মঙ্গলবার | ২ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক Logo পলাশবাড়ীতে জুলাই যোদ্ধার বাবার প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের অভিযোগ Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo বিএনপি চেয়ারপার্সনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় জীবননগরে ছাত্রদল ও শ্রমিকদের দোয়া Logo জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারে ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের Logo কারুবাক পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পেলেন এইচএম জাকির Logo চাঁদপুরে নতুন খাবারের আকর্ষণ ‘কাচ্চি ডাইন’ গ্রাহকদের ভিড় বেড়েই চলছে Logo বেগম খালেদা জিয়া’র আশু রোগমুক্তি কামনায় ৮ নং ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo নোবিপ্রবির আধুনিকায়নে ৩৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ

ভিসির কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন- নিয়ন্ত্রণ প্রোভিসির

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর উপর নজরদারি করার উদ্দেশ্যে ভিসির কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরা স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী’র বিরুদ্ধে। কিন্তু এই বিষয়ে অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপা-উপাচার্য।

জানা যায়, ইবির প্রো-ভিসি ড. এম এয়াকুব আলীর নির্দেশে ক্যামেরা লাগানোর কাজ করেন কুষ্টিয়ার ইউনিক কম্পিউটার নামের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জে এম ইলিয়াসের সহায়তায় কুষ্টিয়ার ইউনিক কম্পিউটারের মাধ্যমে এই ক্যামেরা লাগালোর কাজ করেন প্রো-ভিসি।

আরও জানা যায়, জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ক্যামেরাগুলো ভেঙে দেন ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী এসব ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নেন। প্রশাসনিক ভবনের দুই গেট ও ভিসির কার্যালয়ে করিডোরে সহ মোট ৮টি ক্যামেরা স্থাপন করে নেন তিনি। ভিসির অফিসের উপর নজরদারি করতে ভিসির করিডোরে এ সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেন বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। পরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানতে পেরে এসব ক্যামেরা খুলে ফেলতে নির্দেশ দিলে পরেরদিন এসব ক্যামেরা খুলে ফেলেন অপারেটররা।

সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজে নিয়োজিত তুষার বলেন, ‘কাল লাগিয়ে আজকে সকালে বিল নিতে এসে খুলে ফেলছি।’
খুলে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রো-ভিসি স্যার আমাকে বলেছিলো যে, দেখো ভিসি স্যারের ঐ জায়গায় অনেক ঝামেলা হয়, আমি অফিসে যেতে যেতে দেরি হয়। এজন্য মাঝে মাঝে তিনি রাগারাগি করেন। তুমি ঐ জায়গায় একটা ক্যামেরা দিয়ে দাও, যাতে কোনো সমস্যা হলে আমি দ্রুত যেতে পারি। তো স্যারের অফিস টাইম শেষ হয়ে যায়। আমি পরে এক ঘন্টার মধ্যে কাজটা শেষ করে ফেলি। ক্যামেরাগুলোর কানেকশন প্রোভিসির স্যারের অফিসে করা হয়। সব মিলিয়ে ক্যামেরা লাগানো হয়েছে ৮টা। আগের ছিলো তিনটা, আর নতুন আনা হইছে পাঁচটা। এর মধ্যে প্রোভিসি স্যারের রুমে দুইটা, তার পিএসের রুমে একটা ও করিডোরে একটা, সিঁড়িতে একটা, ভিসির দরজার সামনে একটা ও প্রশাসন ভবনের সামনে ও পিছনে দুই গেইটে দুইটা লাগানো হইছে। পরে বিল আনতে গেলে ভিসি স্যার ডেকে নিয়ে রাগারাগি করে ক্যামেরা খুলে ফেলতে বলেন। আমি সেসব খুলে ফেলি।’

এ বিষয়ে উপাচার্যের পিএস গোলাম মাহফুজ মঞ্জু বলেন,’আমি ঢাকায় থাকায় এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। প্রক্টর স্যার ভালো বলতে পারবেন।’

প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘প্রোভিসি স্যার সিসি তার কার্যালয়ে ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে ভিসি স্যারের কার্যালয়ের সামনে একটা ক্যামেরা লাগানো হয়। ভিসি স্যার বিষয়টি জানতে পারলে তা খুলে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে এই বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই হয়তো আইসিটি সেলের পরিচালক ভালো বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. মো: শাহজাহান আলী বলেন, ‘প্রো-ভিসি স্যারের তো ডিমান্ড ছিলো। সেটাও অনেক দিন আগের। তার জন্য আমাদেরকে ফাইল পাঠাইছিলো। ঐ ফাইল এখনো চলমান আছে। তারপরে ভিসি স্যার ওনার নিজেদের প্রয়োজন মনে করে উনি সিসি ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। এরমধ্যে আর একটা বিষয় আমি শুনেছি, সে বিষয়ে আমিও কনফার্ম না। শুনেছি, প্রো-ভিসি স্যারও প্রয়োজন মনে করে ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।’

এ বিষয়ে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ‘যারা কাজ করেছে তারা বুঝতে ভুল করেছে। আমি তাদের বলেছি তিন তলার সিঁড়িতে একটা লাগাতে যেটার কানেকশন থাকবে আমার রুমে। আর ভিসি স্যারের রুমের সামনের ক্যামেরার কানেকশন থাকবে ভিসি স্যারের রুমে।’

এসব বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ কোনো মন্তব্য প্রকাশ করেন নি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক

ভিসির কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন- নিয়ন্ত্রণ প্রোভিসির

আপডেট সময় : ০২:৫৬:৩০ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহর উপর নজরদারি করার উদ্দেশ্যে ভিসির কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরা স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী’র বিরুদ্ধে। কিন্তু এই বিষয়ে অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপা-উপাচার্য।

জানা যায়, ইবির প্রো-ভিসি ড. এম এয়াকুব আলীর নির্দেশে ক্যামেরা লাগানোর কাজ করেন কুষ্টিয়ার ইউনিক কম্পিউটার নামের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জে এম ইলিয়াসের সহায়তায় কুষ্টিয়ার ইউনিক কম্পিউটারের মাধ্যমে এই ক্যামেরা লাগালোর কাজ করেন প্রো-ভিসি।

আরও জানা যায়, জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ক্যামেরাগুলো ভেঙে দেন ক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী এসব ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নেন। প্রশাসনিক ভবনের দুই গেট ও ভিসির কার্যালয়ে করিডোরে সহ মোট ৮টি ক্যামেরা স্থাপন করে নেন তিনি। ভিসির অফিসের উপর নজরদারি করতে ভিসির করিডোরে এ সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেন বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। পরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানতে পেরে এসব ক্যামেরা খুলে ফেলতে নির্দেশ দিলে পরেরদিন এসব ক্যামেরা খুলে ফেলেন অপারেটররা।

সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজে নিয়োজিত তুষার বলেন, ‘কাল লাগিয়ে আজকে সকালে বিল নিতে এসে খুলে ফেলছি।’
খুলে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রো-ভিসি স্যার আমাকে বলেছিলো যে, দেখো ভিসি স্যারের ঐ জায়গায় অনেক ঝামেলা হয়, আমি অফিসে যেতে যেতে দেরি হয়। এজন্য মাঝে মাঝে তিনি রাগারাগি করেন। তুমি ঐ জায়গায় একটা ক্যামেরা দিয়ে দাও, যাতে কোনো সমস্যা হলে আমি দ্রুত যেতে পারি। তো স্যারের অফিস টাইম শেষ হয়ে যায়। আমি পরে এক ঘন্টার মধ্যে কাজটা শেষ করে ফেলি। ক্যামেরাগুলোর কানেকশন প্রোভিসির স্যারের অফিসে করা হয়। সব মিলিয়ে ক্যামেরা লাগানো হয়েছে ৮টা। আগের ছিলো তিনটা, আর নতুন আনা হইছে পাঁচটা। এর মধ্যে প্রোভিসি স্যারের রুমে দুইটা, তার পিএসের রুমে একটা ও করিডোরে একটা, সিঁড়িতে একটা, ভিসির দরজার সামনে একটা ও প্রশাসন ভবনের সামনে ও পিছনে দুই গেইটে দুইটা লাগানো হইছে। পরে বিল আনতে গেলে ভিসি স্যার ডেকে নিয়ে রাগারাগি করে ক্যামেরা খুলে ফেলতে বলেন। আমি সেসব খুলে ফেলি।’

এ বিষয়ে উপাচার্যের পিএস গোলাম মাহফুজ মঞ্জু বলেন,’আমি ঢাকায় থাকায় এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। প্রক্টর স্যার ভালো বলতে পারবেন।’

প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো: শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘প্রোভিসি স্যার সিসি তার কার্যালয়ে ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। এর মধ্যে ভিসি স্যারের কার্যালয়ের সামনে একটা ক্যামেরা লাগানো হয়। ভিসি স্যার বিষয়টি জানতে পারলে তা খুলে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে এই বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই হয়তো আইসিটি সেলের পরিচালক ভালো বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. মো: শাহজাহান আলী বলেন, ‘প্রো-ভিসি স্যারের তো ডিমান্ড ছিলো। সেটাও অনেক দিন আগের। তার জন্য আমাদেরকে ফাইল পাঠাইছিলো। ঐ ফাইল এখনো চলমান আছে। তারপরে ভিসি স্যার ওনার নিজেদের প্রয়োজন মনে করে উনি সিসি ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। এরমধ্যে আর একটা বিষয় আমি শুনেছি, সে বিষয়ে আমিও কনফার্ম না। শুনেছি, প্রো-ভিসি স্যারও প্রয়োজন মনে করে ক্যামেরা লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।’

এ বিষয়ে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ‘যারা কাজ করেছে তারা বুঝতে ভুল করেছে। আমি তাদের বলেছি তিন তলার সিঁড়িতে একটা লাগাতে যেটার কানেকশন থাকবে আমার রুমে। আর ভিসি স্যারের রুমের সামনের ক্যামেরার কানেকশন থাকবে ভিসি স্যারের রুমে।’

এসব বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ কোনো মন্তব্য প্রকাশ করেন নি।