বুধবার | ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর Logo খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন সিবি’এর দোয়া মাহফিল Logo জলবায়ু সহিষ্ণু ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশের কৃষকদের সক্ষম করে তুলতে হবে— আন্তর্জাতিক সেমিনারে নোবিপ্রবি উপাচার্য Logo পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক Logo পলাশবাড়ীতে জুলাই যোদ্ধার বাবার প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের অভিযোগ Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo বিএনপি চেয়ারপার্সনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় জীবননগরে ছাত্রদল ও শ্রমিকদের দোয়া Logo জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারে ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের Logo কারুবাক পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পেলেন এইচএম জাকির Logo চাঁদপুরে নতুন খাবারের আকর্ষণ ‘কাচ্চি ডাইন’ গ্রাহকদের ভিড় বেড়েই চলছে

এক হাত নেই,তবুও কাজ করে সংসার চালান আজগর হোসেন

জীবনযুদ্ধে হার না মানা এক যোদ্ধা আজগর হোসেন (৩০)। তিনি একজন দিনমজুর। দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন একটি হাত। পুরো পরিবার এখন নির্ভরশীল তার এক হাতের ওপর। ঘরে ২ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে আজগর হোসেনের সংসার। তার আয়ে কোনোরকম চলছে পরিবারটি।

এলাকায় কাজ না থাকলেও বর্তমানে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বাঁচাইয়া মেসার্স এসএবি বিকস ফিল্ডে শ্রমিকের কাজ করের তিনি। ওই ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে যে টাকা উপার্জন করেন, তা দিয়ে চলে পরিবারটি।
জানা যায়, ২০ বছর আগে ইটভাটায় এক দুর্ঘটনায় আজগর হোসেন হারিয়ে ফেলেন তার ডান হাতটি। এক হাত না থাকলেও জীবন সংগ্রামে ঠিকে থাকার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। কোনো ভিক্ষাবৃত্তি না করে আত্মনির্ভরশীল হতে কাজ করছেন সে।

তবে এমন বাস্তবতায় তিনি থেমে থাকেননি। এক হাত নিয়েই ধরেন সংসারের হাল। যদিও আগের চেয়ে তার উপার্জন কমেছে, তবুও পরিবারকে বাঁচাতে দিন রাত পরিশ্রম করে চলছেন আজগর হোসেন। আজগর হোসেন নোয়াখালী জেলার সুবর্নচর উপজেলার চররশিদ গ্রামের অধিবাসী আব্দুল মালেকের ছেলে। বর্তমানে সে কচুয়ার বাচাঁইয়া ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করছেন।

শ্রমিক মো. আজগর হোসেন বলেন, আমার জায়গা জমি বলতে ভিটেমাটি ছাড়া কিছুই নেই। ২০০৫ সালে ইটভাটায় কাজ করতে গিয়ে দূর্ঘটনায় আমার ডান হাতটি নষ্ট হয়ে কাটা পড়ে । আমি এই এক হাত দিয়ে ইটভাটায় মাটি কাটা, ইট সারিবদ্ধ সহ বিভিন্ন কাজ করে থাকি। তবে আমার এক হাত নেই বলে আগের মতো কেউ আর কাজে নিতে চায় না। শরীরে যতক্ষণ দম আছে এক হাতেই কাজ করে যাব, তবুও ভিক্ষার মতো নিচু কাজ করব না।

অন্য শ্রমিকরা বলেন, আজগর হোসেন ও তার পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এক হাতের ওপর চলছে পুরো সংসার। মেয়ে ও পরিবারের খরচ যোগান দিতে না পারায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

এ বিষয়ে মের্সাস এসএবি বিকস্ এর পরিচালক মো. এমরান হোসেন জনি বলেন, এ ইটভাটায় প্রায় শতাধিক শ্রমিক কাজ করে। কেউ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসেন। তারই মধ্যে আজগর হোসেন তার এক হাত নেই, তবুও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তার মতো অন্যরা এভাবে কাজ করলেও হয়তো ভিক্ষাবৃত্তি রোধ করা যেত। আজগর হোসেন অনেক মানুষের অনুপ্রেরনা।

ছবি: কচুয়ার বাচাঁইয়া ইটভাটায় কাজ করছেন এক হাত না থাকা আজগর হোসেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর

এক হাত নেই,তবুও কাজ করে সংসার চালান আজগর হোসেন

আপডেট সময় : ০৩:২১:২৫ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

জীবনযুদ্ধে হার না মানা এক যোদ্ধা আজগর হোসেন (৩০)। তিনি একজন দিনমজুর। দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন একটি হাত। পুরো পরিবার এখন নির্ভরশীল তার এক হাতের ওপর। ঘরে ২ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে আজগর হোসেনের সংসার। তার আয়ে কোনোরকম চলছে পরিবারটি।

এলাকায় কাজ না থাকলেও বর্তমানে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বাঁচাইয়া মেসার্স এসএবি বিকস ফিল্ডে শ্রমিকের কাজ করের তিনি। ওই ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করে যে টাকা উপার্জন করেন, তা দিয়ে চলে পরিবারটি।
জানা যায়, ২০ বছর আগে ইটভাটায় এক দুর্ঘটনায় আজগর হোসেন হারিয়ে ফেলেন তার ডান হাতটি। এক হাত না থাকলেও জীবন সংগ্রামে ঠিকে থাকার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। কোনো ভিক্ষাবৃত্তি না করে আত্মনির্ভরশীল হতে কাজ করছেন সে।

তবে এমন বাস্তবতায় তিনি থেমে থাকেননি। এক হাত নিয়েই ধরেন সংসারের হাল। যদিও আগের চেয়ে তার উপার্জন কমেছে, তবুও পরিবারকে বাঁচাতে দিন রাত পরিশ্রম করে চলছেন আজগর হোসেন। আজগর হোসেন নোয়াখালী জেলার সুবর্নচর উপজেলার চররশিদ গ্রামের অধিবাসী আব্দুল মালেকের ছেলে। বর্তমানে সে কচুয়ার বাচাঁইয়া ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করছেন।

শ্রমিক মো. আজগর হোসেন বলেন, আমার জায়গা জমি বলতে ভিটেমাটি ছাড়া কিছুই নেই। ২০০৫ সালে ইটভাটায় কাজ করতে গিয়ে দূর্ঘটনায় আমার ডান হাতটি নষ্ট হয়ে কাটা পড়ে । আমি এই এক হাত দিয়ে ইটভাটায় মাটি কাটা, ইট সারিবদ্ধ সহ বিভিন্ন কাজ করে থাকি। তবে আমার এক হাত নেই বলে আগের মতো কেউ আর কাজে নিতে চায় না। শরীরে যতক্ষণ দম আছে এক হাতেই কাজ করে যাব, তবুও ভিক্ষার মতো নিচু কাজ করব না।

অন্য শ্রমিকরা বলেন, আজগর হোসেন ও তার পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। এক হাতের ওপর চলছে পুরো সংসার। মেয়ে ও পরিবারের খরচ যোগান দিতে না পারায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

এ বিষয়ে মের্সাস এসএবি বিকস্ এর পরিচালক মো. এমরান হোসেন জনি বলেন, এ ইটভাটায় প্রায় শতাধিক শ্রমিক কাজ করে। কেউ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসেন। তারই মধ্যে আজগর হোসেন তার এক হাত নেই, তবুও তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তার মতো অন্যরা এভাবে কাজ করলেও হয়তো ভিক্ষাবৃত্তি রোধ করা যেত। আজগর হোসেন অনেক মানুষের অনুপ্রেরনা।

ছবি: কচুয়ার বাচাঁইয়া ইটভাটায় কাজ করছেন এক হাত না থাকা আজগর হোসেন।