শিরোনাম :
Logo জীবননগরে ডিবির অভিযান, গাঁজাসহ আটক ২ Logo জবিস্থ চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রকল্যাণের নবীনবরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo চাঁদপুরে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ড্যাবের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল Logo ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পাবিপ্রবির দুই শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার Logo যে ভিটামিনের অভাবে স্মৃতিশক্তি কমে যায় Logo রোজায় সুস্থ থাকতে বিভিন্ন শরবত ও পানীয়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা Logo কুবিতে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ; প্রমাণ বিনষ্টসহ ৫ দাবি শিক্ষার্থীদের Logo হাবিপ্রবি শস্যবৃত্ত সংগঠনের নেতৃত্বে সৌরভ ও আকাশ Logo মুন্সিগঞ্জে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। Logo কানাডায় টপ টোয়েন্টি অ্যাওয়ার্ড পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তারিফ মাহমুদ

মুন্সিগঞ্জে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

Oplus_131072

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী মাজেদা বেগমকে (৩০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায় আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হয়।

আজ রোববার বেলা ১টার দিকে মুন্সিগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী আব্দুল হান্নান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হোসেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত মাজেদা বেগম শ্রীনগর উপজেলার পুটিমারা গ্রামের অলিউল্লাহ মোল্লার স্ত্রী।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদীর ভাই অলিউল্লাহ মোল্লা সৌদি আরব প্রবাসী। তিনি মাঝে মাঝে বাড়িতে আসতেন। তিন সন্তান নিয়ে তাঁর স্ত্রী মাজেদা বেগম আলাদা থাকেন। সর্বশেষ অলিউল্লাহ সৌদি আরব থেকে দেশে আসার পর তাঁর স্ত্রী মাজেদা বেগমের সঙ্গে সংসারের বিষয়াদি নিয়ে মনোমালিন্য হয়।

২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাতের খাবার খেয়ে সৌদি প্রবাসী অলিউল্লাহ তাঁর বসত ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। পরের দিন সকাল ৬টার দিকে অভিযুক্ত মাজেদা বেগম তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এ সময় মাজেদা বেগমকে ভাশুর ও মামলার বাদী, কোথায় যাওয়া হচ্ছে জিজ্ঞেস করেন। এসময় তিনি জানান- তাঁর স্বামীর টিকেটের টাকা সংগ্রহ করার জন্য বাইরে যাচ্ছেন।

পরে দুপুর ১২টার দিকে অলিউল্লার বাসায় পুলিশ ও লোকজন দেখে তার বড় ভাই মামলার বাদী পুলিশ প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের সহায়তায় অলিউল্লাহর ঘরের দরজা খুলে ভেতরে অলিউল্লাহর মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় গলায় ওড়না পেঁচানো ও হাতে পায়ে রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। পরে স্থানীয়রা ও পুলিশ জানতে পারে, অলিউল্লাহর খাবারের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী মাজেদা বেগম অন্যান্যদের সহযোগিতায় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে গলায় ফাঁস দিয়ে অলিউল্লাহকে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় মৃত ওয়ালীউল্লাহর ভাই উপজেলার পুটিমারা গ্রামের ইদ্রিস মোল্লার ছেলে আহসান উল্লাহ (৬৮) বাদী হয়ে ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি শ্রীনগর থানায় ভাই হত্যার দায়ে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযুক্ত মাজেদা বেগমের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামি মাজেদা বেগমকে দোষী সাব্যস্ত করে ওই রায় ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী আহসানুল্লাহ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের স্ত্রী ছোট ভাইকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করায় আমি শ্রীনগর থানায় মামলা করি। ওই মামলা ৮ বছর পর আজ আদালত রায় দিয়েছেন। রায়ে আমরা বাদীপক্ষ সন্তুষ্ট হয়েছি।’

রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. হালিম হোসেন বলেন, ‘আদালত মামলা পর্যালোচনা করে সঠিক রায় দিয়েছেন। আদালতের রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট পোষণ করছি।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জীবননগরে ডিবির অভিযান, গাঁজাসহ আটক ২

মুন্সিগঞ্জে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

আপডেট সময় : ০৬:৩২:৫৪ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী মাজেদা বেগমকে (৩০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায় আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হয়।

আজ রোববার বেলা ১টার দিকে মুন্সিগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী আব্দুল হান্নান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হোসেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত মাজেদা বেগম শ্রীনগর উপজেলার পুটিমারা গ্রামের অলিউল্লাহ মোল্লার স্ত্রী।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদীর ভাই অলিউল্লাহ মোল্লা সৌদি আরব প্রবাসী। তিনি মাঝে মাঝে বাড়িতে আসতেন। তিন সন্তান নিয়ে তাঁর স্ত্রী মাজেদা বেগম আলাদা থাকেন। সর্বশেষ অলিউল্লাহ সৌদি আরব থেকে দেশে আসার পর তাঁর স্ত্রী মাজেদা বেগমের সঙ্গে সংসারের বিষয়াদি নিয়ে মনোমালিন্য হয়।

২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাতের খাবার খেয়ে সৌদি প্রবাসী অলিউল্লাহ তাঁর বসত ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। পরের দিন সকাল ৬টার দিকে অভিযুক্ত মাজেদা বেগম তাঁর দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এ সময় মাজেদা বেগমকে ভাশুর ও মামলার বাদী, কোথায় যাওয়া হচ্ছে জিজ্ঞেস করেন। এসময় তিনি জানান- তাঁর স্বামীর টিকেটের টাকা সংগ্রহ করার জন্য বাইরে যাচ্ছেন।

পরে দুপুর ১২টার দিকে অলিউল্লার বাসায় পুলিশ ও লোকজন দেখে তার বড় ভাই মামলার বাদী পুলিশ প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের সহায়তায় অলিউল্লাহর ঘরের দরজা খুলে ভেতরে অলিউল্লাহর মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় গলায় ওড়না পেঁচানো ও হাতে পায়ে রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। পরে স্থানীয়রা ও পুলিশ জানতে পারে, অলিউল্লাহর খাবারের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী মাজেদা বেগম অন্যান্যদের সহযোগিতায় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে গলায় ফাঁস দিয়ে অলিউল্লাহকে হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় মৃত ওয়ালীউল্লাহর ভাই উপজেলার পুটিমারা গ্রামের ইদ্রিস মোল্লার ছেলে আহসান উল্লাহ (৬৮) বাদী হয়ে ২০১৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি শ্রীনগর থানায় ভাই হত্যার দায়ে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অভিযুক্ত মাজেদা বেগমের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামি মাজেদা বেগমকে দোষী সাব্যস্ত করে ওই রায় ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী আহসানুল্লাহ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের স্ত্রী ছোট ভাইকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করায় আমি শ্রীনগর থানায় মামলা করি। ওই মামলা ৮ বছর পর আজ আদালত রায় দিয়েছেন। রায়ে আমরা বাদীপক্ষ সন্তুষ্ট হয়েছি।’

রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. হালিম হোসেন বলেন, ‘আদালত মামলা পর্যালোচনা করে সঠিক রায় দিয়েছেন। আদালতের রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট পোষণ করছি।’