পারবো। যে ভালো রেট দেবে, সে যেন পায়। পান্না যে রেট দিচ্ছেন তার থেকে অন্যরা আরও বেশি রেট দিতে পারতেন। এর ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাতে যাচ্ছে। ধরেন গত বছর ডাক ছিল ৯৬ লাখ টাকা। পান্না এখন এক কোটি ২০ লাখে টেন্ডার ড্রপ করেছে। অন্য কেউতো আরও বেশি ২ কোটি টাকার টেন্ডার ড্রপ করতে পারতো। তিনি আমাদের বাধা দিয়ে টেন্ডার ড্রপ করতে দিল না।’
আরেক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নাদিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘সন্ত্রাসী পান্না আমাকে টেন্ডার জমা দিতে দেয়নি। পান্নার সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনজন টেন্ডার জমা দিয়েছেন। আগারগাঁও এলাকার ওয়ার্ড পর্যায়ের একটি রাজনৈতিক দলের নেতা পান্না। পান্না বলেন, আপনারা কেউ টেন্ডার জমা দেবেন না। আমরা তিনটি টেন্ডার জমা করবো। টেন্ডার জমা দিতে গেলে অসুবিধা হবে।’
অভিযুক্ত মো. হাবিবুর রহমান পান্না বলেন, ‘আমি নিজেই টেন্ডার জমা দিতে পারিনি। তিনদিন হয়ে গেল টেন্ডারের বিষয়ে কিছুই জানতে পারছি না।’
তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে পান্না বলেন, ‘আমার নামে প্যাঁচ লাগানো বা ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে কেউ। আমিও এই ব্যবসা দীর্ঘ ২০ বছর ধরে করি। এই কারণে আমি নিজেও শিডিউল কিনেছি। এখন আমি নিজেও জানি না শিডিউলের টাকা ফেরত পাবো কিনা।’
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়েমা শাহীন সুলতানা বলেন, ‘ভুক্তভোগী কোম্পানিগুলো অভিযোগ দিয়েছে, পেয়েছি। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। টেন্ডারের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের টেন্ডার কমিটিকে অভিযোগটি দেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’