শিরোনাম :
Logo ইবিতে ঠিকাদারদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ Logo জবির স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় আয় ১২ কোটি টাকা Logo বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার নির্বাচন সম্পন্ন Logo আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo সরকার উদ্যোগ না নিলে আমরা বসে থাকব না: নাহিদ ইসলাম Logo সার্কের বিকল্প জোট গঠনে কাজ করছে চীন-পাকিস্তান, রয়েছে বাংলাদেশও Logo পহেলা জুলাই থেকে ৫ আগস্টের কর্মসূচি ঘিরে হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo নতুন নেতৃত্বে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘তারুণ্য’ Logo সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসী হামলা, আহত-৩০ Logo খুবির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনকে কটাক্ষ ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ

রংপুরের বাজারে উঠতে শুরু করেছে সুস্বাদু হাঁড়িভাঙা আম

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১০:৫৭:১২ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪
  • ৭৭৮ বার পড়া হয়েছে

নীলকন্ঠ প্রতিবেদকঃ

রংপুরের বাজারে উঠতে শুরু করেছে সুস্বাদু হাঁড়িভাঙা আম। আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাতকরণের আগেই রংপুরের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃত এই আম। তবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে কিছুটা চড়া দামে।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রংপুর নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার আমবাজার, পদাগঞ্জ বাজার, লালবাগ, সিটি বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে বিক্রি করছেন হাঁড়িভাঙা আম। মৌসুমের শুরুতে চাহিদা বেশি থাকায় এর দাম কিছুটা বেশি। বড় সাইজের একমণ আম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৮০০-৩২০০ টাকা। মাঝারি সাইজেরটা ২২০০-২৪০০ টাকা। আর ছোট সাইজের একমণ আম বিক্রি হচ্ছে ২০০০-২১০০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে এর দাম আরও বেশি। কৃষি বিভাগ ও আমচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পরিপক্ব হাঁড়িভাঙা আম বাজারে মিলবে। এর আগে বাজারে হাঁড়িভাঙা আম পাওয়া গেলেও তা অপরিপক্ব হবে। একটু বেশি দামের আশায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিয়ম ভঙ্গ করে বাজারে অপরিপক্ব হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি করছেন।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছর রংপুরে তিন হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে হাঁড়িভাঙা আমের চাষ হয়েছে এক হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন। হাঁড়িভাঙা আমের বৈশিষ্ট্য হলো এটি আঁশবিহীন, মিষ্টি ও সুস্বাদু। আঁটিও খুব ছোট। ছাল পাতলা। প্রতিটি আমের ওজন হয় ২০০-৩০০ গ্রাম। চলতি বছর ১২ ফেব্রুয়ারি হাঁড়িভাঙা আম রংপুরের ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে।

জেলা প্রশাসন থেকে ২১ জুন (শুক্রবার) আনুষ্ঠানিকভাবে হাঁড়িভাঙা আম বাজারজাতকরণের উদ্বোধন করা হবে। রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমের প্রধান বাজার মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জ হাট। এটি পাইকারি বাজার। পদাগঞ্জের তরুণ উদ্যোক্তা ও আমচাষি রেজাউল ইসলাম ১২ একরের বেশি জমিতে আমের চাষ করেছেন। তিনি জানান, বৈরী আবহাওয়া ও প্রচণ্ড গরমের সময় আমগাছের বাড়তি যতœ নিয়েছেন। তবে সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আমের আকার কিছুটা ছোট হয়েছে। এতে ফলন কিছুটা কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রংপুর নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার আম বাজারে আম কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ কেজি পাকা আম কিনেছি ২৫০ টাকায়। সে হিসেবে প্রতিকেজির দাম পড়েছে ৫০ টাকা। বড় সাইজের আম বিক্রি হচ্ছে ২৮০০-৩২০০ টাকা মণ।’আরও কয়েকদিন আগে থেকেই হাঁড়িভাঙা আম গাছ থেকে পাড়া শুরু হয়েছে বলে জানান টার্মিনাল বাজারের আম বিক্রেতা আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, পদাগঞ্জ থেকে আম কিনে শহরে এনে বিক্রি করতে বিভিন্ন আনুষঙ্গিক খরচ করতে হয়। এজন্য দাম একটু বেশি। তবে পুরোপুরি আম পাড়া শুরু হলে দাম কিছুটা কমে আসবে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, প্রচণ্ড রোদ ও সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবার হাঁড়িভাঙা আমের ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে মুকুলের সময় বড় ধরনের ঝড় না হওয়ায় আমের ক্ষতি তেমন একটা হয়নি। এছাড়া আমের দাম এবার ভালো। রংপুরের চাষিরাও দাম ভালো পাবেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২১ জুন বিকেলে পদাগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে হাঁড়িভাঙা আম মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। হাঁড়িভাঙা আমের বাজারজাত করতে যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে নিয়মিত মনিটরিং করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ইবিতে ঠিকাদারদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

রংপুরের বাজারে উঠতে শুরু করেছে সুস্বাদু হাঁড়িভাঙা আম

আপডেট সময় : ১০:৫৭:১২ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২১ জুন ২০২৪

নীলকন্ঠ প্রতিবেদকঃ

রংপুরের বাজারে উঠতে শুরু করেছে সুস্বাদু হাঁড়িভাঙা আম। আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাতকরণের আগেই রংপুরের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃত এই আম। তবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে কিছুটা চড়া দামে।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রংপুর নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার আমবাজার, পদাগঞ্জ বাজার, লালবাগ, সিটি বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে বিক্রি করছেন হাঁড়িভাঙা আম। মৌসুমের শুরুতে চাহিদা বেশি থাকায় এর দাম কিছুটা বেশি। বড় সাইজের একমণ আম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৮০০-৩২০০ টাকা। মাঝারি সাইজেরটা ২২০০-২৪০০ টাকা। আর ছোট সাইজের একমণ আম বিক্রি হচ্ছে ২০০০-২১০০ টাকা। তবে খুচরা বাজারে এর দাম আরও বেশি। কৃষি বিভাগ ও আমচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পরিপক্ব হাঁড়িভাঙা আম বাজারে মিলবে। এর আগে বাজারে হাঁড়িভাঙা আম পাওয়া গেলেও তা অপরিপক্ব হবে। একটু বেশি দামের আশায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিয়ম ভঙ্গ করে বাজারে অপরিপক্ব হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি করছেন।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছর রংপুরে তিন হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে হাঁড়িভাঙা আমের চাষ হয়েছে এক হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন। হাঁড়িভাঙা আমের বৈশিষ্ট্য হলো এটি আঁশবিহীন, মিষ্টি ও সুস্বাদু। আঁটিও খুব ছোট। ছাল পাতলা। প্রতিটি আমের ওজন হয় ২০০-৩০০ গ্রাম। চলতি বছর ১২ ফেব্রুয়ারি হাঁড়িভাঙা আম রংপুরের ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে।

জেলা প্রশাসন থেকে ২১ জুন (শুক্রবার) আনুষ্ঠানিকভাবে হাঁড়িভাঙা আম বাজারজাতকরণের উদ্বোধন করা হবে। রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমের প্রধান বাজার মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জ হাট। এটি পাইকারি বাজার। পদাগঞ্জের তরুণ উদ্যোক্তা ও আমচাষি রেজাউল ইসলাম ১২ একরের বেশি জমিতে আমের চাষ করেছেন। তিনি জানান, বৈরী আবহাওয়া ও প্রচণ্ড গরমের সময় আমগাছের বাড়তি যতœ নিয়েছেন। তবে সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আমের আকার কিছুটা ছোট হয়েছে। এতে ফলন কিছুটা কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রংপুর নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার আম বাজারে আম কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ কেজি পাকা আম কিনেছি ২৫০ টাকায়। সে হিসেবে প্রতিকেজির দাম পড়েছে ৫০ টাকা। বড় সাইজের আম বিক্রি হচ্ছে ২৮০০-৩২০০ টাকা মণ।’আরও কয়েকদিন আগে থেকেই হাঁড়িভাঙা আম গাছ থেকে পাড়া শুরু হয়েছে বলে জানান টার্মিনাল বাজারের আম বিক্রেতা আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, পদাগঞ্জ থেকে আম কিনে শহরে এনে বিক্রি করতে বিভিন্ন আনুষঙ্গিক খরচ করতে হয়। এজন্য দাম একটু বেশি। তবে পুরোপুরি আম পাড়া শুরু হলে দাম কিছুটা কমে আসবে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, প্রচণ্ড রোদ ও সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় এবার হাঁড়িভাঙা আমের ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে মুকুলের সময় বড় ধরনের ঝড় না হওয়ায় আমের ক্ষতি তেমন একটা হয়নি। এছাড়া আমের দাম এবার ভালো। রংপুরের চাষিরাও দাম ভালো পাবেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২১ জুন বিকেলে পদাগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে হাঁড়িভাঙা আম মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। হাঁড়িভাঙা আমের বাজারজাত করতে যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে নিয়মিত মনিটরিং করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।