চুয়াডাঙ্গায় বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে এসএসএসসি পরীক্ষার্থী। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বুজরুকগড়গড়ি মাদ্রাসাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার বিকাল থেকে ওই পরীক্ষার্থী প্রেমিক মো. নাঈমের বাড়ি অবস্থান নিলেও সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনার পর থেকে প্রেমিক মো. নাঈম পলাতক রয়েছে।
এ বিষয় জানার পর উৎসুক জনতা সেখানে ভীড় করে। এক পর্যায়ে উপস্থিত লোকজন ওই শিক্ষার্থীকে প্রেমিকের বাড়িতে তুলে দেয়। এক পর্যায়ে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এলাকাবাসী জানায়, সন্ধ্যায় নাঈমের বাড়িতে হইচই শুনে তারা ছুটে আসে। এক পর্যায়ে মেয়েটির দাবীর বিষয়টি তারা জানতে পারে। পরে উৎসক জনতা মেয়েটিকে নাঈমের বাড়ি রেখে যায়। এক সময় পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে।
বিয়ের দাবী করা ওই শিক্ষার্থী জানায়, তার বাড়ী চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানার ঈশ্বরচন্দ্র গ্রামে। সে দর্শনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। তিন বছর ধরে নাঈমের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক। সম্প্রতি নাঈম তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। সে সোমবারের গণিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ শেষে প্রেমিকের সাথে দেখা করতে চুয়াডাঙ্গায় আসে। এক পর্যায়ে জানতে পারে নাঈম অন্যত্র বিয়ে করতে যাচ্ছে।
প্রেমিকের অন্যত্র বিয়ের বিষয়টি জানার পর সে প্রেমিকের বাড়ির সামনে অনশনে বসে। দাবী করে বিয়ের। এ ঘটনার পর থেকে প্রেমিক আর বাড়ি ফিরে আসেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস জানান, আমাদের এলাকার নয়নের ছেলের সাথে একটা মেয়ে তিন বছরের প্রেম ছিল। আজ নয়নের ছেলের অন্য জায়গায় বিয়ের কথা শুনে ওই মেয়েটা তার বাড়ি এসে অবস্থান করছে। এ খবর শুনে আমিও আবার দেখতে আসলাম।
স্থানীয় ছাত্রদল নেতা চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের স্কুল বিষয়ক সম্পাদক সাইমুন ইসলাম শান্ত বলেন, মেয়েটি জানিয়েছে, এই এলাকার নাঈমের সাথে ওই মেয়েটির সম্পর্ক ছিল। আজ নাঈমের বিয়ের কথা শুনে সে নাইমের বাড়িতে বর্তমানে অবস্থান করছে। তার ভাষ্যমতে, তাদের একাধিক বার শারীরিক সম্পর্কও হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় উৎসুক জনতাদের ভিড় নাঈমের বাসার সামনে। এখানে পুলিশ এসেছে। আশা করছি একটা সমাধান হবে।
চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপি’র সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি বলেন, এই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম দেখলাম অনেক ভিড়। স্থানীয়দের কাছে শুনলাম বিয়ের দাবিতে এসএসসি পরীক্ষার্থী তরুণী নয়নের বাড়িতে অবস্থান করছে। এখানে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার একটি টিম এসেছে। আমরা স্থানীয়রা এবং পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় খুব দ্রুতই মীমাংসার চেষ্টা করছি।
ঘটনাস্থলে পুলিশ দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা না করতে পেরে দুপক্ষ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় আসে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থী তার দাবীতে অনঢ় অবস্থানে ছিলো।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) হোসেন আলী বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা থানায় এসেছিলেন। তারা উভয়পক্ষের মধ্যে মিমাংসার চেষ্টা করছিলেন। মিমাংসা না হলে থানায় অভিযোগ করবে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।