ড. ইউনূসের কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ কিন্তু হ্যাপি না: রুমিন ফারহানা

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১১:১৫:৪০ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
  • ৭০৮ বার পড়া হয়েছে

দেশের বর্তমান অবস্থায় এনসিপি বাদ দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডে বেশ অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা। তার মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ডক্টর মুহম্মদ ইউনূসের কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষও খুশি নন।

সরকারের প্রতি অন্যদলগুলো বিরক্ত উল্লেখ করে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এনসিপি বাদ দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো প্রত্যেকেরই কিন্তু সরকারের নানান কর্মকাণ্ড নিয়ে কিছুটা অস্বস্তির জায়গা আছে। আমি যদি অন্য দলগুলোকে বাদও দেই, দ্য লার্জেস্ট পলিটিক্যাল পার্টি অন গ্রাউন্ড (বিএনপি) এবং বিএনপির সঙ্গে যেই রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রামে ছিল তাদেরও কিন্তু ডক্টর ইউনূসের ব্যাপারে এক ধরনের রিজারভেশন আছে।

মানে ডক্টর ইউনূসের কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ কিন্তু একেবারেই হ্যাপি না। আম জনতার সঙ্গে কথা বললেই বুঝবেন বা তারাও অনেক সময় নিজে থেকেই বলে যে কবে নির্বাচন হবে? আমরা একটা স্থির অবস্থা দেখতে যে একটা স্থিতিশীলতা চাই সর্বত্র।’

ডক্টর ইউনূসের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও নিজেদের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে যাচ্ছে উল্লেখ করে রুমিন ফারহানা বলেন, “আমি ইকোনমিস্টের রিপোর্ট দেখছিলাম। সেখানে কিন্তু বলা হয়েছে যে একটি বড় রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে নির্বাচন করাটা গণতন্ত্রের জন্য খুব স্বাস্থ্যকর নয় এবং বিবিসির যেই সাক্ষাৎকারটি আপনারা দেখেছেন ডক্টর ইউনূসের সেখানেও কিন্তু ওনাকে বারংবার বেশ কঠিন প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।

সুতরাং ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়ার যে একটা প্রচ্ছন্ন এক ধরনের মানে ‘হিজ হি ইজ আওয়ার সান’, এই ধরনের একটা এটিচিউড ছিল ওই জায়গাটা থেকে বোধহয় বিবিসি বা এই ধরনের গণমাধ্যমগুলো বেশ অনেকটাই বের হয়েছে। বিশেষ করে লাস্টলি ইকোনমিস্টের যে রিপোর্ট এসেছে সেটাতে এটা পুরাই খুব স্পষ্ট।”

লন্ডন বৈঠকের ফলোআপ প্রসঙ্গে সরকারের সাথে বিএনপির যোগাযোগ হয়েছে কিনা সেই প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, “প্রতিদিনই আমরা ঐকমত্য কমিশনের একটা বৈঠক দেখতে পাচ্ছি ডক্টর আলী রিয়াজের নেতৃত্বে। আজকে আমি দেখছিলাম উনি বেশ হতাশা ব্যক্ত করেই বলছেন যে তারা খুব আশাবাদী হতে পারছেন না।

তারা ভেবেছিলেন যে তারা জুলাই সনদ খুব দ্রুতই ঘোষণা করতে পারবেন। কিন্তু তারা সেটা পারেননি। এর মধ্যে আবার দেখছেন একটা দিবসের পরিবর্তন হয়েছে। হ্যাঁ বাংলাদেশ দিবস নাই হয়ে গেল। ঐকমত্য তারা আসলে কি আশা করছেন আমি জানি না।

আমি মনে করি বাংলাদেশে ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে যে ঐকমত্যটি হয়েছে এটাকেই যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। আর বিএনপি তো ছাড় দিয়েছে। তারা বলেছে ঠিক আছে ১০ বছরের বেশি আমরা কোন এক ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাখবো না। এটা তো বিএনপির পক্ষ থেকে একটা বিরাট ছাড়। সুতরাং সেই জায়গা থেকে কি বিএনপি কি পেল? নেগোসিয়েশনের নিয়মে আমি কিছু ছাড়বো, আপনি কিছু ছাড়বেন, মাঝামাঝি একটা জায়গায় আসবো। আমি যখন ছাড়ছি তখন কি ছাড়লেন আপনাকে এই প্রশ্নটা তো আমি করতেই পারি তাই না। ছাড়টাকে কি দুর্বলতা ভাবলে ভুল করবে।

আওয়ামীলীগের নিষিদ্ধ হওয়া ভোটে কতটা প্রভাব ফেলবে, এই প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘শুরুতেই বিএনপি বলেছিল যে কোন দলকে কাগজে কলমে নিষিদ্ধ করা বা কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা এই বিষয়গুলোর সঙ্গে বিএনপি একমত নয়। যেই দলটির হাত দিয়ে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এসেছে (বিএনপি) ডেফিনেটলি সেই দল মনে করে যে, মানুষই প্রত্যাখ্যান করবে আওয়ামীলীগকে। জামায়াতে ইসলাম সেহেতু পাকিস্তানেই অবস্থা ভালো করতে পারে নাই। সেখানে বাংলাদেশে সে কি করে অবস্থা ভালো করবে?

সো বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু জানে যে কাকে ভোট দিতে হবে, কাকে কোন দলে দলের পাশে থাকতে হবে, কোন দলের সমর্থন করতে হবে। এটা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালো বুঝে। সো বাংলাদেশের মানুষের হাতেই যদি এই সিদ্ধান্তটা ছেড়ে দেওয়া হতো তাহলেই সবচেয়ে ভালো হতো।’

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ড. ইউনূসের কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ কিন্তু হ্যাপি না: রুমিন ফারহানা

আপডেট সময় : ১১:১৫:৪০ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

দেশের বর্তমান অবস্থায় এনসিপি বাদ দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডে বেশ অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক রুমিন ফারহানা। তার মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ডক্টর মুহম্মদ ইউনূসের কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষও খুশি নন।

সরকারের প্রতি অন্যদলগুলো বিরক্ত উল্লেখ করে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এনসিপি বাদ দিয়ে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো প্রত্যেকেরই কিন্তু সরকারের নানান কর্মকাণ্ড নিয়ে কিছুটা অস্বস্তির জায়গা আছে। আমি যদি অন্য দলগুলোকে বাদও দেই, দ্য লার্জেস্ট পলিটিক্যাল পার্টি অন গ্রাউন্ড (বিএনপি) এবং বিএনপির সঙ্গে যেই রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রামে ছিল তাদেরও কিন্তু ডক্টর ইউনূসের ব্যাপারে এক ধরনের রিজারভেশন আছে।

মানে ডক্টর ইউনূসের কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ কিন্তু একেবারেই হ্যাপি না। আম জনতার সঙ্গে কথা বললেই বুঝবেন বা তারাও অনেক সময় নিজে থেকেই বলে যে কবে নির্বাচন হবে? আমরা একটা স্থির অবস্থা দেখতে যে একটা স্থিতিশীলতা চাই সর্বত্র।’

ডক্টর ইউনূসের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও নিজেদের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে যাচ্ছে উল্লেখ করে রুমিন ফারহানা বলেন, “আমি ইকোনমিস্টের রিপোর্ট দেখছিলাম। সেখানে কিন্তু বলা হয়েছে যে একটি বড় রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে নির্বাচন করাটা গণতন্ত্রের জন্য খুব স্বাস্থ্যকর নয় এবং বিবিসির যেই সাক্ষাৎকারটি আপনারা দেখেছেন ডক্টর ইউনূসের সেখানেও কিন্তু ওনাকে বারংবার বেশ কঠিন প্রশ্নের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।

সুতরাং ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়ার যে একটা প্রচ্ছন্ন এক ধরনের মানে ‘হিজ হি ইজ আওয়ার সান’, এই ধরনের একটা এটিচিউড ছিল ওই জায়গাটা থেকে বোধহয় বিবিসি বা এই ধরনের গণমাধ্যমগুলো বেশ অনেকটাই বের হয়েছে। বিশেষ করে লাস্টলি ইকোনমিস্টের যে রিপোর্ট এসেছে সেটাতে এটা পুরাই খুব স্পষ্ট।”

লন্ডন বৈঠকের ফলোআপ প্রসঙ্গে সরকারের সাথে বিএনপির যোগাযোগ হয়েছে কিনা সেই প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, “প্রতিদিনই আমরা ঐকমত্য কমিশনের একটা বৈঠক দেখতে পাচ্ছি ডক্টর আলী রিয়াজের নেতৃত্বে। আজকে আমি দেখছিলাম উনি বেশ হতাশা ব্যক্ত করেই বলছেন যে তারা খুব আশাবাদী হতে পারছেন না।

তারা ভেবেছিলেন যে তারা জুলাই সনদ খুব দ্রুতই ঘোষণা করতে পারবেন। কিন্তু তারা সেটা পারেননি। এর মধ্যে আবার দেখছেন একটা দিবসের পরিবর্তন হয়েছে। হ্যাঁ বাংলাদেশ দিবস নাই হয়ে গেল। ঐকমত্য তারা আসলে কি আশা করছেন আমি জানি না।

আমি মনে করি বাংলাদেশে ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে যে ঐকমত্যটি হয়েছে এটাকেই যদি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। আর বিএনপি তো ছাড় দিয়েছে। তারা বলেছে ঠিক আছে ১০ বছরের বেশি আমরা কোন এক ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাখবো না। এটা তো বিএনপির পক্ষ থেকে একটা বিরাট ছাড়। সুতরাং সেই জায়গা থেকে কি বিএনপি কি পেল? নেগোসিয়েশনের নিয়মে আমি কিছু ছাড়বো, আপনি কিছু ছাড়বেন, মাঝামাঝি একটা জায়গায় আসবো। আমি যখন ছাড়ছি তখন কি ছাড়লেন আপনাকে এই প্রশ্নটা তো আমি করতেই পারি তাই না। ছাড়টাকে কি দুর্বলতা ভাবলে ভুল করবে।

আওয়ামীলীগের নিষিদ্ধ হওয়া ভোটে কতটা প্রভাব ফেলবে, এই প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘শুরুতেই বিএনপি বলেছিল যে কোন দলকে কাগজে কলমে নিষিদ্ধ করা বা কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা এই বিষয়গুলোর সঙ্গে বিএনপি একমত নয়। যেই দলটির হাত দিয়ে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র এসেছে (বিএনপি) ডেফিনেটলি সেই দল মনে করে যে, মানুষই প্রত্যাখ্যান করবে আওয়ামীলীগকে। জামায়াতে ইসলাম সেহেতু পাকিস্তানেই অবস্থা ভালো করতে পারে নাই। সেখানে বাংলাদেশে সে কি করে অবস্থা ভালো করবে?

সো বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু জানে যে কাকে ভোট দিতে হবে, কাকে কোন দলে দলের পাশে থাকতে হবে, কোন দলের সমর্থন করতে হবে। এটা কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালো বুঝে। সো বাংলাদেশের মানুষের হাতেই যদি এই সিদ্ধান্তটা ছেড়ে দেওয়া হতো তাহলেই সবচেয়ে ভালো হতো।’