শিরোনাম :
Logo খুবির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনকে কটাক্ষ ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ Logo ইবি সেই শিক্ষক হাফিজ চাকরিচ্যুত Logo সাবেক শিক্ষিা প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় কচুয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন Logo ‌‘নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে শতভাগ আশ্বস্ত নয় বিএনপি’ Logo পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাওয়ার পেছনে ষড়যন্ত্র আছে: এ্যানি Logo ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে কেন উল্টো ফল হবে Logo ইরানকে কোনো প্রস্তাব দেইনি: ট্রাম্প Logo লঘুচাপের প্রভাব, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত অব্যাহত Logo ‘জুলাই গ্যাং কালচার’ বলে ভারতীয় ভিডিও ছড়াচ্ছে আ.লীগ সমর্থকরা: প্রেস উইং Logo ইসরায়েলি হামলায় ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থীসহ ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরায়েলি হামলায় ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থীসহ ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর একের পর এক হামলায় আরও অন্তত ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন এমন অনেক মানুষ, যারা খাদ্য সহায়তার জন্য বিভিন্ন বিতরণকেন্দ্রে অপেক্ষা করছিলেন।

রোববার (২৯ জুন) রাতে আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

গাজার মেডিকেল সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, রোববার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় শুধু গাজা শহর ও উত্তরের অংশেই অন্তত ৪৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

গাজা শহর থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক মুয়াত আল-কালহুত জানান, জেইতুন, সাবরা ও আল-জাওইয়া বাজার এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর উত্তর গাজার আল-আহলি হাসপাতালে আহতদের ঢল নামে।

তিনি বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড বা চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই, অনেকেই মেঝেতে পড়ে আছেন এবং হাসপাতালটি চরম সংকটে রয়েছে।

তিনি আরও জানান, ইসরায়েল পূর্ব গাজা শহরে লিফলেট ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে দক্ষিণে সরে যেতে বলছে, কিন্তু এসব সতর্কতার পরই শুরু হচ্ছে ভারী বোমা হামলা, যা হতাহতের সংখ্যা বাড়াচ্ছে।

এদিকে, রোববার নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি রয়েছেন, যারা দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহর উত্তরে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে সহায়তা নিতে গিয়েছিলেন। এই বিতরণ কেন্দ্রগুলো বর্তমানে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালনা করছে। গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, জিএইচএফ গাজায় সহায়তা বিতরণ শুরু করার পর থেকে ইসরায়েলি সেনারা প্রায়শই এসব কেন্দ্রের আশপাশে অপেক্ষমাণ মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে, এতে এখন পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং চার হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ একটি প্রতিবেদনে জানায়, কিছু ইসরায়েলি সেনা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন—তাদেরকে নিরস্ত্র সহায়তা প্রার্থীদের ওপর গুলি চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গাজায় মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে। পুষ্টির অভাবে শিশু ও নবজাতকদের মৃত্যুর ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। গাজা শহরের একটি হাসপাতালে কর্মরত অস্ট্রেলীয় স্বেচ্ছাসেবী নার্স ক্রিস্টি ব্ল্যাক জানান, তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র ঘাটতি রয়েছে। এমনকি অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ ফর্মুলা খাবারও নেই, ফলে অনেক মা দুধ উৎপাদন করতে পারছেন না এবং শিশুদের জন্য দুধের বিকল্পও নেই।

তিনি বলেন, শুধু গত কয়েকদিনেই গাজা শহরে কয়েকজন শিশু অপুষ্টির কারণে মারা গেছে। এছাড়া বোমা হামলার কারণে ধুলা ও বিষাক্ত গ্যাসে শিশুদের মধ্যে শ্বাসজনিত রোগও বাড়ছে বলে তিনি জানান।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

খুবির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনকে কটাক্ষ ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ

ইসরায়েলি হামলায় ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রার্থীসহ ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত

আপডেট সময় : ১১:২৩:৩০ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর একের পর এক হামলায় আরও অন্তত ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন এমন অনেক মানুষ, যারা খাদ্য সহায়তার জন্য বিভিন্ন বিতরণকেন্দ্রে অপেক্ষা করছিলেন।

রোববার (২৯ জুন) রাতে আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

গাজার মেডিকেল সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, রোববার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় শুধু গাজা শহর ও উত্তরের অংশেই অন্তত ৪৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

গাজা শহর থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক মুয়াত আল-কালহুত জানান, জেইতুন, সাবরা ও আল-জাওইয়া বাজার এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর উত্তর গাজার আল-আহলি হাসপাতালে আহতদের ঢল নামে।

তিনি বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড বা চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই, অনেকেই মেঝেতে পড়ে আছেন এবং হাসপাতালটি চরম সংকটে রয়েছে।

তিনি আরও জানান, ইসরায়েল পূর্ব গাজা শহরে লিফলেট ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে দক্ষিণে সরে যেতে বলছে, কিন্তু এসব সতর্কতার পরই শুরু হচ্ছে ভারী বোমা হামলা, যা হতাহতের সংখ্যা বাড়াচ্ছে।

এদিকে, রোববার নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি রয়েছেন, যারা দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহর উত্তরে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে সহায়তা নিতে গিয়েছিলেন। এই বিতরণ কেন্দ্রগুলো বর্তমানে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালনা করছে। গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, জিএইচএফ গাজায় সহায়তা বিতরণ শুরু করার পর থেকে ইসরায়েলি সেনারা প্রায়শই এসব কেন্দ্রের আশপাশে অপেক্ষমাণ মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে, এতে এখন পর্যন্ত ৫৮০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং চার হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ একটি প্রতিবেদনে জানায়, কিছু ইসরায়েলি সেনা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন—তাদেরকে নিরস্ত্র সহায়তা প্রার্থীদের ওপর গুলি চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গাজায় মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে। পুষ্টির অভাবে শিশু ও নবজাতকদের মৃত্যুর ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। গাজা শহরের একটি হাসপাতালে কর্মরত অস্ট্রেলীয় স্বেচ্ছাসেবী নার্স ক্রিস্টি ব্ল্যাক জানান, তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র ঘাটতি রয়েছে। এমনকি অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষ ফর্মুলা খাবারও নেই, ফলে অনেক মা দুধ উৎপাদন করতে পারছেন না এবং শিশুদের জন্য দুধের বিকল্পও নেই।

তিনি বলেন, শুধু গত কয়েকদিনেই গাজা শহরে কয়েকজন শিশু অপুষ্টির কারণে মারা গেছে। এছাড়া বোমা হামলার কারণে ধুলা ও বিষাক্ত গ্যাসে শিশুদের মধ্যে শ্বাসজনিত রোগও বাড়ছে বলে তিনি জানান।