শিরোনাম :
Logo ঈদযাত্রায় লঞ্চে অনিয়ম করলেই গ্রেপ্তার Logo নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ডিসেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে : ড. ইউনূস Logo আগুনে পুড়ছে গারো পাহাড়: জীববৈচিত্র্য হুমকিতে Logo হাবিপ্রবিতে ফুড এন্ড প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির গ্র্যান্ড ইফতার Logo এক বিভাগের পরিক্ষার্থীর সিট অন্য বিভাগে ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা Logo  কচুয়ায় ২০ বছর ধরে হস্তশিল্পের পন্য তৈরি করে সংসার চলে অনিমা রানীর Logo ইবিতে স্বাধীনতা বিরোধীর নামে আবাসিক হলের নামকরণের নিন্দা ও প্রতিবাদ ছাত্র ইউনিয়নের। Logo রমজানে ক্লাস ও পরীক্ষা: পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া Logo আমলাদের কাজের উন্নয়ন ঘটাতে হবে Logo বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে ডিপিডিসির ৭ নির্দেশনা

 কচুয়ায় ২০ বছর ধরে হস্তশিল্পের পন্য তৈরি করে সংসার চলে অনিমা রানীর

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার অনিমা রানী সরকার ২০ বছর ধরে বাঁশের তৈরি হস্তশিল্প সামগ্রী বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। স্বামী কর্মহীন হওয়ায় পরিবারকে টিকিয়ে রাখতে কষ্ট করছেন তিনি। আধুনিক প্লাস্টিক সামগ্রীর কারণে বাজারের চাহিদা কমেছে। ফলে মাসে আয় হচ্ছে ৫-৬ হাজার টাকা। সরকারি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পেলে এ ব্যবসা প্রসারের সম্ভাবনা রয়েছে।

কচুয়া উপজেলার দোয়াটি গ্রামের সরকার বাড়ির পরীক্ষিত সরকারের স্ত্রী অনিমা রানী সরকার। বাঁশের তৈরি সামগ্রী বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতা ও পণ্য বিপণনের সুবিধা না থাকায় অভাব যেন পিছু ছাড়ছে না। নিদারুণ অর্থকষ্টের মধ্যে চার মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে পিপাসাকে বিয়ে দিয়েছেন কোনোমতে। আরেক মেয়ে পূজা সরকার অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত, ছোট দুই মেয়ে মেঘলা প্রথম শ্রেণি ও রাত্রি শিশু শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, বাঁশ ক্রয় করে বাড়ির পুকুরে মাস খানেক ভিজিয়ে রাখেন।

 

পরে সেগুলো তুলে নিপুণ হাতে বাঁশ দিয়ে নিজের বাড়ির উঠানে প্রতিদিনের মতো বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করছেন। মেজো মেয়ে পূজা সরকার মাকে তার কাজে সহযোগিতা করছেন। বিশেষ করে তিনি হাঁস-মুরগির খাঁচা, ডুলা, মাছ ধরার চাঁই, চালুন, কুলা ও ধান রাখার ডোলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করেন। অনিমা রানী সরকার এক কুড়ি খাঁচা বিক্রি করেন ২ হাজার টাকায়, এক কুড়ি ডুলা ১ হাজার টাকায়, চালনী ১ হাজার ৫০০ টাকায় ও এক কুড়ি কুলা বিক্রি করেন ২ হাজার ৫০০ টাকায়।

 

অনিমা রানী সরকার জানান, তিনি ২০ বছর ধরে বাঁশ দিয়ে নানারকম জিনিস তৈরি করছেন। স্বামী কর্মহীন হওয়ায় পরিবারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। আধুনিকায়নের ফলে প্লাস্টিক সামগ্রী সহজলভ্য হওয়ায় বাঁশের তৈরি হস্তশিল্পের বাজার এখন আগের মতো নেই। তার তৈরি বাঁশের সামগ্রী বিক্রি করে মাসে উপার্জন হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত আয় হওয়ায় পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন কাটছে তার। উপার্জিত আয় দিয়ে এক মেয়েকে বিয়ে দিলেও বাকি ৩ মেয়ে এখনো পড়াশোনা করছেন। তাই তিনি চেয়েছেন সরকারি আর্থিক সহায়তা।
স্থানীয় এলাকাবাসী স্বপ্ন রানী,সন্ধ্যা রানী ও পুলিন গোস্বামী জানান, অনিমা রানী একজন গরিব ও অসহায় মানুষ। হাতে তৈরি বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে ছয় সদস্যের পরিবারের সংসার চালান তিনি। বর্তমানে হস্তশিল্প তেমন চলে না, তবে তার পরিবারকে টিকিয়ে রাখতে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা করলে হয়তো তার ব্যবসাটি আরও বৃদ্ধি পাবে।

উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা (আপা) রুবাইয়ারা খাতুন রুবি বলেন, আমাদের অফিসে যোগাযোগ করলে তাকে উদ্যোক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে আরো প্রশিক্ষন দেয়া ব্যবস্থা করব। পাশাপাশি তার পন্যগুলো আমাদের অনলাইনের ওয়বেসাইটের মাধ্যমে বাজারজাত করা হবে এতে করে অনেক পন্য বিক্রি হলে তিনি সাবলম্বী হবেন।

ছবি: কচুয়ার দোয়াটি গ্রামে হাতের তৈরি হস্তশিল্প নিয়ে অনিমা রানী।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঈদযাত্রায় লঞ্চে অনিয়ম করলেই গ্রেপ্তার

 কচুয়ায় ২০ বছর ধরে হস্তশিল্পের পন্য তৈরি করে সংসার চলে অনিমা রানীর

আপডেট সময় : ০৯:৪০:৩৮ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার অনিমা রানী সরকার ২০ বছর ধরে বাঁশের তৈরি হস্তশিল্প সামগ্রী বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। স্বামী কর্মহীন হওয়ায় পরিবারকে টিকিয়ে রাখতে কষ্ট করছেন তিনি। আধুনিক প্লাস্টিক সামগ্রীর কারণে বাজারের চাহিদা কমেছে। ফলে মাসে আয় হচ্ছে ৫-৬ হাজার টাকা। সরকারি সহায়তা ও প্রশিক্ষণ পেলে এ ব্যবসা প্রসারের সম্ভাবনা রয়েছে।

কচুয়া উপজেলার দোয়াটি গ্রামের সরকার বাড়ির পরীক্ষিত সরকারের স্ত্রী অনিমা রানী সরকার। বাঁশের তৈরি সামগ্রী বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতা ও পণ্য বিপণনের সুবিধা না থাকায় অভাব যেন পিছু ছাড়ছে না। নিদারুণ অর্থকষ্টের মধ্যে চার মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে পিপাসাকে বিয়ে দিয়েছেন কোনোমতে। আরেক মেয়ে পূজা সরকার অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত, ছোট দুই মেয়ে মেঘলা প্রথম শ্রেণি ও রাত্রি শিশু শ্রেণিতে পড়াশোনা করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, বাঁশ ক্রয় করে বাড়ির পুকুরে মাস খানেক ভিজিয়ে রাখেন।

 

পরে সেগুলো তুলে নিপুণ হাতে বাঁশ দিয়ে নিজের বাড়ির উঠানে প্রতিদিনের মতো বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করছেন। মেজো মেয়ে পূজা সরকার মাকে তার কাজে সহযোগিতা করছেন। বিশেষ করে তিনি হাঁস-মুরগির খাঁচা, ডুলা, মাছ ধরার চাঁই, চালুন, কুলা ও ধান রাখার ডোলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করেন। অনিমা রানী সরকার এক কুড়ি খাঁচা বিক্রি করেন ২ হাজার টাকায়, এক কুড়ি ডুলা ১ হাজার টাকায়, চালনী ১ হাজার ৫০০ টাকায় ও এক কুড়ি কুলা বিক্রি করেন ২ হাজার ৫০০ টাকায়।

 

অনিমা রানী সরকার জানান, তিনি ২০ বছর ধরে বাঁশ দিয়ে নানারকম জিনিস তৈরি করছেন। স্বামী কর্মহীন হওয়ায় পরিবারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। আধুনিকায়নের ফলে প্লাস্টিক সামগ্রী সহজলভ্য হওয়ায় বাঁশের তৈরি হস্তশিল্পের বাজার এখন আগের মতো নেই। তার তৈরি বাঁশের সামগ্রী বিক্রি করে মাসে উপার্জন হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত আয় হওয়ায় পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন কাটছে তার। উপার্জিত আয় দিয়ে এক মেয়েকে বিয়ে দিলেও বাকি ৩ মেয়ে এখনো পড়াশোনা করছেন। তাই তিনি চেয়েছেন সরকারি আর্থিক সহায়তা।
স্থানীয় এলাকাবাসী স্বপ্ন রানী,সন্ধ্যা রানী ও পুলিন গোস্বামী জানান, অনিমা রানী একজন গরিব ও অসহায় মানুষ। হাতে তৈরি বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে ছয় সদস্যের পরিবারের সংসার চালান তিনি। বর্তমানে হস্তশিল্প তেমন চলে না, তবে তার পরিবারকে টিকিয়ে রাখতে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা করলে হয়তো তার ব্যবসাটি আরও বৃদ্ধি পাবে।

উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা (আপা) রুবাইয়ারা খাতুন রুবি বলেন, আমাদের অফিসে যোগাযোগ করলে তাকে উদ্যোক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে আরো প্রশিক্ষন দেয়া ব্যবস্থা করব। পাশাপাশি তার পন্যগুলো আমাদের অনলাইনের ওয়বেসাইটের মাধ্যমে বাজারজাত করা হবে এতে করে অনেক পন্য বিক্রি হলে তিনি সাবলম্বী হবেন।

ছবি: কচুয়ার দোয়াটি গ্রামে হাতের তৈরি হস্তশিল্প নিয়ে অনিমা রানী।